ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ যারা ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে শ্রদ্ধা জানাতে গেছেন, তাদের বেদম মারপিটের শিকার হতে হয়েছে, তাদেরকে পিটিয়ে বেঁধে রাখার পর সেনাবাহিনীর হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।
একজনকে পেটানোর পর বিবস্ত্র করার ভিডিও ছড়িয়েছে, আরেক ভিডিওতে দেখা যায়, একজনকে ধানমন্ডি লেকে ফেলে পেটানো হয়েছে, তাকে পানি থেকে উঠতে বাধা দেওয়া হয়েছে, যারা ছবি বা ভিডিও ধারণ করেছে, তাদের ভিডিও ডিলিট করতে বাধ্য করা হয়েছে, সাংবাদিকদেরকে ছবি ও ভিডিও ধারণ না করতে হুমকি দেওয়ার খবর এসেছে গণমাধ্যমে।
বুধবার মধ্যরাতেই হামলাকারীরা ৩২ নম্বরের বাড়ির সামনের রাস্তায় অবস্থান নেয়। সকালে শুক্রাবাদ মোড় থেকে ৩২ নম্বর ও মেট্রো শপিংমলের সামনে অবস্থান নিয়ে থাকেন। কিছুক্ষণ পরপর ছোট ছোট দলে মিছিল করে।
৩২ নম্বর সড়কে লেকের পাড়ও তারা দখলে রেখেছেন। তাদের অনেকের হাতে লাঠি ও পাইপ দেখা যায়। পথচারী বা এলাকাবাসী যারাই আশেপাশের সড়ক ব্যবহার করেছে, তাদের সবাইকেই হয়রানি, গালাগাল ও হামলার শিকার হতে হয়েছে। এদেরই একজন কাদের সিদ্দিকী। লাঠিসোঁটা দিয়ে হামলা করে তার গাড়ি ভেঙে দেওয়া হয়েছে।
ধানমন্ডি ২৭ নম্বর হয়ে ৩২ নম্বরের দিকে আসার সময় হামলা হয় জানিয়ে তিনি বলেন, “বাংলাদেশের স্বাধীনতায় আমার রক্ত আছে, আমি রুখে না দাঁড়ালে অনেক সন্তান তাদের পিতৃ পরিচয় পেত না, এই বিষয়গুলোকে বিবেচনা করতে হবে।
“আমার গায়ে হাত দেওয়া আমাকে অপমান করা মুক্তিযুদ্ধকে অপমান করা, স্বাধীনতাকে অপমান করা, বাংলাদেশকে অপমান করা।”
তার পরেও যদি বাংলাদেশের মানুষ নিরাপদ হয়, জানমাল হেফাজত হয়, সম্পদের নিরাপত্তা আসে এটাকে হাসি মুখে মেনে নেওয়ার কথাও বলেছেন তিনি।
হামলাটা কীভাবে হয়েছে, সেই বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, “আমি ভেতরে যাইনি, যাওবার চেষ্টাও করিনি। সামনে যারা ছিলেন তারা বলছেন যে- ‘কাঁটা তারের বেড়া দেওয়া আছে, আপনি আর যাইয়েন না’। আমি যখন ফিরতেছিলাম, এই সময়ই গাড়ির মধ্যে আঘাত করেছে, কাচ ভেঙেছে, সবগুলো কাচই ভেঙেছে। এতেও আমি মর্মাহত না, তাও যদি দেশে শান্তি আসে।”
লাঠি হাতে দেশ নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব নয় মন্তব্য করে তিনি বলেন, “৫ তারিখে সরকার পতন হয়েছে, আজকে ১৫ তারিখ, ১০ দিনেও যদি হাতে লাঠি থাকে তাহলে তারা দেশকে নিয়ন্ত্রণে আনতে পারবে না, মানুষের মন জয় করতে পারবে না।
“আমার মত মানুষের গাড়ি যদি ভাঙে, তাহলে কার নিরাপত্তা আছে? আমি তো চাই নিরাপদ বাংলাদেশ।”
যারা হামলা করেছে তারা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্য কি না- এই প্রশ্নে কাদের সিদ্দিকী বলেন, “বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন? এরা আন্দোলন করেছে কিনা আমি বলতে পাব না। এখানে ছাত্রদের তো দেখলাম না। আমি তো কালকেও ছাত্রদের দেখে এসেছি। যারা কাজ করতেছে, রাস্তাঘাটে রং করতেছে, ওই ৩২ এর পোড়া জিনিসগুলো সরাচ্ছে, সে রকম কাউকে আমি দেখলাম না। এদেরকে একটু উগ্র যুবকই মনে হল।