রাজধানীর সাথে সারাদেশের পণ্য পরিবহন ব্যবস্থাপনা স্বাভাবিক হয়েছে। রাতে রাজধানীর কারওয়ান বাজার ঘুরে দেখা যায় বিভিন্ন জেলা থেকে পণ্য আগের মতোই আসছে। সড়কে সড়কে ট্রাফিকের দায়িত্বে শিক্ষার্থীরা থাকায় নির্বিঘ্নে ঢাকায় আসছে মালবাহী গাড়ি। শ্রমিকরাও ফিরেছেন রোজগারে।
বেনাপোল বন্দর থেকে ঢাকার কারওয়ান বাজারে টমেটো নিয়ে এসেছে মোহাম্মদ মুন্নার ট্রাক। আলাপ করতে গিয়ে জানা গেলো, গত কয়েকদিন আগেও পণ্য পরিবহন করতে গিয়ে হয়েছেন ছিনতাইয়ের শিকার।
শেখ হাসিনার পতনের আগে নানা সহিংস ঘটনায় পণ্য পরিবহনে ঝুঁকি বাড়ছিল। তাই সড়কপথে ভাঙচুরের শঙ্কায় অনেক ট্রাক নিত্যপণ্য নিয়ে ঢুকতে পারেনি রাজধানীর বাজারগুলোতে। তবে, এখন শিক্ষার্থীরা যখন পথে পথে ট্রাফিকের দায়িত্বে আছে, তখন নির্বিঘ্নে আসা যাচ্ছে ঢাকায়।
দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ট্রাকভর্তি কাঁচামাল নিয়ে আসা অন্য চালকরাও বলছেন একই কথা।
একজন ট্রাকচালক বলেন, 'আগে তো দিনাজপুর থেকে ঢাকায় ঢুকতে হলে আমাদের এই গাড়িগুলোতে ২ হাজার টাকা চাঁদা আসতো। এখন দুই টাকাও দিতে হচ্ছে না।'
একইসাথে রাত জেগে ট্রাক থেকে পণ্য খালাস যে শ্রমিকরা করেন, তারাও ফিরতে শুরু করেছেন স্বাভাবিক আয় রোজগারে। বলছেন, কিছুদিন আগেও কাজ না থাকায় কষ্টে দিন পার করার কথা।
একজন শ্রমিক বলেন, 'কোনো ট্রাক আসতো না, পণ্য খালাসের কাজ আমাদের, সেটা করতে পারতাম না। আমরা কষ্ট করতাম অনেক। এখন মোটামুটি আয় হচ্ছে, আমাদের চলার মতো একটা রাস্তা হয়েছে।'
ট্রাক থেকে পণ্য ভ্যানে নামিয়ে নেয়া হয় আড়তে। সেখানেও কারো যেন দম ফেলবার ফুসরত নেই। আড়ত কিংবা খুচরা দোকানে মালামাল সাজাতে ব্যস্ততম রাত পার করছেন ব্যবসায়ীরা। আলো ফুটলেই ভোক্তার কাছে হরদম চলবে বেচাকেনা।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, ঢাকায় এখন দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে সরবরাহ বাড়তে শুরু করেছে। দামও কমতে শুরু করেছে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের। সবই আমদানির ওপর নির্ভর, আমদানি বেশি হলে দাম কম হয়, আমদানি কম হলে দাম বেশি হয়।'
তবে সড়কে আরও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহ্বান সংশ্লিষ্ট গাড়িচালক, ব্যবসায়ী ও ভোক্তার। তাহলেই পণ্য সরবরাহ স্বাভাবিকে নিয়ন্ত্রণে আসার সুযোগ তৈরি হবে বাজার ব্যবস্থাপনায়।