তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ‘গত ১৬ বছরে লড়াই-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে মানুষের মাঝে যে প্রত্যাশা সৃষ্টি হয়েছে, তার চূড়ান্ত রূপ হলো ৩৬ দিনের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন। এই আন্দোলনের মধ্যে শেখ হাসিনা নিয়মতান্ত্রিকভাবে পদত্যাগ করেন নাই, এটা আমাদের সবার কাছে স্পষ্ট। তার পতন হয়েছে। বাংলাদেশের জনগণ তার পতন ঘটিয়েছে।’
আওয়ামী লীগ ফ্যাসিস্ট পার্টি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের মধ্যে যারা পরিচিত ছিলেন, জনগণ তাদের প্রতি ক্ষুব্ধ ছিলেন। আওয়ামী লীগ কিন্তু একটা ফ্যাসিস্ট পার্টি। তৃণমূল পর্যন্ত তার কমিটি আছে, বাহিনী আছে। সে বাহিনী কিন্তু একই রকম ক্ষতিকারক। বাংলাদেশের জনগণের জন্য আসলে হুমকি। বড়দের সঙ্গে সঙ্গে তৃণমূলের নেতাকর্মীদেরও গ্রেফতার করা জরুরি। আমরা সেদিকে মনোযোগ দিচ্ছি। যাতে তৃণমূলে ছাত্রলীগ-যুবলীগ যারা আছে এবং সন্ত্রাসী কার্যক্রম করছে, তাদের দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা যায়।’
গতকাল বুধবার (২৩ অক্টোবর) সন্ধ্যায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের জহির রায়হান মিলনায়তনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উদ্যোগে ‘গণঅভ্যুত্থানের সরকার: প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি’ শীর্ষক আলোচনায় এসব কথা বলেন তিনি।
আওয়ামী লীগ নেতাদের উদ্দেশে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘আপনারা যারা দেশে রয়েছেন, দিবাস্বপ্ন দেখছেন, তাদের উচিত সমাজে সন্ত্রাসী কার্যক্রম না করে আত্মসমর্পণ করা। তাহলে হয়তো শাস্তি কিছুটা কম হতে পারে। যারাই আওয়ামী ফ্যাসিবাদী রাজনীতির অংশীদার ছিল, সুবিধাবাদী ছিল, তাদের একটাই পরিচয়; সে ফ্যাসিস্ট এবং গণহত্যাকারী। সে কবি, সাংবাদিক, শিক্ষক কিনা এটা আসলে আমাদের বিবেচনার বিষয় নয়। আমরা দেখেছি, শিক্ষকদের একটা অংশ আন্দোলনের সময় আমাদের সঙ্গে ছিলেন; তবে বড় একটি অংশ বিপক্ষে ছিলেন।’
উপদেষ্টা বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাজ হলো নির্বাচন আয়োজন করে ক্ষমতা হস্তান্তর করা। আর অভ্যুত্থানের মাধ্যমে আসা বর্তমান সরকারের লক্ষ্য হলো রাষ্ট্রের মৌলিক সংস্কার করে গণতান্ত্রিক নির্বাচনের পথ মসৃণ করা। আওয়ামী লীগ যে মতাদর্শ ও প্রক্রিয়ায় রাজনীতি করেছে, সেই আওয়ামী লীগ আর বাংলাদেশে কখনও আসবে না। যদি আসে সেটা হবে শহীদদের সঙ্গে প্রতারণা। আমাদের এমন একটি রাজনৈতিক কাঠামো সৃষ্টি করতে হবে, যেখানে কেউ যেন আরেকজন শেখ হাসিনা হয়ে উঠতে না পারে।’