বৃহস্পতিবার ২৬ জুন ২০২৫ ১২ আষাঢ় ১৪৩২
বৃহস্পতিবার ২৬ জুন ২০২৫
বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণ!
উপজেলা চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মামলা থেকে অব্যাহতির প্রতিবাদ
খুলনা প্রতিনিধি
প্রকাশ: সোমবার, ২০ মে, ২০২৪, ৪:১১ PM
চরম নিরাপত্তাহীনতার কারণে এবার বাধ্য হয়েই প্রকাশ্যে আসলেন নির্যাতিত সেই যুবতী। খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান গাজী এজাজ আহমেদের বিরুদ্ধে বিয়ের প্রলোভনে দীর্ঘদিন ধর্ষণের অভিযোগ তুলেছেন। 

শুধু তাই-ই নয়, ক্ষমতা প্রভাব খাটিয়ে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ধর্ষণ মামলা থেকে চুপিসারে অব্যাহিতর প্রতিবাদ জানিয়েছেন তিনি। এ অবস্থায় ভুক্তভোগী নিজে ও মামলাটির বাদী চরম নিরাপত্তাহীনতা থেকে মুক্তি পেতে ও ধর্ষকের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবিতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তিনি। 

সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে খুলনা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এসব অভিযোগ করেন সালমা খাতুন। তিনি ডুমুরিয়ার চেচুড়ী গ্রামের মোঃ আফসার গোলদারের মেয়ে। সংবাদ সম্মেলনে খুলনার বিপুল সংখ্যক মানবাধিকার সংগঠক, নারী নেত্রী ও উন্নয়নকর্মীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়েছে, ডুমুরিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান গাজী এজাজ আহমেদ গত ২৭ জানুয়ারি রাত সাড়ে ৮টার দিকে সালমা খাতুনকে শাহপুর বাজারে অবস্থিত তার কার্যালয়ে ডেকে ধর্ষণ করেন। পরে ঘটনাটি তার খালাতো ভাইকে জানালে তিনি সালমা খাতুনকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তার চিকিৎসার জন্য ওসিসিতে ভর্তি করেন। 

ওসিসিতে থাকাবস্থায় একাধিক গণমাধ্যমে ভুক্তভোগী ঘটনার সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দিয়ে সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন। পরের দিন ওসিসি’র সামনে থেকে ডুমুরিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান এজাজ আহমেদের চাচাতো ভাই রুদাঘরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গাজী তৌহিদুজ্জামান ও গাজী আবদুল হক এবং আল আমিন গাজী, আক্তারুল আলম সুমন, সাদ্দাম গাজী ও মোঃ ইমরান হোসাইনসহ কয়েকজনের মিলে সালমা খাতুনের মাকেসহ তাকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। প্রকাশ্য দিবালোকে ‘ফিম্মি স্টাইল’ এ মানবাধিকার কর্মী, নারী নেত্রী ও শতশত উৎসুক জনতা সে ঘটনা প্রত্যক্ষ করেছিলেন। ঘটনাটি খুলনাসহ সারাদেশে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করে। 

অপহরণের পর তাদের জিম্মিদশা থেকে মুক্তি পেয়ে ধর্ষণের ঘটনায় ৬ মার্চ খুলনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এ উপজেলা চেয়ারম্যানএজাজ আহমেদসহ ৭জনের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও অপহরণ মামলার আবেদন করেন তার খালাতো ভাই মোঃ সোলাম রসুল সরদার। ওইদিন বিকেলে ওই আদালতের বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) মোসাম্মৎ দিলরুবা সুলতানা মামলাটি এজাহার হিসেবে নিতে ডুমুরিয়া থানাকে নির্দেশ দেন। মামলার আসামীরা হল- উপজেলা চেয়ারম্যান গাজী এজাজ আহমেদ, তার চাচাতো ভাই রুদাঘরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গাজী তৌহিদুজ্জামান ও গাজী আবদুল হক এবং আল আমিন গাজী, আক্তারুল আলম সুমন, সাদ্দাম গাজী ও মোঃ ইমরান হোসাইন। এরমধ্যে উপজেলা চেয়ারম্যান গাজী এজাজ আহমেদ ধর্ষণ ও অন্যরা অপহরণ মামলার আসামী। এমামলায় অজ্ঞাত আরও ১০ থেকে ১৫ জনকে আসামী করা হয়।

এরমধ্যে উপজেলা চেয়ারম্যান এজাজ আহমেদ তার কাছে যেয়ে কোরআন শপথ করে একসপ্তাহের মধ্যে তাকে বিয়ে করে ঘরে তোলার প্রতিশ্রুতি দিয়ে মামলা তুলে নিতে বলেন। গত ৮ মার্চ সন্ধ্যায় খুলনার জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট-২ এর বিচারক রনক জাহানের আদালতে জবানবন্দি দেন সালমা খাতুন। পরে কিভাবে মামলা থেকে অব্যাহতি পেয়ে গেল সবাই, তা জানেন না নির্যাতিত যুবতী।

এখন অসহায় হয়ে খুলনার মানবাধিকার কর্মী, নারী নেত্রী ও উন্নয়ন কর্মীদের সহযোগিতায় সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে দেশবাসীর সামনে প্রকৃত ঘটনা উপস্থাপন করে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন মানবাধিকার কর্মী এ্যাড. মোমিনুল ইসলাম, নাগরিক সমাজ খুলনার সদস্য সচিব এ্যাড. বাবুল হাওলাদার, এ্যাড. শামীমা সুলতানা শীলু, সিলভি হারুন, এড. শাহারা ইরানী পিয়া প্রমুখ।
« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক:
মো. আশরাফ আলী
কর্তৃক এইচবি টাওয়ার (লেভেল ৫), রোড-২৩, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২।
মোবাইল : ০১৪০৪-৪০৮০৫২, ০১৪০৪-৪০৮০৫৫, ই-মেইল : thebdbulletin@gmail.com.
কপিরাইট © বাংলাদেশ বুলেটিন সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত