ইউক্রেনের জাপোরিজ্ঝিয়া পরমাণু কেন্দ্রের কাছে আবারও একাধিক বিস্ফোরণ। এ নিয়ে সরব অবস্থানে জাতিসংঘ। রাশিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগের তীর ছুঁড়েছে ইউক্রেন।
বৃহস্পতিবার (১১ আগস্ট) আবারও একাধিক বিস্ফোরণ হয়েছে দক্ষিণ ইউক্রেনের জাপোরিজ্ঝিয়া পরমাণু কেন্দ্রে। তা আপাতত রাশিয়ার দখলে। ওই কেন্দ্রের ভিতরে রাশিয়ার সেনা আছে বলে অভিযোগ।
ইউক্রেনের প্রশাসন জানিয়েছে, পরমাণু কেন্দ্রটির ভিতর যেখানে প্রথম বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রটি আছে, সেখানে বিস্ফোরণ হয়েছে। এছাড়াও তেজস্ক্রিয় পদার্থ মজুত রয়েছে যে সমস্ত জায়গায়, সেখানেও বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। তবে বড়সড় কোনো ক্ষতি হয়নি।
গত সপ্তাহেও, পরমাণু কেন্দ্রটিতে বিস্ফোরণ হয়েছিল। যার জেরে একটি ইউনিট বন্ধ করে দিতে হয়েছিল। বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, বৃহস্পতিবার যেভাবে সেখানে বিস্ফোরণ হয়েছে, তাতে যে কোনো সময় বড়সড় দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারতো। একবার তেজস্ক্রিয় বস্তুতে বিস্ফোরণ হলে তা ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি করবে বলে আশঙ্কা।
ইউক্রেনের দাবি, রাশিয়ার শেল বা রকেট এসে পড়েছে ওই কেন্দ্রে। যদিও রাশিয়া এখনো পর্যন্ত তা স্বীকার করেনি। এবিষয়ে তারা এখনো পর্যন্ত কোনো মন্তব্য করেনি। গত সপ্তাহে রাশিয়া জানিয়েছিল, ইউক্রেন ওই পরমাণু কেন্দ্রে আক্রমণ চালিয়েছে। কারণ রাশিয়ার সেনা ভিতরে আছে।
ইউক্রেনের অভিযোগ, রাশিয়ার সেনা পরমাণু কেন্দ্রের ভিতর থেকে আক্রমণ চালাচ্ছে। সে কারণে তাদের বিরুদ্ধে ইউক্রেন কোনো ব্যবস্থা নিতে পারছে না। বৃহস্পতিবার ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, পরমাণু কেন্দ্রকে সামনে রেখে রাশিয়া ইউক্রেনকে ব্ল্যাকমেল করছে।
বৃহস্পতিবারের ঘটনার পর জাতিসংঘের প্রধান অ্যান্তোনিও গুতেরেস জানিয়েছেন, ওই পরমাণু কেন্দ্রটিকে সেনাহীন করতে হবে। রাশিয়াকে দ্রুত ওই এলাকা ছেড়ে চলে যেতে বলেছেন তিনি। তার বক্তব্য, পরমাণু কেন্দ্রে এই ধরনের পরিস্থিতি কোনোভাবেই কাম্য নয়। যেভাবেই হোক ওই এলাকাটিকে সেনামুক্ত করতে হবে।
সম্প্রতি একটি উপগ্রহ চিত্র প্রকাশ করেছে ইউক্রেন। তবে চিত্রটি গোপনীয় নয়। সেখানে বিস্ফোরণের পর ক্রাইমিয়ায় রাশিয়ার বেসের অবস্থা দেখা যাচ্ছে। পাশাপাশি রাখা দুইটি চিত্র থেকে স্পষ্ট, বিস্ফোরণে কতটা ক্ষতি হয়েছে সেনাঘাঁটিটির।
দিনকয়েক আগে ওই সেনাঘাঁটিতে বিস্ফোরণ হয়েছিল। ইউক্রেন জানিয়েছিল, তারা সেখানে হামলা চালায়নি। রাশিয়া জানিয়েছিল, তেল এবং বারুদের সংযোগেই সেখানে বিস্ফোরণ হয়। যদিও ইউক্রেন তা মানতে চায়নি। ইউক্রেন দাবি করেছে, ওই ঘটনায় রাশিয়ার নয়টি যুদ্ধবিমান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। রাশিয়া তা মানতে চায়নি। সেনাঘাঁটিতে বিশেষ ক্ষতি হয়নি বলে রাশিয়া দাবি করেছে। কিন্তু উপগ্রহ চিত্রে স্পষ্ট, সেনাঘাঁটিটির বিপুল ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
রাশিয়া হুমকি দিয়েছে, ক্রিমিয়ায় ইউক্রেন আক্রমণ করলে তার ফল ভুগতে হবে। কিয়েভে আক্রমণ চালাবে রাশিয়া। তবে সেনাঘাঁটির বিস্ফোরণের পর রাশিয়া তেমন কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।
-বাবু/শোভা