লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় বসত ভিটেসহ সব ফেলে রেখে ভারতীয় সীমান্তে অবস্থান করছেন হিন্দুসম্প্রদায়ের সংখ্যালঘুরা।
গতকাল শুক্রবার সকাল থেকে উপজেলার গোতামারী সীমান্তে জড়ো হতে থাকে হিন্দুসম্প্রদায়ের লোকজন। পরে খবর পেয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন ভারত ও বাংলাদেশের আইন শৃংখলা বাহিনী।
জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করার পরপরেই সারা দেশের ন্যায় লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় সংখ্যালঘুদের বাড়িঘর ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন দূর্বৃত্তরা।
বিএনপি জামাতের নেতাকর্মী ও হিন্দুসম্প্রদায়ের লোকজন রাত জেগে পাহাড়া দিলেও প্রতিদিন কোথাও না কোথাও সংখ্যালঘুর বাড়িঘরে হামলা,ভাংচুর,লুটপাট ও অগ্নিসংযোক করছে দূর্বৃত্তরা। আর সেই কারণে শুক্রবার সীমান্ত দিয়ে ভারত চলে যাওয়ার চেষ্টা করেন হাজার খানেক সংখ্যালঘু হিন্দুসম্প্রদায়ের লোকজন।
সরেজমিনে শুক্রবার বিকেলে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার গোতামারী সীমান্তে ভারতীয় কাঁটাতার এলাকায় ভীর জমিয়েছেন সংখ্যালঘুরা। তারা কাঁটাতারের বেড়া অতিক্রম করে ভারতে প্রবেশের চেষ্টা করলে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) বাধা দেন।
এরপরেও ভারতে যেতে কাঁটাতারের পাশে অবস্থান করেন সংখ্যালঘুরা। এদিকে সংখ্যালঘুদের ঘরে ফেরাতে চেষ্টা করেন বাংলাদেশের আইনশৃঙ্কলা বহিনী ও বিএনপি জামাতের নেতারা।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্ল্যাহ ও পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে হিন্দু সম্প্রাদায়ের লোকজনের সাথে কথা বলেন।
এ সময় হিন্দুসম্প্রদায়ের এক যুবক মানিক চন্দ্র বলেন, হিন্দুরা ভারতে আশ্রয় নিতে সীমান্তে জমায়েত হয়েছি। কিন্ত আমরা যেতে পারছিনা। প্রতিনিয়ত আমাদের উপর হামলা করছে।কেন আমাদেরকে রাত জেগে পাহাড়া দিতে হবে। তাই আমরা ভারত চলে যেতে চাই।
এ সময় সুবল চন্দ্র নামের অপর এক সংখ্যালঘু বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করার পর থেকে দূর্বৃত্তরা দেশের বিভিন্ন স্থানে হিন্দুসম্প্রদায়ের লোকজনের বাড়িতে হামলা, ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট করছে। তাই আমরা সব ফেলে রেখে বাধ্য হয়ে ভারত চলে যাওয়ার চেষ্টা করছি। কিন্ত আমাদেরকে ভারত যেতে দেয়া হচ্ছে না।আমরা হিন্দু বলে না কি আওয়ামী লীগ করি।
এসময়ে বিএনপির হাতীবান্ধা -পাটগ্রাম আসনের এমপি প্রার্থী ব্যারিষ্টার হাসান রাজিব প্রধান হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকদের সাথে দেখা করতে গিয়ে বলেন,আমরা আপনাদের সাথে আছি এবং থাকবো।আপনাদের জানমালের নিরাপত্তা দিবো।আপনারা ভীতু হবেনা।আগে যেমন হিন্দু মুসলিম ভাই ভাই হয়ে একসাথে বাস করছিলাম ভবিষ্যতেও এক সাথে থাকবো।
জামায়াতে ইসলামী এমপি প্রার্থী আনোয়ারুল ইসলাম রাজু বলেন,আমরা হিন্দু মুসলিম ভাই ভাই। আমরা একে ওপরে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে নতুন একটা দেশ গড়তে চাই।আমাদের উপর বিশ্বাস রাখেন আপনাদের কেউ ক্ষতি করতে পারবেনা।
এবিষয় হাতীবান্ধা থানা ওসি(তদন্ত) নির্মল চন্দ্র মোহন্ত বলেন,সিমাস্তে গুজব ছড়িয়েছিল কে বা কাহা ওদিক দিয়ে না কি ভারত যাওয়া যাবে। তারা ওখানে জড়ো হয়েছিল।পরে বিজিবি তাদেরকে সরিয়ে নিয়ে আসে।
এ বিষয়ে হাতীবান্ধা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আতিকুল ইসলাম বলেন, আমি খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। তবে বিষয়টি বিজিবি দেখছেন। সেখানে আসা লোকজনদের সাথে তারা কথা বলতেছেন। এছাড়া সীমান্তে আসা লোকজনও সেখান থেকে ফিরে আসতে শুরু করেছে।