ফের কিশোর গ্যাং এর তান্ডব দেখলো বিশ্ব কলোনী এলাকার বাসিন্দারা। অভিযোগ উঠেছে, আকবর শাহ থানার তালিকাভূক্ত শীর্ষ কিশোর গ্যাং লিডার তুহিনের নেতৃত্বে একদল কিশোরের হামলায় আহত হয়েছে অন্তত চারজন৷ এলাকার সিসিটিভি ফুটেজে পাওয়া গেছে তুহিনের কিশোর গ্যায়ের সেই হামলার লোমহর্ষক চিত্র।
বৃহস্পতিবার (১৬ মে) রাত আনুমানিক পৌনে ১১টায় চট্টগ্রাম নগরীর আকবর শাহ থানাধীন বিশ্ব কলোনী আবাসিক এলাকার জি ব্লক কাঁচা বাজার এলাকায় এই ঘটনা ঘটে৷ এই ঘটনায় আরাফাত (১৮), মোঃ সাকিব (১৮), ইমন (১৮) ও মাহফুজ (১৫) নামের চারজন আহত হয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন৷ তাদের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন দেখা যাচ্ছে৷
কিশোর গ্যাং এর হামলায় আহতদের ভাষ্য ও সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যাচ্ছে আহত আরাফাত, মোঃ সাকিব ও ইমনকে বাজারের দিক দিয়ে বাসায় ফিরছিল৷ এসময় কিশোর গ্যাং লিটার তুহিন বাহিনীর সেকেন্ড ইন কমান্ড শান্ত ও তুষারের নেতৃত্বে একদল কিশোর বিপরীত দিক থেকে এসে আরাফাতকে টেনে হিচড়ে পাশের একটি গলিতে নিয়ে যাচ্ছে৷ এসময় আরাফাতের সাথে থাকা সাকিব, ইমন ও মাহফুজ কিশোর গ্যাংয়ের হাত থেকে আরাফাতকে ছাড়িয়ে নেয়ার চেষ্টা করলে তাদের ওপরও হামলে পড়ে কিশোর গ্যাং এর সদস্যরা৷
৫ মিনিট ৪৫ সেকেন্ডের সেই সিসিটিভি ফুটেজে এক পর্যায়ে প্রকাশ্যে এসে কিশোর গ্যাং লিডার তুহিনকে হামলায় যুক্ত হতে দেখা গেছে৷ আরেকটি সিসিটিভি ফুটেজে হামলার পর কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের নিয়ে তুহিনকে একটি প্রতিষ্ঠানের সামলে গালাগাল করতে দেখা গেছে৷
আহত সাকিব বলেন, আমাদের গ্যাস সিলিন্ডারের দোকান আছে৷ আমি দোকান বন্ধ করে বাসায় ফিরছিলাম। এসময় হঠাৎ কিছু ছেলে এসে আমার বন্ধু আরাফাতকে টেনে পাশের গলিতে নিয়ে মারধর শুরু করেছে দেখে আমি তাকে উদ্ধারে চেষ্টা করি৷ এসময় ওরা আমাকেও মেরে আহত করে এবং আমার পকেটে রাখা দোকানের ৩০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায়৷
জানা গেছে সেই প্রতিষ্ঠানটি আহত সাকিবের বড় ভাইয়ের৷ স্থানীয়রা জানায়, শান্ত ও তুষারই তাদের ছেলেদের নিয়ে আরাফাত সহ অন্যান্যদের ওপর আকষ্মিক হামলা শুরু করে৷ এসময় স্থানীয় শামিম রাব্বি সহ অজ্ঞাত আরো বেশ কিছু ছেলেকে হামলা চালাতে দেখা গেছে৷ পরে তুহিন এসে ২য় দফা চারজন ছেলেকে পিটিয়ে প্রকাশ্য এলাকায় মহড়া দেয়৷ এসময় তুহিনকে এলাকায় লাশ পড়বে বলে চিৎকার করে হুমকি ধমকি দিতে শোনা যায় বলে জানায় প্রত্যক্ষদর্শীরা।
এই বিষয়ে আকবর শাহ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) গোলাম রব্বানী বাংলাদেশ বুলেটিনকে বলেন, "ঘটনার সংবাদ পাওয়ার পর পরই দ্রুত থানার পুলিশ ঘটনাস্থকে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে৷ ইতিমধ্যে হামলায় জড়িত শান্তকে আটক করা হয়েছে। এলাকায় যে বা যারাই আইনশৃংখলা বিরোধী কাজে জড়িত হবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে৷"
একই সাথে ঘটনায় জড়িত অন্যান্যদের ধরতে রাত থেকেই অভিযান চালানো হয়েছে৷ এই সংক্রান্তে মামলা দায়ের হয়েছে বলেও জানান ওসি গোলাম রব্বানী৷