খালেদা জিয়ার সঙ্গে ১৭ বছর পর গত ৬ মে দেশে এসেছেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমান। ওইদিন খালেদা জিয়াকে দল ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা রাস্তায় দাঁড়িয়ে স্বাগত জানায়।
পাশাপাশি জুবাইদা রহমানকে স্বাগত জানিয়ে ব্যানার-পোস্টারও প্রদর্শন করা হয়। এরপর জুবাইদাকে তার নিজ এলাকায় সিলেট-১ আসনে আগামী নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে চেয়ে ব্যানার-পোস্টার সাঁটানো হয়। তারপর থেকে তার রাজনীতিতে আসা নিয়ে চলছে নানামুখী আলোচনা। তবে, বিএনপি সূত্রগুলো বলছে—এখনই রাজনীতিতে আসবেন না জুবাইদা রহমান।
দলটির নেতারা বলছেন, খালেদা জিয়ার বর্তমান শারীরিক ও মানসিক অবস্থা ভালো থাকলেও তিনি পুরোপুরি রাজনীতিতে সক্রিয় হওয়ার সম্ভাবনা নেই। তার রাজনৈতিক উত্তরসূরি হিসেবে তারেক রহমানের নেতৃত্বে শক্ত অবস্থানে রয়েছে দল। শুরুতে তারেক রহমানের নেতৃত্ব নিয়ে দলের সিনিয়র নেতাদের মধ্যে কিছুটা ‘অস্বস্তি’ থাকলেও নেতৃত্বের গুণে এখন তিনি সবার কাছে গ্রহণযোগ্য। আর তারেক রহমানও চায় না এই মুহূর্তে জুবাইদা রহমান রাজনীতিতে আসুক।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘আমাদের নেতা কর্মীদের প্রত্যাশা ডা. জুবাইদা রহমান রাজনীতিতে নামুক। তারই প্রতিক্রিয়া হিসেবে বিভিন্ন জায়গায় তার নামে এবং তাকে প্রার্থী হিসেবে দেখতে চেয়ে ব্যানার-পোস্টার করা হয়েছে। কিন্তু এটা তার রাজনীতিতে আসার কোনো ঘোষণা নয়। ডা. জুবাইদা রহমান নিজেও রাজনীতিতে আসার কোনো ঘোষণা দেননি।’
‘আমরা বিএনপি পরিবার’ এর আহবায়ক আতিকুর রহমান বলেন, এখনই তিনি রাজনীতিতে আসছেন না। তবে, এটাও মনে রাখতে হবে দেশের প্রয়োজনে বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া গৃহবধূ থেকে রাজনীতিতে এসেছিলেন। দল কখনও প্রয়োজন মনে করলে জুবাইদা রহমান তখন রাজনীতিতে আসবেন কিনা, সেটা তখন সিদ্ধান্ত হবে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এক সদস্য বলেন, “দলের পুরো হাল এখন তারেক রহমানের হাতে। বিগত বছরগুলোতে দলের সর্বস্তরে তার সরাসরি নির্দেশনা কাজে লেগেছে। ম্যাডাম খালেদা জিয়ার পাশাপাশি তারেক রহমানই এখন বিএনপির ঐক্যের প্রতীক। সুতরাং এখানে অন্য কেউ গুরুত্বপূর্ণ নয়।”
সামগ্রিকভাবে বিএনপি নেতারা বলছেন, সারাদেশের বিএনপির নেতাকর্মীদের প্রত্যাশা ডা. জুবাইদা রহমান রাজনীতিতে আসুক। তাদের সেই প্রত্যাশা থেকে ঢাকা-সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় ব্যানার-ফেস্টুন এবং পোস্টার সাঁটানো হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত তিনিও রাজনীতিতে আসার কোনো ইচ্ছা প্রকাশ করেননি। এছাড়া দলের মধ্যেও তাকে রাজনীতিতে নিয়ে আসার বিষয়ে আনুষ্ঠানিক-অনানুষ্ঠানিক কোনো আলোচনা হয়নি। তাই এটা বলা যায় যে, দীর্ঘ সময় রাজনৈতিক পরিবারের মধ্যে বসবাস করলেও সহসাই সরাসরি রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হচ্ছেন না তিনি।