গণভোটের চারটি প্রশ্নের কোনো একটির সাথে দ্বিমত থাকলে, সেখানে না বলার সুযোগটা কোথায় সরকারের কাছে এমন প্রশ্ন রেখেছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)’র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
শনিবার দুপুরে রাজধানীর শ্যামলীতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে অসুস্থ বেতারশিল্পী আফরোজা নিজামীকে আর্থিক সহযোগিতা প্রদান শেষে তিনি একথা বলেন।
রিজভী বলেন, গোজামিল দিয়ে কোনোকিছু করা হলে তা টেকসই হবে না। ৯০ ভাগ মানুষ যদি বুঝতে না পারে গণভোটের উদ্দেশ্য কী, তাহলে মানুষ অন্ধকারে থেকে যাবে। সাধারণ মানুষ বুঝতে পারবে, সেই আলোকে গণভোটের প্রশ্নমালা তৈরি করতে হবে।
তিনি বলেন, ভারত থেকে আসা বিপুল অর্থে দেশে নাশকতা তৈরির চেষ্টা করছে আওয়ামী লীগ। তারা দেশে ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি করতে চায়। শেখ হাসিনার বিচারের বিষয় আদালতের, মানুষ জুলাই হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচার চায়।
বৃহস্পতিবার অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে বলেছেন, জাতীয় নির্বাচনের দিনই গণভোট অনুষ্ঠিত হবে। গণভোটের চারটি বিষয়ের ওপর একটিমাত্র প্রশ্নে ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’ ভোট দিয়ে মতামত জানানো যাবে।
তিনি বলেন, গণভোটে সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট ‘হ্যাঁ’ সূচক হলে আগামী সংসদ নির্বাচনে নির্বাচিত প্রতিনিধি নিয়ে একটি সংবিধান সংস্কার পরিষদ গঠিত হবে। এই প্রতিনিধিরা একইসঙ্গে জাতীয় সংসদের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। পরিষদ তার প্রথম অধিবেশন শুরুর তারিখ হতে ১৮০ কার্যদিবসের মধ্যে সংবিধান সংস্কার করবে। সংবিধান সংস্কার সম্পন্ন হবার পর ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে সংসদ নির্বাচনে প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যানুপাতে উচ্চকক্ষ গঠন করা হবে। এর মেয়াদ হবে নিম্নকক্ষের শেষ কার্যদিবস পর্যন্ত।
যে চার বিষয়ে গণভোট:
১. নির্বাচনকালীন সময়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার, নির্বাচন কমিশন এবং অন্যান্য সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান জুলাই সনদে বর্ণিত প্রক্রিয়ার আলোকে গঠন করা হবে।
২. আগামী সংসদ হবে দুই কক্ষবিশিষ্ট। জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলগুলোর প্রাপ্ত ভোটের অনুপাতে ১০০ জন সদস্যবিশিষ্ট একটি উচ্চকক্ষ গঠিত হবে এবং সংবিধান সংশোধন করতে হলে উচ্চকক্ষের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের অনুমোদন দরকার হবে।
৩. সংসদে নারীর প্রতিনিধি বৃদ্ধি, বিরোধী দল থেকে ডেপুটি স্পিকার ও সংসদীয় কমিটির সভাপতি নির্বাচন, প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ সীমিতকরণ, রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা বৃদ্ধি, মৌলিক অধিকার সম্প্রসারণ, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও স্থানীয় সরকারসহ বিভিন্ন বিষয়ে যে ৩০টি প্রস্তাবে জুলাই জাতীয় সনদে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্য হয়েছে, সেগুলো বাস্তবায়নে আগামী নির্বাচনে বিজয়ী দলগুলো বাধ্য থাকবে।
৪. জুলাই সনদে বর্ণিত অন্যান্য সংস্কার রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিশ্রুতি অনুসারে বাস্তবায়ন করা হবে।