নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার মুছাপুর ৯ নং ওয়ার্ডে মা ও মেয়ে দুই নারীর অসামাজিক ও অনৈতিক কার্যকলাপ এবং ইউপি সদস্যসহ তাদের পরিবারে লোকজনের নামে মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন কর্মসূচী অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার (১৪ আগষ্ট ) উপজেলার মুছাপুর ৯ ওয়ার্ডে বিএনপি নেতা আলা উদ্দীন ও মাঈন উদ্দিন মেম্বার এলাকায় নারী পুরুষ সকল বয়সের মানুষের উপস্থিতিতে প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে সড়কে দাঁড়িয়ে ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করেন এলাকাবাসী।
মানববন্ধনে স্থানীয় ঈমাম, শিক্ষক, সমাজ প্রতিনিধিসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন। বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, শারমিন আক্তার নিপু (২৪) দির্ঘদিন ধরে এলাকায় অসামাজিক ও অনৈতিক কার্যকলাপে যুক্ত। তার এসব অপকর্মে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন গ্রামবাসী সহ স্থানীয়রা।
অভিযোগ উঠেছে প্রতারক চক্রের হোতা শারমিন আক্তার নিপু টার্গেট করা ব্যক্তির সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে। এক পর্যায়ে গোপন ক্যামেরায় তার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের ভিডিও ধারণ করে। পরে সেই ভিডিও দেখিয়ে শুরু করে ব্ল্যাকমেইল। লোকলজ্জার ভয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা তার দাবি অনুযায়ী টাকা দিতে বাধ্য হয় । এভাবে বিভিন্নজনের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছে লাখ লাখ টাকা। আবার অনেকেই অভিযোগ করেন নিপু বিয়ে করে স্বামীকে ডিপোজ দিয়ে পরে ছেলেদের কাছ থেকে কাবিনের টাকা হাতিয়ে নিয়ে অনেক ছেলেকে সর্বস্বান্ত করে ফেলেছে।
এদিকে সম্প্রতি বেশকিছুদিন ধরে নিপুর অসামাজিক ও অনৈতিক কার্যকলাপ বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গেলে ওমান প্রবাসী আবুল বাসার স্ত্রীর সাথে কথা কাটাকাটি হয় । এটিকে কেন্দ্র করে ইউপি সদস্য মাঈন উদ্দীন (মেম্বার) (৪৬) বিএনপি নেতা আলা উদ্দীন জিকো (৫৬) তার ছোট বোন বিবি কুলছুম ঝুলি (৩৬) ফাতেমা আক্তার শিল্পী (২৪) লাকী (৪৫) শিল্পী স্বামী লিংকন, শিরি (৩৮) তমা (২০), নিরব (১৬) এসব লোকদের নামে মিথ্যা মামলা দায়ের করেন।
মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে অবিলম্বে শারমিন আক্তার নিপু ও তার সহযোগী দিপুকে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী জানান বক্তারা।
এসময় মানববন্ধনে শিল্পী নামের এক নারী বলেন, সুমি - নিপু দুই জনে স্বামী পরিত্যক্ত নারী। তারা দুই জন মা, মেয়ে। তারা আমার একই বাড়ীর। এরা মা মেয়ে এক খাটে শুয়ে দির্ঘ দিন পতিতা ব্যবসা করে। নিপু নামের মেয়েটা ২০ বৎসর বয়সে ৫টি বিয়ে করেছে। একটা স্বামীও তার সংসারে নেই। তার মায়ের তিন বিয়ে হয়েছে। যাদের সাথে তার কোন সম্পর্ক নেই তাদের সাথে সহবাস করতেছে।
