মহাজোটে থেকে নয়, জাতীয় পার্টি (জাপা) এবার এককভাবে ৩০০ আসনে প্রার্থী দেবে বলে জানিয়েছেন দলের মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু।
সোমবার (২০ নভেম্বর) রাজধানীর বনানীতে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে আসন্ন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র বিক্রির কার্যক্রম শুরুর প্রথমদিনে সময় সংবাদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।
মহাসচিব বলেন, নির্বাচনে যাওয়ার প্রাথমিক কাজ শুরু করেছি। প্রক্রিয়া শুরু করলেও নির্বাচনে যাওয়ার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নয় এটি। নির্বাচনী আস্থা এখনও আসেনি। খুব শিগগিরই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। মহাজোটে নয়, এবার এককভাবে ৩০০ আসনে প্রার্থী দেবে জাতীয় পার্টি।
সংলাপ বিষয়ে জাপা মহাসচিব বলেন, সরকারি দল ও বিএনপি কেউ আগ্রহী নয় সংলাপে। তবে এখনও সময় আছে আলোচনায় বসার।
তিনি আবারও জোর দিয়ে বলেন, জাতীয় পার্টিতে কোনো বিভেদ নেই; জিএম কাদেরের নেতৃত্বে দল ঐক্যবদ্ধ।
রোববার (১৯ নভেম্বর) রাষ্ট্রপতি মো.সাহাবুদ্দিনের সাথে বঙ্গভবনে জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টির প্রধান পৃষ্ঠপোষক বেগম রওশন এরশাদের নেতৃত্বে জাতীয় পার্টির একটি প্রতিনিধি দল সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।
এরপর জাতীয় পার্টির জিএম কাদেরপন্থিরা বলেন, রওশন এরশাদ দলের পৃষ্ঠপোষক। দলীয় সিদ্ধান্ত নেয়ার এখতিয়ার তার নেই।
জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু আরও বলেন, ‘দলের কোনো সিদ্ধান্তের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার এখতিয়ার নেই রওশন এরশাদের। তিনি কার সঙ্গে কী আলাপ-আলোচনা করেছেন, সেটা ধরার মধ্যে না। এটাকে আমরা আমলে নিচ্ছি না।’
রাষ্ট্রপতির সঙ্গে রওশন এরশাদের দেখা করার বিষয়ে জাতীয় পার্টির কোনো সম্পর্ক নেই বলেও জানান দলের মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু। তবে দলে কোনো বিভেদ নেই বলেও জানান।
এরই মধ্যে রওশনপন্থিরা আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন জোটের হয়ে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেবে বলে নির্বাচন কমিশনকে চিঠিও দিয়েছে। অন্যদিকে, জিএম কাদেরপন্থিরা নির্বাচনে যাওয়া নিয়ে এখনও নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেনি। জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে আবারও দুই মেরুতে জিএম কাদের ও রওশনপন্থিরা।
এদিকে, আজ (সোমবার) থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পার্টির মনোনয়নপত্র বিক্রি শুরু হয়েছে। এর মূল্য ধরা হয়েছে ৩০ হাজার টাকা।
তফসিল অনুযায়ী, নির্বাচনে প্রার্থীদের মনোনয়ন ফরম দাখিলের শেষ দিন ৩০ নভেম্বর, মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই ১ থেকে ৪ ডিসেম্বর, মনোনয়নের আপিল ও নিষ্পত্তি ৬ থেকে ১৫ ডিসেম্বর, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ১৭ ডিসেম্বর, প্রতীক বরাদ্দ ১৮ ডিসেম্বর, নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা ১৮ ডিসেম্বর থেকে ৫ জানুয়ারি সকাল ৮টা পর্যন্ত এবং ভোটগ্রহণ ৭ জানুয়ারি।
২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বরের জাতীয় নির্বাচনের পর সংসদের প্রথম অধিবেশন বসে ২০১৯ সালের ৩০ জানুয়ারি। সংবিধান অনুযায়ী, সংসদের মেয়াদ শেষ হওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে ভোট হতে হবে। গত ১ নভেম্বর থেকে এবারের নির্বাচনের ক্ষণ গণনা শুরু হয়েছে। ২৯ জানুয়ারির মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের বাধ্যবাধকতা রয়েছে ইসির। সে অনুসারে ১৫ নভেম্বর প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন।