আজিজ-বেনজীর নিয়ে যে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিলেন ওবায়দুল কাদের
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: মঙ্গলবার, ৪ জুন, ২০২৪, ৩:১৭ PM
বর্তমান সময়ের আলোচিত-সমালোচিত ইস্যু হচ্ছে সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদ ও সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ। তাদের নিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন বেনজির-আজিজ ‘আওয়ামী লীগের লোক নন’ ‘বেনজীর আমাদের দলের লোক নয়। সিনিয়রিটি ও মেধা নিয়ে সে আইজিপি হয়েছে। আজিজও আমাদের দলের লোক নয়। তার যোগ্যতা ও সিনিয়রিটির ভিত্তিতেই সেনাপ্রধান হয়েছে। এখন ভেতরে তারা যদি কোনও অপকর্ম করে, এটা যখন সরকারের কাছে আসে তখন এদের বিচার করার সৎ সাহস শেখ হাসিনার আছে।’
বেনজির-আজিজ
মঙ্গলবার (৪ জুন) দুপুরে তেজগাঁওয়ের ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে ৬ দফা দিবস এবং ২৩ জুন আওয়ামী লীগের ‘প্লাটিনাম জয়ন্তী’ উদযাপন উপলক্ষে এক প্রতিনিধি সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
এসময় সাবেক এই দুই কর্মকর্তাকে নিয়ে বিএনপি নেতাদের বক্তব্যের সমালোচনা করেন ওবায়দুল কাদের। তাদের উদ্দেশ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আপনাদের সময় কেউ শাস্তি পায়নি। আপনাদের দলের নেতা নিজেই দুর্নীতিবাজ। সিঙ্গাপুর থেকে কোকোর (আরাফাত রহমান কোকো) টাকার একটা অংশ আনতে পেরেছি। এফবিআই ঢাকায় এসে তারেকের (তারেক রহমান) বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়ে গেছে।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গণে লক্ষ্য করেছি, বিরোধীদল বিএনপি দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলছে, অর্থপাচারের বিরিদ্ধে কথা বলছে। তাদের দলের প্রধান দুর্নীতির অভিযোগে সাজা ভোগ করছে। প্রধানমন্ত্রীর উদারতায় বাসায় চিকিৎসা নিচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রী নিজেই এটা করেছেন। বিএনপি আন্দোলন করতে পারেনি, তাদের আন্দোলনে জনগণ সম্পৃক্ত হয়নি। হেরে যাওয়ার ভয়ে নির্বাচনেও অংশ নেয়নি।’
" align=
বাংলাদেশের ইতিহাসে যত নির্বাচন হয়েছে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন তার মধ্যে শান্তিপূর্ণ হয়েছে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বিরোধীদল বিএনপি যোগ না দিলেও এ নির্বাচন সবচেয়ে শান্তিপূর্ণ। ৭৫ পরবর্তী সবচেয়ে শান্তিপূর্ণ ও সুশৃঙ্খল ছিল এবারের নির্বাচন। উপজেলা নির্বাচন নিয়েও এতো কথা, জনগণ নাকি ভোট দিতে যায় না। অথচ প্রথম ধাপে ৩৬, দ্বিতীয় ধাপে ৩৭ ও তৃতীয় ধাপে ৩৮ শতাংশেরও বেশি ভোটার উপস্থিতি ছিল। জাতীয় নির্বাচনেও ৪২ শতাংশ ভোটার উপস্থিতি ছিল। এখানে কোনও প্রাণহানি হয়নি।’
আওয়ামী লীগ শৃঙ্খলা ভঙ্গ করে কাউকে পুলিশ, সেনাবাহিনী, র্যাব কিংবা প্রশাসনের বড় পদে বসায়নি উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘৮ জনকে পাশ কাটিয়ে ৯ নম্বর ব্যক্তি মঈন ইউ আহমেদকে সেনাপ্রধান করা হয়েছিল, কে করেছে? বেগম খালেদা জিয়া। আশরাফুল, রকিবুল হুদা, কোহিনূর কার সৃষ্টি? মির্জা ফখরুল অন্ধকারে ঢিল ছুড়ছেন। ভুলে গেছেন, আপনার দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান অস্ত্র চোরাচালান, মানি লন্ডারিংয়ের মামলায়, দুর্নীতির মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি। আমাদের প্রধানমন্ত্রী দেশে-বিদেশে সর্বত্রই একজন সৎ পলিটিশিয়ান হিসেবে পরিচিত। তার সততা নিয়ে প্রশ্ন তোলার কোনও অবকাশ নেই।’
তাদেও নিয়ে ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, ‘আমাদের প্রধান প্রধান নেতা কে দুর্নীতিবাজ? সাক্ষ্যপ্রমাণ নিয়ে আসেন। দুর্নীতিবাজ আপনাদের দলের চোরের রাজা, চোরের মহারাজা সবই বিএনপি। বিএনপি দুর্নীতিবাজদের জন্মদাতা।’ তাই বিএনপির মুখে এসব মানায় না বলেও জানান এই নেতা।
এসময় দুর্নীতি বিরোধী সংস্থা টিআইবি ও সুজনের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘আজ টিআইবি একটা আছে, সুজন আছে... সুজন না কুজন জানি না। ফখরুল, গয়েশ্বর যে সুরে কথা বলে, তারাও একই সুরে কথা বলে। আজ মানুষের প্রশ্ন, টিআইবি সুজন কি বিএনপির ‘বি’ টিম? যে সুরে কথা বলে, কোনও পার্থক্য নাই, একই সুরে সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলে।’
দলের নেতাকর্মীদের কারও কোনও অসুবিধা বা স্বচ্ছলতায় ঘাটতি থাকলে দলকে জানানো কথা উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দলের অস্বচ্ছল, অসুস্থ লোককে খবর পেলেই তিনি ব্যবস্থা নেন। চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন, অস্বচ্ছলতার ব্যাপারে তার সদয় দৃষ্টি আমরা দেখতে পাই।’
দলের নেতাকর্মীদের অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘দলের বদনাম করে কেউ কোন অপকর্ম করবেন না। সত্য সত্যই। বাইরে থেকে বেনজীরকে আমরা যেভাবে দেখেছি, তিনি যে আরেক বেনজীর ভেতর থেকে সেটা তো এখন সত্য হয়ে দেখা দিচ্ছে। একজন মানুষের চলতে-ফিরতে কত টাকা লাগে? দলের নেতা যদি দলের কর্মীদের কাছে টাকা-পয়সা চায়, এটা খুব লজ্জার বিষয়।’
প্রতিনিধি সভায় সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ বজলুর রহমান।