মা মেয়ে যুবকদেরকে ফাঁদে ফেলে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। আমার ২৮ বছর বয়সে এমন ঘটনা দেখি নাই। মা মেয়ে একই খাটে কি করে নষ্টামি করতে পারে ? আমি আমার বাবার ভিটেতে থাকি এখন তাদের কারনে ইজ্জত সুরক্ষায় হুমকির মুখে । ঘুমাতে পারিনা তাদের অসামাজিক কার্যকলাপের কারনে। প্রতিবাদ করলে খদ্দের মাধ্যমে মামলা হামলার হুমিকি দিয়ে হয়রানি করে।
নুর উদ্দিন নামের এক ব্যক্তি জানান, নিপু আমার সম্পর্কে চাচাতো বোন মেয়েটার চরিত্রহীন কারনে আমার চাচা নিপুকে তার মেয়ে বলে পরিচয় দেননা। তিনি তার মেয়ে অস্বীকার করেন।
সমাজ কমিটির সভাপতি এনায়েত উল্যাহ বলেন, মা মেয়ে যুব সমাজকে ধ্বংস করতেছে, যুব সমাজকে তাদের হাত থেকে বাচাঁতে চাই, এই এলাকার মাঈন উদ্দিন মেম্বার প্রতিবাদ করায় তাকেসহ তাদের পরিবারের নারী পুরুষ সবাইকে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছে। আমরা প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও এই সমাজ থেকে মা মেয়ের পতিতা বন্ধ করার জন্য।
শিক্ষক আবুল বাসার বলেন, মেয়েটা ওমান প্রবাসী বিবাহিত আবুল বাসার নামে এক ব্যক্তির সাথে প্রতারণা করে তার কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
মমিনুল হক নামের প্রবীণ এক মুরব্বি বলেন, এরা মা, মেয়ে দেহ ব্যবসা করে তাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় আলা উদ্দীন মেম্বারসহ সমাজের লোকজনকে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছে।
স্থানীয় আলা উদ্দীন মেম্বার জানান, এরা সমাজে প্রতিনিয়ত অনৈতিক ও অপকর্ম করে থাকে। নিপু নামের মেয়েটা এ বয়সে ৭ বিয়ে করছে। বর্তমানে স্বামী পরিত্যক্ত। তার অসামাজিক কার্যকলাপে সমাজের যুব সমাজ অতিষ্ট।
আমার ছোট বোন'র স্বামী আবুল বাসারকে মোবাইলে ব্ল্যাকমেইল করে তার কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে এতে আমার বোন প্রতিবাদ করার এক পর্যায়ে কথা কাটা কাটি হয়। এর জের ধরে খদ্দরদের সহযোগিতায় আমার বড় ভাই আলা উদ্দীন জিকো ও বাড়ীর আশ পাশের মহিলাসহ আমাদের পরিবারে ৮ সদস্যকে আসামী করে মামলা দিয়ে হয়রানি করছে। এলাকার মানুষ এসমাজে তাদেরকে দেখতে চাইনা বিদায় মানববন্ধন করছে।
আলা উদ্দীন জিকো বলেন, আমি রাজনীতি করি সমাজে আমাদের পরিবারের একটা গ্রহণ যোগ্যতা রয়েছে। আমাদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার জন্য মিথ্যা নারী নির্যাতন মামলা দিয়ে পরিবারের নারী পুরুষ সকলকে আসামী করে হয়রানি করা হচ্ছে।
এব্যাপারে দিপু বলেন, একটি গোষ্ঠী সমাজে একটি অসহায় নারীকে জুলুম, নির্যাতন করছে আমি প্রতিবাদ ও সহযোগিতা কারায় আমাকে খদ্দর বানিয়ে অপবাদ দিয়ে অপপ্রচার করা হচ্ছে। আমি তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে আদালতে স্মরণাপন্ন হবো।
অভিযুক্ত শারমিন আক্তার নিপু বলেন, তারা প্রভাবশালী ব্যক্তি আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা ও কুৎসিত অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। আমি যাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছি তাদের ভগ্নিপতি ওমান প্রবাসী আবুল বাশার'র সাথে ২০১৯ সালে মোবাইলে আমার বিয়ে হয়েছে। বর্তমানে সে আমার রেজিষ্টিকৃত স্বামী। আবুল বাশারের দুই সংসার এক সংসার স্ত্রী আমি। অপর দিকে নিপু ৭ বিয়ের কথা ও অসামাজিক কার্যকলাপ অস্বীকার করলেও তিন বিয়ের কথা নিশ্চিত করেছেন।