বুধবার ২৫ জুন ২০২৫ ১১ আষাঢ় ১৪৩২
বুধবার ২৫ জুন ২০২৫
নালিতাবাড়ীতে অবৈধ বালু উত্তোলন
নালিতাবাড়ী (শেরপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ: বুধবার, ২১ আগস্ট, ২০২৪, ২:৪৫ PM
শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার ভারত সংলগ্ন ভোগাই ও চেল্লাখালী নদী থেকে দৈনিক অন্তত অর্ধকোটি টাকার বালু লোপাট হচ্ছে।

উপজেলার পোড়াগাঁও ইউনিয়নে চেল্লাখালী নদী, নয়াবিল ও রামচন্দ্রকুড়া ইউনিয়নে প্রবাহিত হয়েছে ভোগাই নদী। ভোগাই নদীর পার ভেঙে ও গহীন গর্ত করে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ফলে হুমকিতে পড়েছে জেলার একমাত্র নাকুগাঁও স্থলবন্দর ও সীমান্ত সড়কে নির্মিত ভোগাই ব্রিজ। উপজেলা প্রশাসন প্রায়ই মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করলেও পর দিনই নদী থেকে আবারো বালু উত্তোলন শুরু করে ব্যবসায়ীরা। 

জানা গেছে, জেলা প্রশাসন থেকে চলমান বাংলা সনে ১ বছরের জন্য নালিতাবাড়ীর ভোগাই নদীর ৫টি মৌজায় মোট ৯ একর ৮২ শতাংশ বালুমহাল ইজারা দেয়া হয়। ৯৬ লাখ ৮৬ হাজার টাকায় কালাকুমা, হাতিপাগার, ফুলপুর নয়াবিল ও মন্ডলিয়াপাড়ায় বালুমহালটি ইজারা নেয় জিলানী এন্টারপ্রাইজ নামে এক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কিন্তু ইজারা-বহির্ভূত এলাকা নাকুগাঁও, কালাকুমা ও তারানী মৌজার নিষিদ্ধ সীমানা (জিরো পয়েন্ট) থেকে অনেক ব্যবসায়ী অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে আসছে। 

বর্তমানে ওই এলাকায় কমপক্ষে ৯০থেকে ১শ টি শ্যালো ইঞ্জিন চালিত মিনি ড্রেজার বসানো হয়েছে। নদীর পাড় ভেঙে নিয়ম- বহির্ভূতভাবে গহীন গর্ত করে বালু তোলা হচ্ছে। 

ফলে নদীর পশ্চিম পাড়ে থাকা নাকুগাঁও স্থলবন্দর, পুলিশের ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট ও নাকুগাঁও কাস্টমস কর্মকর্তার কার্যালয়সহ সরকারি বিভিন্ন স্থাপনা হুমকিতে পড়েছে। সেসঙ্গে হুমকিতে রয়েছে নদী পাড়ে বসবাসকারীরা। এদিকে চেল্লাখালী নদীটি চলতি বাংলা সনের জন্য ইজারা দেওয়া হয়নি।

ওই নদীর বুরুঙ্গা ও খলচান্দা কোচপাড়া গ্রামের নিষিদ্ধ সীমানা (জিরো পয়েন্ট) থেকে দিবা-রাত্রী বালু উত্তোলন করে রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে পাচার করছে একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী। ওই নদীর উত্তোলিত বালু বারমারী বাজার এলাকার বিজিবি ক্যাম্প সংলগ্ন স্থানে স্টক করে ভুয়া চালানের মাধ্যমে ট্রলি, লরি ও ট্রাকভর্তি করে বিক্রি করছে অবৈধ ব্যবসায়ীরা। 

ভুক্তভোগীরা জানান, দ্রুত এসবের বিরুদ্ধে কঠোর ব‍্যবস্থা নেয়া হোক। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বালু ব্যবসায়ীরা জানান, প্রতিটি ড্রেজিং মেশিনের সেটে দিনে-রাতে বালু উত্তোলন করলে স্থানভেদে ২-৩ ট্রাক বালু তোলা যায়। 

বর্তমানে ১ ট্রাক বালুর দাম ট্রাকের সাইজভেদে ৩০-৪০ হাজার টাকা বিক্রি হচ্ছে। সে হিসেবে প্রতিটি ড্রেজিং সাইটে প্রতিদিন গড়ে অন্তত ১ থেকে দেড় লাখ টাকার বালু উত্তোলন তোলা হচ্ছে। আর এ হিসেবে পুরো নিষিদ্ধ এলাকা থেকে দৈনিক লোপাট হচ্ছে কমপক্ষে অর্ধকোটি টাকার বালু। যা অন্যান্য সময়ে কয়েক মাসের সমান।

শুধু তাই নয়, এসব বালু বিক্রির পাশাপাশি আগের চেয়ে দ্বিগুণ হারে নিজেদের ছাপানো রসিদ বইয়ের মাধ্যমে তোলা হচ্ছে রয়েলিটির টাকাও।

এব‍্যাপারে নালিতাবাড়ীর ইউএনও মাসুদ রানা সাংবাদিকদের বলেন, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ইজারা-বহির্ভূত স্থানের বাইরে থেকে বালু উত্তোলন করা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা কামনা করছি। এরপরও যারা অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের সঙ্গে জড়িত থাকবেন তাদের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে আইনগত ব‍্যবস্থা নেয়া হবে। 

এবিষয়ে শেরপুরের জেলা প্রশাসক আব্দুল্লাহ আল খায়রুম সাংবাদিকদের বলেন, ইজারা-বহির্ভূত স্থান ও ইজারাবিহীন নদী থেকে বালু উত্তোলন বন্ধে নালিতাবাড়ীর ইউএনওকে নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।
« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক:
মো. আশরাফ আলী
কর্তৃক এইচবি টাওয়ার (লেভেল ৫), রোড-২৩, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২।
মোবাইল : ০১৪০৪-৪০৮০৫২, ০১৪০৪-৪০৮০৫৫, ই-মেইল : thebdbulletin@gmail.com.
কপিরাইট © বাংলাদেশ বুলেটিন সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত