এআই বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সামাজিক ঝুঁকি নিয়ে সতর্ক করেছেন সারা বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞদের একটি দল। তাদের মতে, একে মহামারী ও পারমাণবিক যুদ্ধের মতো একই শ্রেণিতে বিলুপ্তির ঝুঁকি হিসেবে অগ্রাধিকার দেয়া উচিত। খবর দ্য গার্ডিয়ান।
গতকাল মঙ্গলবার (৩০ মে) শত শত স্বাক্ষর সম্বলিত বিবৃতিটি প্রকাশ করেছে সেন্টার ফর এআই সেফটি।
বিবৃতি অনুসারে মহামারী ও পারমাণবিক যুদ্ধকে যে সামাজিক মাপকাঠিতে বিলুপ্তির ঝুঁকি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়, একইভাবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকেও বিশ্বব্যাপী অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত। এ প্রযুক্তি থেকে বিলুপ্তির ঝুঁকি হ্রাস করতে হবে।
স্বাক্ষরদাতাদের মধ্যে গুগলের ডিপমাইন্ড, ওপেনএআই চ্যাটজিপিটি ও এআই স্টার্টআপ অ্যানথ্রপিকের প্রধান নির্বাহীরাও রয়েছেন।
ওপেনএআই-এর সঙ্গে যুক্ত বিশেষজ্ঞসহ অন্যরা অস্তিত্বসূচক ভয়ের আশঙ্কা প্রকাশ করে প্রযুক্তি নিয়ন্ত্রণের জন্য আহ্বান জানান বিবৃতিতে। এআই চাকরির বাজারকে উল্লেখযোগ্যভাবে প্রভাবিত করবে, লাখ লাখ মানুষের স্বাস্থ্যের ক্ষতির কারণ হতে পারে। এছাড়া বিভ্রান্তি, বৈষম্য ও জালিয়াতির কারণে অস্ত্রের রূপ নিতে পারে।
এআই-এর গডফাদার হিসাবে দাবি করা জিওফ্রে হিন্টনও রয়েছেন স্বাক্ষরদাতার মাঝে। চলতি মাসে এই প্রযুক্তিকে ‘অস্তিত্বগত ঝুঁকি’ উল্লেখ করে গুগল ছেড়ে যান তিনি।
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের মেশিন লার্নিং-এর অধ্যাপক ও মাইন্ড ফাউন্ড্রির সহ-প্রতিষ্ঠাতা মাইকেল অসবোর্নের মতে, চিঠিটি প্রথম হিসেবে নয়, বরং বিস্তৃত পরিসর থেকে স্বাক্ষরদাতা ও ‘অস্তিত্বের উদ্বেগের’ কারণে প্রভাবশালী।
তিনি বলেন, এই চিঠি দেখায় যে আমাদের মধ্যে যারা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে কাজ করছেন তাদের মধ্যে অস্তিত্বের ঝুঁকি একটি ক্রমবর্ধমান বাস্তব উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
মহামারী ও সামরিক অস্ত্রকে নতুন রূপ দিয়ে মানব অস্তিত্বের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে এআই। অসবোর্ন জানান, অভিনব এই হুমকি তাকে স্বাক্ষর করতে পরিচালিত করেছিল।
গত নভেম্বরে চালু হওয়ার পর বিশ্বব্যাপী চাঞ্চল্য তৈরি করে চ্যাটজিপিটি। তখন থেকে ভাষার যান্ত্রিক মডেলটি লাখ লাখ মানুষ ব্যবহার করে আসছেন ও যা প্রযুক্তির যেকোনো ভবিষ্যদ্বানীর চেয়ে দ্রুত অগ্রসর হয়েছে। বিষয়টি অনুধাবণ করে তখন থেকেই সতর্কতা উচ্চারণ করে যাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।
ওসবোর্ন বলেছেন, আমরা এআইকে খুব ভালোভাবে বুঝতে পারি না বলেই এটি নতুন প্রতিযোগী জীবের ভূমিকা নিতে পারে। আমরা এমন এক ধরনের আক্রমণাত্মক প্রজাতি ডিজাইন করেছি যা আমাদের অস্তিত্বের ক্ষেত্রে বিধ্বংসী হতে পারে।
-বাবু/ সাদরিনা