‘ভালোবেসে, সখী, নিভৃতে যতনে/ আমার নামটি লিখো/ তোমার মনের মন্দিরে’—এমন আকুতি জানিয়েও প্রত্যাখ্যানের নীল বেদনা বরণ করেছেন অনেকেই। প্রেয়সীর আঘাত কিংবা প্রিয়তম না করে দেয়ার ভারে অনেকে হয়েছেন বিমর্ষ। কিন্তু তাতে অবশ্য জীবন থমকে যাওয়ার কথা নয়।
প্রত্যাখ্যানের যন্ত্রণা নিয়ে বিরহী মনকে শুধু দুঃখের গানের মধ্যেও আটকে ফেলা সম্ভবত উচিত হবে না। বরং আপনি যে একা, আপনার যে একাকিত্ব সেটিকে বরং উদযাপন করুন আজ। আজকের তারিখের দিকে একটু মনোযোগ দিলেই দেখবেন একাকিত্বের যে উজ্জ্বলতা, তার ছাপ রয়ে গেছে।
১১ নভেম্বরকে সংখ্যায় প্রকাশ করতে হলে লিখতে হয় ১১-১১। আর সেখানেই সিঙ্গল বা একাকী জীবনের প্রতিনিধিত্ব করছে দিনটি। তাই পৃথিবীর অনেক দেশে আয়োজনের মধ্য দিয়ে কিংবা নিভৃতে উদযাপিত হচ্ছে দিনটি।
চীন দেশে এটিকে দেখা হয় বাণিজ্যিক ছুটির দিন হিসেবে। যেখানে একজন সঙ্গীহীন মানুষ নিজের এবং তার প্রিয় মানুষের জন্য কেনাকাটার মধ্য দিয়ে নিজের একাকিত্বকে উদযাপন করেন।
দিনটির গোড়াপত্তনও হয়েছিল চীন থেকে। দেশটির নানজিং বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল নিঃসঙ্গ শিক্ষার্থী, যারা ভালোবাসা চেয়ে ব্যর্থ হয়েছেন কিংবা সম্পর্কের টানাপড়েনে নিঃসঙ্গতা বেছে নিয়েছিলেন, তাদের হাত ধরে শুরু হয় সিঙ্গল ডে বা সঙ্গীহীনতা উদযাপন।

এই দলের সবাই ভালোবেসে ব্যর্থ হলেও জীবনের প্রতি ছিল তাদের ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি। তাই ভাবলেন, ভালোবাসার মানুষের জন্য বিলাপের বদলে একা থাকাকে উদযাপন করবেন দারুণ ছন্দে।
তাই ১৯৯৩ সালের ১১ নভেম্বরকে বেছে নিলেন তারা। যুক্তি? রোমান হরফে ১১ নভেম্বরকে লেখা হয় 11-11। এক মানেই একক, একা। কিন্তু লাঠির মতো দেখতে চারটি এক মিলে যেন সম্মিলিত শক্তি, জীবনকে উপভোগের নতুন প্রেরণা।
তাই ভালোবাসা কিংবা ভ্যালেন্টাইনস ডে বিরোধী একটি আয়োজন ধীরে ধীরে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে চীনের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে। আনন্দ উদযাপন, বন্ধুদের সঙ্গে মজা করে দিনটি কাটাতে চান নিঃসঙ্গ মানুষেরা।

আজ ১১ ফেব্রুয়ারি, সিঙ্গেলেই সুখী দিবস (স্যাটিসফায়েড স্টেয়িং সিঙ্গেল ডে)। টমাস ও রুথ রয় নামের দুজন ভদ্রলোকের উদ্যোগে দিনটির প্রচলন হয়। তবে কবে থেকে এটি পালিত হচ্ছে, জানা যায় না। নানাভাবে দিনটি পালন করা যেতে পারে। সিঙ্গেল বন্ধুরা মিলে একটা সিঙ্গেল পার্টি দিতে পারেন। একাকী ঘুরে আসতে পারেন দূরে কোথাও।
-বাবু/এ.এস