সম্প্রতি মাদারীপুরে একটি যাত্রীবাহী বাস খাদে পড়ে নিহত ১৯ জনের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার প্রশ্নে রুল জারি করেছে হাইকোর্ট। চারটি বিষয়ে জবাব চেয়ে এই রুল জারি করেছে হাইকোর্ট। এতে মাদারীপুরের শিবচরে বাস দুর্ঘটনায় নিহত ১৯ জনের পরিবারকে কেন পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে না, সড়কে চলাচল করা মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, রাস্তায় চলাচল করা গাড়ির ফিটনেস, লাইসেন্স এবং চালকের লাইসেন্স নিয়ে চলাচল নিশ্চিত করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না তা জানতে চেয়েছে উচ্চ আদালত।
বিচারপতি কেএম কামরুল কাদের ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করে। বুধবার (৫ এপ্রিল) জনস্বার্থে দায়ের করা এক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে এই রুল জারি করে আদালত। হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের পক্ষে এ রিট করা হয়। আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।
তিনি জানান, সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, অর্থ সচিব, স্বাস্থ্য সচিব, মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার, বিআরটিএ’র চেয়ারম্যান, ইমাদ পরিবহনের এমডি হাবিবুর রহমানসহ ১১ জনকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
মাদারীপুরের শিবপুর উপজেলায় ঢাকাগামী ইমাদ পরিবহনের বাসটি খাদে পড়ে ১৯ জন নিহত ও আহত হয়েছে কমপক্ষে ২৫ জন। জানা গেছে, ইমাদ পরিবহনের বাসটি ভোর সাড়ে চারটায় খুলনা থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। এরপর পদ্মা সেতুর আগে শিবচরের কুতুবপুর এলাকায় এক্সপ্রেসওয়েতে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রেলিং ভেঙে নিচে পড়ে যায়। এতে বাসটির সামনের অংশ একেবারে দুমড়ে মুচড়ে যায়। ঘটনাস্থলেই মারা যায় বাসের ১৪ যাত্রী। শিবচর হাসপাতালে নেওয়ার পর মারা যান আরও ৩ জন।
তাছাড়া ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেওয়ার পর মারা যায় আরও ২ জন। মোট ১৯ যাত্রী এ দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন।
ওই ঘটনায় নিহত ব্যক্তিরা হলেন- গোপালগঞ্জে গোপীনাথপুর এলাকার তৈয়ব আলীর ছেলে হেদায়েত মিয়া, বনগ্রাম এলাকার শামসুল শেখের ছেলে মোস্তাক আহমেদ, সদর উপজেলার নশর আলী শেখের ছেলে সজীব শেখ, পাচুরিয়া এলাকার মাসুদ হোসেনের মেয়ে সুইটি আক্তার, টুঙ্গিপাড়ার কাঞ্চন শেখের ছেলে করিম শেখ, সদর উপজেলার আবু হেনা মোস্তফার মেয়ে আফসানা মিমি ও মুকসুদপুর এলাকার আমজেদ আলীর ছেলে মাসুদ আলী; খুলনার সোনাডাঙা এলাকার শেখ মোহাম্মদ আলীর ছেলে আবদুল্লাহ আল মামুন, সাউথ মেন্টাল রোড এলাকার চিত্ত রঞ্জন ঘোষের ছেলে চিন্ময় প্রসূন ঘোষ, ডুমুরিয়া এলাকার পরিমল সাদুখা ছেলে মহাদেব কুমার সাদুখা, আমতলা এলাকার শাহজাহান মোল্লার ছেলে আশফাকুর জাহান লিংকন; বাগেরহাট জেলা শহরের শান্তি রঞ্জন মজুমদারের ছেলে অনাদি মজুমদার; ফরিদপুরের হিদাডাঙ্গা এলাকার সৈয়দ মুরাদ আলীর ছেলে মো. ইসমাইল হোসেন; নড়াইলের লোহাগড়া এলাকার বকু শিকদারের ছেলে ফরহাদ শিকদার; ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আলী আকবরের ছেলে ও ইমাদ পরিবহন বাসটির চালক জাহিদ হাসান, চালকের সহকারী মিরাজ এবং পাবনার সুজানগরের গহর আলীর ছেলে ইউসুফ আলী, গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার মানিকদি গ্রামের মিজানুর রহমান বিশ্বাসের ছেলে মিনহাজ বিশ্বাস ও বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার আলী আকবর।
বাবু/মম