গুরুদাসপুরে চিরকুট লিখে বৈদ্যুতিক মিটার চুরি করেছে দুর্বৃত্তরা। এ সময় তারা যোগাযোগের জন্য চিরকুটে লিখে রেখে তাদের একটি মোবাইল নম্বর রেখে যায়!
ওই মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করলে বিকাশে অথবা নগদে মিটার প্রতি চাওয়া হয় টাকা। চিরকুট লেখা নম্বরটি সাংবাদিকদের জানালে ও থানায় এ বিষয়ে অভিযোগ দিলে ফেরত দেওয়া হবে না তাদের মিটার। নতুন মিটার লাগালে পড়ে সেটা পুড়িয়ে দেওয়া হবে বলেও হুমকি প্রদান করা হয়।
বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) গভীর রাতে উপজেলা পৌরসদরের গারিষাপাড়া, গোপালের মোড়সহ বেশ কয়েকটি মহল্লায় প্রায় ৩৬টি বৈদুতিক মিটার চুরি হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এভাবে একরাতে অনেকগুলো মিটার চুরির ঘটনায় জনমনে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলা পৌরসদরের গারিষাপাড়া, গোপালের মোড় এলাকার চালকল মালিক ব্যবসায়ীর ১৩টি মিটার চুরি হওয়ার দৃশ্য। চুরি হওয়া মিটারের জায়গায় রেখে যাওয়া পলিথিন মোড়ানো একটি চিরকুট।
ভুক্তভোগী চালকল মালিক জানান, মিটার চুরির ঘটনা এর আগেও ঘটেছে তার এলাকায়। তবে তার মিটার এই প্রথম চুরি হয়েছে। শুক্রবার সকালে চাতালে গিয়ে দেখেন মিটার নেই। তবে মিটারের নিচে পলিথিনে মুড়িয়ে থাকা একটি চিরকুট দেখতে পান। চিরকুটের ভেতরে একটি কাগজে লেখা ছিল একটি মোবাইল নম্বর। সেই নম্বরে যোগাযোগ করলে বন্ধ পাওয়া যায়।
এ চুরির বিষয়টি জানাজানি হওয়ায় পর তিনি জানতে পারেন তার শুধু একার নয়, আশপাশের এলাকা দিয়ে প্রায় ৩৬টি মিটার চুরি হয়েছে রাতে। এ ঘটনায় পল্লী বিদ্যুত অফিসে খবর দিলে তারা গিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
চালকল মালিক মো. রবিউল করিম জানান, মিটার চুরির ঘটনা নতুন নয়। দীর্ঘদিন ধরে চাতাল ব্যবসায়ী, মিল কারখানা ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে মিটার চুরি করে বিকাশে ৪-৫ হাজার টাকা নিয়ে মিটার ফেরত দেয়। তার মিটারটি এর আগেও একবার চুরি হয়েছিল। মিটারের নিচে রেখে যাওয়া নম্বরে কল দিলে বিকাশ নম্বর দেয়।
সেই নম্বরে পূর্বের ঘটনায় ৪ হাজার টাকা পাঠিয়েছিলেন তিনি। তারপর চোরের দেওয়া তথ্য মতে নদীর তীরবর্তী স্থান থেকে মিটার সংগ্রহ করেছিলেন তিনি। প্রশাসনিকভাবেও এর কোনো প্রতিকার না পেয়ে জিম্মি হয়ে টাকা দিয়ে মিটার ফেরত নিতে হয়।
নাটোর পল্লী বিদ্যুত সমিতি-২ (গুরুদাসপুর জোনাল অফিস) এর ডিজিএম মো. মোমিনুর রহমান বিশ্বাস বলেন, তথ্য অনুযায়ী গোপালের মোড় থেকে ১৩টি মিটার চুরি হয়েছে। তবে এর বেশি চুরি হয়েছে কিনা এটা এখনো নিশ্চিত হতে পারিনি। ক্ষতিগ্রস্ত সকল গ্রাহককে থানা পুলিশের সহযোগিতা নেওয়ার জন্য পরামর্শ প্রদান করা হয়েছে।