বৃহস্পতিবার ১৫ মে ২০২৫ ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
বৃহস্পতিবার ১৫ মে ২০২৫
ঘূর্ণিঝড় রেমালের তান্ডবে দাকোপে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি
দাকোপ (খুলনা) প্রতিনিধি
প্রকাশ: মঙ্গলবার, ২৮ মে, ২০২৪, ৫:১০ PM
ঘূর্ণিঝড় রেমালের তান্ডবে খুলনার দাকোপে বিভিন্ন নদ-নদীতে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পাওয়ায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৩১ নম্বর পোল্ডারের পৃথক ৭টি স্থানে ওয়াপদা বেড়িবাঁধ ভেঙে ব্যাপক এলাকা প্লাবিত হয়েছে।

ভাঙন কবলিত ৫টি স্থানে বাঁধ আটকাতে সক্ষম হলেও বাকি দুইটি স্থানে বাঁধের কাজ চলমান রয়েছে। বাঁধ আটকালেও ওই সব স্থানগুলো রয়েছে মারাত্মক ঝুঁকিতে। ফলে এলাকার হাজারো মানুষ দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। এদিকে ভাঙন কবলিত স্থানগুলো পরিদর্শন করছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য ননী গোপাল মন্ডলসহ আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থীরা।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, গত ২৬ ও ২৭ মে ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে বিভিন্ন নদ-নদীতে পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পায়। ফলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৩১ নম্বর পোল্ডারের  উপজেলার কামিনীবাসিয়া ভোলা মেম্বরের বাড়ির কাছে ৮০ ফুট, কামিনীবাসিয়া পুরাতন পুলিশ ক্যাম্পের পাশে ৬০ ফুট, বটবুনিয়া বাজারের পশ্চিম পাশে ২০ ফুট ও ৫০ ফুট, পানখালি ফেরিঘাটের পূর্ব পাশে সাইক্লোন সেন্টারে কাছে ২০ ফুট, খলিশা স্লুইচ গেট সংলগ্ন ৩০ ফুট ও লক্ষ্মীখোলা খেযাঘাটের সামনে ২০ ফুট পৃথক ভাবে ওয়াপদা বেড়িবাঁধ ভেঙে যায়। এছাড়া আরো কয়েকটি স্থানে বেড়িবাঁধের উপর দিয়ে পানি উপচে পড়ে বাঁধ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এতে কামিনীবাসিয়া, বটবুনিয়া, পানখালী, খলিশা এলাকা প্লাবিত হয়ে অসংখ্য মৎস্য ঘের ও পুকুর তলিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকার মাছ ভেসে যায় এবং ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্থ হয়। 

বটবুনিয়া এলকার প্রনব কবিরাজ এ প্রতিবেদককে জানান, ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বটবুনিয়া বাজারের পাশে পৃথক দুটি স্থান ভেঙে এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এতে অনেকের পুকুর ডুবে লক্ষ লক্ষ টাকার মাছ ভেসে যায়। এছাড়া বাড়ি ঘরেরও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এমনকি গবাদিপশু ও বিলে চরাতে পারছে না।

বর্তমানে একটি বাঁধ আটকানো হয়েছে এবং অপরটির কাজ চলমান রয়েছে। কিন্তু এখনো ঝুঁকি মুক্ত হয়নি আমরা। টেকসই বেড়িবাঁধ না দিতে পারলে আবারো প্লাবিত হওয়ার আশংকা বিরাজমান। একই অভিমত ব্যাক্ত করেন, কামিনীবাসিয়া এলাকার আছাবুর সরদার ও পানখালী এলাকার ফাল্গুনী হালদার।

পানখালি ইউপি চেয়ারম্যান শেখ সাব্বির আহমেদ বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহযোগিতায় পানখালী ও লক্ষ্মীখোলা এলাকায় স্থানীয়দের নিয়ে বাঁধ মেরামত করতে সক্ষম হয়েছি। এছাড়া খোনা মোল্যা বাড়ির সামনে কিছুটা ওয়াপদা রাস্তা ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে। 

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম জানান, রেমালের প্রভাবে বাঁধ ভেঙে এলাকায় লবণ পানি ঢুকে গোটা উপজেলায় ১ কোটি ৩৭ লক্ষ টাকার কৃষি ফসলের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা রঞ্জিৎ কুমার বলেন, ঝড়ের প্রভাবে ওয়াপদা বেড়িবাঁধ ভেঙে ১৫৬০টি ঘের ও পুকুর তলিয়ে মাছ ভেসে গেছে। এতে ৩৩ কোটি ৮৫ লক্ষ ৫০ হাজার টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। 

এবিষয় উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা শেখ আব্দুল কাদের জানান, ঝড়ের প্রভাবে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ৮৫০২টি ঘরবাড়ি সম্পূর্ণ ভাবে বিধ্বস্ত হয়েছে এবং ১৬৯০৫টি ঘরবাড়ি আংশিক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এছাড়া ৬ কিঃমিঃ ওয়াপদা বেড়িবাঁধ আংশিক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। তাছাড়া ২৫৪০৭টি পরিবারের ১ লক্ষ ২২ হাজার ৩০২ জন মানুষ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। 

এব্যাপারে খুলনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফুল আলম বলেন, ভেঙে যাওয়া সবগুলা স্থানে বাঁধ আটনো হয়েছে। তবে কামিনীবসিয়া এলকায় একটি বাঁধ আটকানোর পর পুনরায় আবার নদীর জোয়ারের পানির চাপে ভেঙে গেছে। পরবর্তী ভাটায় আবার আটকানোর চেষ্টা করা হবে।  
   



« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক:
মো. আশরাফ আলী
কর্তৃক এইচবি টাওয়ার (লেভেল ৫), রোড-২৩, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২।
মোবাইল : ০১৪০৪-৪০৮০৫২, ০১৪০৪-৪০৮০৫৫, ই-মেইল : thebdbulletin@gmail.com.
কপিরাইট © বাংলাদেশ বুলেটিন সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত