ঢাকার আশুলিয়ার সীমান্তবর্তী গাজীপুর কাশিমপুরে ইতি আক্তার (২৫) নামে এক গৃহবধূর রহস্য জনক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে । তবে ভুক্তভোগী পরিবারের দাবি স্বামীর পরকিয়া প্রেমের বাধা দেওয়ায় তাকে হত্যার পরে ফাঁসিতে ঝুঁলিয়ে আত্মাহত্যার প্রচারণার চেষ্টা চালিয়েছে। এঘটনায় অভিযুক্ত স্বামীকে আটক করেছেন পুলিশ।
বুধবার সন্ধ্যায় আশুলিয়ার সরকার মার্কেট এলাকার নারী ও শিশু হাসপাতাল থেকে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করেন পুলিশ। এর আগে কাশিমপুর থানাধীন বাগবাড়ী রুস্তম আলীর বাড়িতে এই ঘটনা ঘটে।
নিহত আশুলিয়ার জিরাবো কুন্ডলবাগ এলাকার শহীদ শিকদারের মেয়ে। আটক স্বামী মোসলেম উদ্দিন মন্ডল কাশিমপুর থানার বাগবাড়ী এলাকার রুস্তম আলীর ছেলে(৩০)।
ভুক্তভোগী পরিবার জানায়, ২০১৯ সালের এপ্রিল মাসে মোসলেম উদ্দিনের সাথে ইতি আক্তারের বিয়ে হয়। বিয়ে হওয়ার পরে তাদের সংসারে ইয়াসিন নামে (১) বছরের একটি ছেলে সন্তান রয়েছে । বিয়ের পর থেকেই স্বামী মোসলেম উদ্দিন পরকিয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। এঘটনা জানতে পেরে ইতি বিয়ের পর থেকেই প্রতিবাদ করে আসছিলো। যার কারণে প্রতিনিয়ত নেশায় আসক্ত হয়ে তাকে শারীরিক মানসিক নির্যাতন করে করে আসছিলো। এরই জেরে বুধবার বিকালে ইতি আক্তারকে হত্যা করে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে আত্মাহত্যা করেছে বলে প্রচারণা চালায়। এরপর ঘটনার মোড় অন্যদিকে ঘোরাতে আশুলিয়ার নারী ও শিশু হাসপাতালে নিয়ে আসে স্বামী মোসলেম উদ্দিন মন্ডল। সেখানকার কর্ত্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন৷
নিহতের ফুপু বলেন, বিয়ের হওয়ার পর থেকেই ইতিকে মারধর করতো জামাই। আমাদের বাড়িতেও আসলেও মারধর করতো শ্বশুর বাড়িতে থাকলেও সব সময় নির্যাতন করতো। একবার মেরে হাত এবং মাঝা ভেঙ্গে ফেলেছিল। এনিয়ে অনেকবার বিচার শালিশও হয়েছে। কিন্তু কোনো ভাবেই এই অত্যাচার মারধর থেকে রেহাই পাই নাই ইতি। জামাইয়ের পরকীয়া সম্পর্ক থাকার কারণে আমার ভাতিজী প্রতিবাদ করতো। যার কারণে হত্যা করে ফাঁসিতে ঝুঁলিয়ে রেখে আত্মাহত্যা করেছে বলে মিথ্যা প্রচারণা চালায় ঘাতক জামাই। ইতিকে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করে শ্বশুর বাড়ী লোকজন আত্মা হত্যার নাটক সাজিয়ে হাসপাতালেই ভর্তি করেছে।
এবিষয়ে কাশিমপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রায়হান উদ্দিন বলেন, প্রথমত আশুলিয়া থানা পুলিশ আমাদেরকে এঘটনা জানায়। পরে আমরা এসে আশুলিয়ার নারী ও শিশু হাসপাতাল থেকে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে সুরাতহাল শেষে ময়ণা তদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়ে দিয়েছি। ময়ণা তদন্ত শেষে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে হত্যা নাকি আত্মাহত্যা। এখনো পর্যন্ত পরিবারের কোনো অভিযোগ পাইনি। পরবর্তীতে নিহতের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতেই আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানান তিনি।
-বাবু/এ.এস