পটুয়াখালীর দশমিনায় জমিজমা নিয়ে বিরোধীয় প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে মা রিনা বেগম আর চাচা সেন্টু মিলে মরিয়মকে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রেস ব্রিফিংয়ে জানিয়েছেন পটুয়াখালী জেলা পুলিশ সুপার মোঃ সাইদুল ইসলাম।
বুধবার উপজেলার বেতাগীসানকিপুর ইউনিয়নের রামভল্লব গ্রামে মরিয়মকে হত্যার স্থানে সংবাদকর্মীদের প্রেসব্রিফেং এ জেলা পুলিশ সুপার মোঃ সাইদুল ইসলাম এসব কথা জানানো হয়েছে।
প্রেসব্রিফেং তিনি আরো বলেন, প্রেস ব্রিফিংয়ে আরো জানানো হয়, মরিয়মকে হত্যার আলামত ঢাকতে মা রিনা বেগম রক্তাক্ত পোষাক নিয়ে পুকুরে নেমে সাতার জানা মরিয়মকে খুজতে থাকেন এবং মরিয়মের নিখোজ হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যে বাড়ি বাড়ি না খুঁজে এলাকার মসজিদের মাইকে তার নিখোঁজ হওয়ার সংবাদ প্রচার করতে থাকেন। এছাড়া মরিয়মের মায়ের অসংলগ্ন আচরণ দেখে পুলিশের সন্দেহ হয়। মরিয়মকে হত্যার কাজে ব্যাবহৃত লাঠি ও ওড়না উদ্ধার করেছে পুলিশ।
মরিয়মের হত্যার পর দশমিনা থানা পুলিশ ও স্পেশাল পুলিশ পটুয়াখালী বিভিন্ন ভাবে হত্যার রহস্য উদঘাটনে কাজ করেন। মরিয়মের চাচা সেন্টুকে পুলিশ হেফাজতে এনে জিঞ্জাসা বাদ করলে হত্য করার কথা স্বীকার করে পরে মহামান্য আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি মূলক জবারবন্দি দেন, মরিয়মের মায়ের সাথে আত্মীয়দের দীর্ঘদিন জমিজমা নিয়ে বিরোধ ও মামালা চলোমান।
তাদের ফাঁসানোর জন্য অনেক দিন থেকে চাচা ও মা পরিকল্পনা করে আসছে। প্রথম পরিকল্পনা ছিলো মেঝো মেয়েকে ধর্ষন করাবে কিন্তুু ধর্ষন মামলা দিলে বিবাহ দিতে পরবেনা তাই ওই পরিকল্পনা বাদ দেয়। দ্ধিতীয় পরিকল্পনা ছোট মেয়ে মরিয়মকে হত্য করে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাবে।
দ্ধিতীয় পরিকল্পনা বাস্তবায়নে গত বৃহস্পতিবার বিকেলে ছোট মেয়ে মরিয়মকে হত্যার পরিকল্পনা করে মরিয়মের মা রিনা বেগম ও চাচা সেন্টু। ওই হত্যা বিরোধীয়দের উপর চাপিয়ে দেয়ার জন্য পরিকল্পানা মোতাবেক তারিখ সন্ধ্যায় আলালের ঘর থেকে মরিয়ম বের হবার পর মা মাঝ পথ থেকে বাড়ির উত্তর পাশের নির্জন ভিটায় নিয়ে যায় সেখানে সেন্টু আগে থেকে উপস্থিত ছিলো। মরিয়মকে নিয়ে যাবার পর সেন্টু প্রথমে লাঠিদিয়ে মাথায় আঘাত করে এবং মরিয়ম চিৎকার করাতে না পারে সে কারনে মা রিনা বেগম মুখের মধ্যে ওরনা দিয়ে গলায় পেচিয়ে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করেন। সেন্টুর স্বীকরোক্তিমূলক জবানবন্দি মূলে ওই লাঠি মঙ্গলবার উদ্ধার করা হয় এবং মরিয়মের মা রিনা বেগমকে আটক করা হয়। সেন্টুকে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে এবং মরিয়মকে যেখানে হত্যা করা হয়েছে সেখানে মরিয়মের মা রিনা বেগমকে সাথে করে নিয়ে এসেছি ঘটনার বিবরন জানা জন্য। মরিয়মের হত্যার সাথে আরো কেহ জড়িত আছেকিনা সে বিষয়ে ক্ষতিয়ে দেখা হচ্ছে।
প্রেস ব্রিফিং এর সময় উপস্থিত ছিলেন দশমিনা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকতা (ওসি) নুরুল ইসলাম মজুমদার, পটুয়াখালী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) মোঃ জসিম উদ্দিন, দশমিনা থানার পুলিশ পরিদর্শক(তদন্ত) অনুপ দাস, বেতাগিসানকিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মশিউর রহমান ঝন্টু সহ উপজেলা ও জেলা প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সংবাদকর্মী।
এর আগে শনিবার রামবল্লভ অগ্রণী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী মরিয়মকে (৮) বাড়িতে ফিরতে না দেখে পরিবারের লোকজন মরিয়মকে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। রাত ৮ টায় বাড়ির পাশের পরিত্যাক্ত ভিটায় মরিয়মের রক্তাক্ত দেহ পরে থাকতে দেখেন তার বাবা মকবুল মৃধা। এসময় শিশুটির মাথা দিয়ে রক্ত বের হচ্ছিল এবং গলায় ওড়না পেচানো মরাদেহ উদ্ধার করে দশমিনা থানা পুলিশ।
পরে ৫ তারিখ সোমবার দশমিনা থানায় মরিয়কে হত্যার ঘটনায় মরিয়মের বাবা মোঃ মকবুল হোসেন মৃধা বাদি হয়ে দশমনিা থানায় অঞ্জাত ৫ জনের বিরুদ্ধে এজাহার দাখিল করেন।