বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার বনানী এলাকায় একটি আবাসিক হোটেলে স্ত্রী ও শিশুপুত্রকে গলা কেটে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত স্বামী আজিজুল হক (২৪) কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
গতকাল শনিবার দিবাগত রাতের যেকোন সময় আবাসিক হোটেল কক্ষে নির্মম এ হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটেছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
অভিযুক্ত আজিজুল হক বগুড়ার ধুনট উপজেলার হেউটনগর গ্রামের হামিদুর রহমানের ছেলে। তিনি সেনা সদস্য বলে জানা গেছে।
হোটেল কর্তৃপক্ষ জানায়, স্ত্রী আশা মনি (২০) ও শিশুপুত্র আব্দুল্লাহ আল রাফিকে (০১) নিয়ে তিন দিন হোটেলে থাকবেন এমন কথা জানিয়ে শনিবার সন্ধ্যায় বনানীস্থ শুভেচ্ছা আবাসিক হোটেলের ৩০১ নম্বর কক্ষে উঠেন আজিজুল হক। রাত ১০টায় স্ত্রী-সন্তানকে রেখে বাইরে যান আজিজুল। পরের দিন আজ রোববার (২ জুন) সকাল ৯টায় হোটেলে এসে ম্যানেজারকে বিল পরিশোধ করে সটকে পড়ার চেষ্টা করেন তিনি।
স্ত্রী-সন্তানকে রুমে রেখে চলে যাওয়ার চেষ্টা করলে হোটেল কর্তৃপক্ষের সন্দেহ হয়। আজিজুলকে আটকে রেখে পুলিশকে সংবাদ দেয়া হয়। পুলিশ এসে উক্ত কক্ষ থেকে আজ রবিবার দুপুরে স্ত্রী সন্তানের গলা কাটা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এরপর জোড়া খুনের বিষয়টি চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে।
নিহত আশামনির বাবা বগুড়া শহরের নারুলী পূর্বপাড়া এলাকার বাসিন্দা আশাদুল জানিয়েছেন, গত বৃহস্পতিবার মেয়ে জামাই তার বাড়িতে বেড়াতে যায়। সেখান থেকে স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে শনিবার বিকেলে নিজ বাড়ির উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয় আজিজুল। এরপর রাত ১০টার দিকে আজিজুল তার শ্বশুরকে ফোন করে জানায়, ‘শরীর খারাপ লাগায় আশামনিকে বাড়িতে পঠিয়ে দিয়ে সে ডাক্তারের কাছে গিয়েছিল।’ তখন তিনি বাড়িতে ফোন করে জানতে পারেন তার মেয়ে আশামনি বাড়িতে যায়নি। সারারাত চলে খোঁজাখুঁজি। আজ রোববার সকাল ১১টার দিকে লোকমুখে জানতে পারেন মেয়ে আশামনি ও নাতি রাফিকে বনানীস্থ একটি আবাসিক হোটেলে জবাই করে হত্যা করা হয়েছে।
বগুড়া সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সরাফত ইসলাম, শাজাহানপুর থানার ওসি শহিদুল ইসলামসহ পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ দুটি উদ্ধার করে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ। জোড়া খুনের ঘটনায় শাহজাহানপুর থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।