তারেক রহমান বলেছেন, স্বৈরাচার পালিয়ে যাওয়ার কয়েকদিন পরে বিভিন্ন জেলার নেতাকর্মীদের সঙ্গে আমি বসেছিলাম। তখন আপনাদেরকে বলেছিলাম, আমাদের মধ্যে হয়তো অনেকেই ভাবছে একটি প্রতিপক্ষ তো আর মাঠে নেই, আগামী নির্বাচন কি আর কঠিন হবে। আমি তখন বলেছিলাম আগামী নির্বাচন বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে কঠিন হবে। এক বছর আগে আমি বলেছিলাম অদৃশ্য শক্তি বিভিন্নভাবে কাজ করছে বিভিন্ন ষড়যন্ত্র হচ্ছে। আজকে কি আমার কথার অর্থ বুঝতে পারছেন আপনারা?
আজ সোমবার (১১ আগস্ট) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে নওগাঁ কনভেনশন সেন্টারে জেলা বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে যোগ দিয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তারেক রহমান বলেন, পত্রিকা খুললেই আপনারা একটি বিষয় দেখেন, সারা দেশের সংস্কার নিয়ে আলোচনা। কি কি সংস্কার করলে দেশের ভালো হয়। নেতৃবৃন্দ, আপনাদের খুব ভালো করেই জানা আছে, যে সংস্কারগুলোর বিষয় নিয়ে আলোচনা হচ্ছে আপনার দল বিএনপি আজ থেকে আড়াই বছর আগে যখন স্বৈরাচার এ দেশের মানুষের টুটি চেপে ধরেছিল, মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছিল, অর্থ-সম্পদ লুটপাট করে পাচার করে দিয়েছিল। সেই সময় আমাদের দল বিএনপি বাংলাদেশের মানুষের সামনে ৩১ দফা উপস্থাপন করেছিল।
তিনি বলেন, ৩১ দফা এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের যে সংস্কার কমিশন রয়েছে তাদের বিষয়গুলো দেখবেন প্রায় অধিকাংশ বিষয়ে মিল খুঁজে পাবেন। আমরা কাউকে ছোট করে কথা বলতে চাই না, আমরা সবাইকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে চাই। কিন্তু গত ছয় মাস বা এক বছর ধরে যারা সংস্কারের কথা বলছেন তাদের বহু আগে আপনি সংস্কারের কথা বলেছেন। আজকে অনেক দল বলছে এই সংস্কার নাহলে নির্বাচন করবো না ওই সংস্কার না হলে নির্বাচন করবো না। তারা বলতেই পারে। সবারই মত প্রকাশের স্বাধীনতা রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বিএনপির দেশ পরিচালনা করার অভিজ্ঞতা রয়েছে। বিএনপির অভিজ্ঞতা আছে এ দেশের খাদ্য উৎপাদন কিভাবে দ্বিগুণ করতে হয়, নারী সমাজকে কিভাবে শিক্ষার আলোয় আলোকিত করতে হয়, কিভাবে লক্ষ্য কোটি শ্রমিককে বিদেশে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দিতে হয়। বিএনপির অভিজ্ঞতা রয়েছে কিভাবে এ দেশের মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে হয়। আমরা এই দেশের মানুষের কল্যাণ চিন্তা করি বলেই আজ থেকে আড়াই বছর আগে রাষ্ট্র মেরামতের জন্য ৩১ দফা দিয়েছি। স্বৈরাচারের সময় দেখেছি রাষ্ট্রের সব সেক্টরকে কিভাবে ধ্বংস করে দিতে হয়। কিন্তু বিএনপির অভিজ্ঞতা রয়েছে কিভাবে রাষ্ট্র মেরামত করতে হয়।
তারেক রহমান বলেন, রাজনৈতিক দলের পুঁজি হচ্ছে জনগণ, রাজনৈতিক দলের লক্ষ্য উদ্দেশে হচ্ছে জনগণের আস্থা এবং বিশ্বাস অর্জন করা। এখানে আপনারা যতজন আছেন সবারই একটি পরিচয় শহীদ জিয়ার সৈনিক। প্রত্যেককেই সতর্ক থাকতে হবে। এমন কিছু করা যাবে না, যাতে আমাদের প্রতি জনগণের আস্থা নষ্ট হয়। একজন আরেকজনের প্রতি নজর রাখবেন, যাতে আপনার সহকর্মিটির কাজের দ্বারা দল ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।