রাসেলস ভাইপার নিয়ে দেশের একমাত্র ভেনম রিসার্চ সেন্টার নতুন তথ্য দিয়েছে। তারা বলছে এই সাপের কামড়ে মৃত্যুর চেয়ে সুস্থতার হার বেশি।
ক্ষিপ্রগতিতে ছোবল দিলেও এটি মূলত অলস প্রকৃতির
সাপ। দেশে এর পর্যাপ্ত অ্যান্টিভেনমও আছে। রাসেলস ভাইপার দেশের সবচেয়ে বিষধর বা সবচেয়ে প্রাণঘাতী সাপ নয়।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ সারাদেশে রাসেলস ভাইপার নিয়ে ছড়িয়ে পড়া গুজবে এই সাপের নামে অন্য প্রজাতির সাপও পিটিয়ে মারা হচ্ছে।
আরামপ্রিয় রাসেলস ভাইপার আসলে কতটা ভয়ঙ্কর?
চট্টগ্রামের ভেনম সেন্টারের গবেষকরা বলছেন, রাসেলস ভাইপার কেবল আক্রান্ত হলেই আত্মরক্ষার জন্য কামড় দেয়। সহকারী গবেষক আব্দুল আওয়াল বলেন, এরা ডাঙার ওপর খুবই স্লো মুভমেন্ট করে। সেক্ষেত্রে এ সাপটা মানুষকে তেড়ে কামড়ানোর প্রশ্নই আসে না। তবে, এরা দ্রুত গতিতে কামড় দিতে পারে।
তিনি আরও বলেন, আমরা গবেষণায় পেয়েছি, এরা বাংলাদেশে ৩০ থেকে ৩৫টা বাচ্চা দিয়ে থাকে। এর বড় সংখ্যক সাপ ছোট বেলাতেই মারা পড়ে।
সাপ বরং মানুষ আর পরিবেশের জন্য দারুণ উপকারী বলছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের প্রভাষক ইব্রাহীম আল হায়দার।
তার দাবি, যেভাবে রাসেলস ভাইপারকে টার্গেট করে অন্যান্য সাপও মেরে ফেলা হচ্ছে তা দুঃখজনক। সাপরা ফসলের জন্য অনেক উপকারী। একটা ইঁদুর বছরে কমপক্ষে হাজার টাকার ফসল নষ্ট করে, বিপরীতে একটা সাপ বছরে গড়ে প্রায় ৫০টা ইঁদুর খায়।
সাপের এখন প্রজননকাল। তাই দেখাও যাচ্ছে বেশি। রাসেল ভাইপার দক্ষ সাঁতারু। সে কারণে নদীর স্রোতে ও বন্যার পানিতে এটি বিভিন্ন এলাকায় বিস্তৃত হয়েছে।
বিএসএমএমইউয়ের ইন্টারনাল মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. ফজলে রাব্বি চৌধুরী বলেন, খামারকে বসতবাড়ি থেকে দূরে রাখা। মাটিতে না ঘুমানোসহ বেশ কিছু সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত এ সময়ে।
রাজশাহী মেডিকেলের কলেজের তথ্য বলছে, গত এক যুগে এ সাপ কেটেছে ২১৩ জনকে যার মধ্যে ৬৯ জন মারা গেছে। অর্থাৎ মৃত্যু হার ২৯ শতাংশ। ভেনম সেন্টারের প্রিন্সিপ্যাল ইনভেস্টিগেটর অধ্যাপক ডা. অনিরুদ্ধ ঘোষ জয় বলছেন রাসেলস ভাইপারসহ কোন সাপের কামড়েই সাথে সাথে মৃত্যু হয়না।
গুজবে কান না দেয়ার আহ্বান জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন বলেছেন দেশে পর্যাপ্ত অ্যান্টিভেনম আছে। হাসপাতালগুলোতেও অ্যান্টিভেনম রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।