রবিবার ৬ জুলাই ২০২৫ ২২ আষাঢ় ১৪৩২
রবিবার ৬ জুলাই ২০২৫
সরকার রাষ্ট্রের মূল স্তম্ভগুলো ধ্বংস করছে: মির্জা ফখরুল
মির্জা ফখরুল বলেন, আজকের যে বাংলাদেশ আমরা সেটা চাইনি। অন্তত আমি এমন বাংলাদেশ চাইনি। এতে যদি আমায় কেউ ফাঁসি দেয়, দিতে পারে। আমরা চেয়েছি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ, যেখানে জনগণের ভোটাধিকার থাকবে, আইনের শাসন, মানবাধিকার ও ন্যায়-সাম্য থাকবে।
প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ১৬ মার্চ, ২০২৩, ১:৫২ PM আপডেট: ১৬.০৩.২০২৩ ২:০৩ PM
বর্তমান সরকার অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে রাষ্ট্রের মূল স্তম্ভগুলো ধ্বংস করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।  তিনি বলেন, সরকার নিজেদের ইচ্ছে মতো সংবিধানের বিধি-বিধান তৈরি করছে। রাষ্ট্রের সঙ্গে জনগণের যে চুক্তি সেটা ভেঙে ফেলেছে। 

বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। ‘আগামীর বাংলাদেশ বিনির্মাণে ২৭ দফা রূপরেখার গুরুত্ব ও অপরিহার্য’ শীর্ষক আলোচনা সভার আয়োজন করে ১২ দলীয় জোট।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, অথচ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার আন্দোলন ইতিহাস ছিল গণতন্ত্রের ইতিহাস। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে ভিন্নমত হলেও কথা বলার স্বাধীনতা থাকবে। আজ স্বাধীনতার এত বছর পরেও বলতে হয়, দেশে কথা বলার স্বাধীনতা নেই, স্বাধীনতা চাই। 

তিনি বলেন, আজকের যে বাংলাদেশ আমরা সেটা চাইনি। অন্তত আমি এমন বাংলাদেশ চাইনি। এতে যদি আমায় কেউ ফাঁসি দেয়, দিতে পারে। আমরা চেয়েছি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ, যেখানে জনগণের ভোটাধিকার থাকবে, আইনের শাসন, মানবাধিকার ও ন্যায়-সাম্য থাকবে।

তিনি আরও বলেন, আজ এমন একসময় আমরা আলোচনা সভা করছি, যার আগের দিন দেশের সর্বোচ্চ বিচারালয়ে আইনজীবীদের নির্বাচনকে ঘিরে একটি ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটেছে। আমার তার তীব্র নিন্দা ও ধিক্কার জানাচ্ছি। সুপ্রিম কোর্টের ন্যাক্কারজনক ঘটনা প্রমাণ করে, বর্তমানে বাংলাদেশে গণতন্ত্র তো নেই, আইনের শাসনও নেই। এমনকি সরকার আছে কি না আমার সন্দেহ।

তথ্যমন্ত্রীর সমালোচনা করে তিনি বলেন, ১৯৯৬ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার দাবিতে আপনারা জামায়াত ও জাতীয় পার্টি আন্দোলন করেছেন। সেদিন দাবি আদায়ে ১৭৩ দিন হরতাল করেছেন, গান পাউডার দিয়ে ১৭ জনকে মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করেছেন, লগি-বৈঠা দিয়ে পিটিয়ে মানুষ হত্যা করেছেন। 


মির্জা ফখরুল বলেন,  এখন বলছেন বিএনপি আগুন সন্ত্রাস করে। আরে আগুন সন্ত্রাস তো আপনারাই শুরু করেছেন। লজ্জা করে না? এখন কথায় কথায় বলেন সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবে, সভ্য দেশে তাই হয়। আমাদের স্পষ্ট কথা, যারা ক্ষমতায় আছে তারা অসভ্য মধ্যযুগীয় বর্বরতার চেয়েও খারাপ। যা কোনো সভ্য দেশে হতে পারে না। 

দেশের বুদ্ধিজীবীদের সমালোচনা করে তিনি বলেন, আজকে আমার খুব কষ্ট হয় যখন দেখি দেশে কিছু বুদ্ধিজীবী আছেন। যারা দেশের এই অনিয়ম ও দুর্নীতির ব্যবস্থাকে সমর্থন করেন। এমনভাবে তারা চাটুকারিতা করে চরম শীর্ষে চলে যান। 

বিএনপির চলমান যুগপৎ আন্দোলন প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, এই আন্দোলন বিএনপি কিংবা কোনো দল বা ব্যক্তির লড়াই-সংগ্রাম নয়। এটা দেশের ১৮ কোটি মানুষের বেঁচে থাকার সংগ্রাম। আসুন আমরা সবাই নেমে পড়ি। তাদেরকে সরিয়ে তত্ত্বাবধায়ক অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করি। 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুলের ‘সংবিধান বিতর্ক’ বইয়ের রেফারেন্স দিয়ে তিনি বলেন, ৭২ সালের সংবিধান প্রণয়নের আগে ১৯৭১ সালের আগে দুটি নির্বাচন হয়েছিল। একটি পাকিস্তান জাতীয় সংসদের, আরেকটি প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচন। এরপর পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের সদস্যদের দিয়ে সংবিধান রচনার জন্য গণপরিষদ গঠন করা হয়। যারা দেশের বিভিন্ন বিষয় বিবেচনায় নিয়ে সংবিধান রচনা করেছিলেন। যেখানে গণতন্ত্র ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, মানবাধিকার সুরক্ষা ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠাসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। কিন্তু তার কোনটা আজকে আছে?

সভায় সভাপতিত্ব করেন ১২ দলীয় জোটের সমন্বয়ক মোস্তফা জামাল হায়দার। এতে বক্তব্য রাখেন কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মোহাম্মদ ইবরাহিম ও বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদাসহ আরও অনেকে।

-বাবু/এনএইচ
« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »


Also News   Subject:  রাষ্ট্র   স্তম্ভ   মির্জা ফখরুল   সরকার  







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক:
মো. আশরাফ আলী
কর্তৃক এইচবি টাওয়ার (লেভেল ৫), রোড-২৩, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২।
মোবাইল : ০১৪০৪-৪০৮০৫২, ০১৪০৪-৪০৮০৫৫, ই-মেইল : thebdbulletin@gmail.com.
কপিরাইট © বাংলাদেশ বুলেটিন সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত