বিজিবি, সেনাবাহিনী, পুলিশ ও ছাত্রদলের সহযোগিতায় দায়িত্ব নেওয়ার আড়াই ঘণ্টা পর শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের মুখে পদত্যাগ করেছেন রাজশাহী কলেজের নবনিযুক্ত অধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আনারুল হক প্রাং।
সাধারণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) দুপুর ২টার দিকে পদত্যাগপত্রে সই করে কলেজের উপাধ্যক্ষের কাছে জমা দেন তিনি।
এর আগে, পৌনে ১২টার দিকে সেনাবাহিনী, পুলিশ, বিজিবি ও ছাত্রদলের সহযোগিতায় প্রশাসন ভবনে প্রবেশ করে দায়িত্ব নেন নবনিযুক্ত অধ্যক্ষ।
জানা যায়, দুপুর পৌনে ১২টার দিকে পুলিশ, সেনাবাহিনী ও বিজিবিসহ নবনিযুক্ত অধ্যক্ষ ক্যাম্পাসে আসেন। পরে শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ক্যাম্পাস ছাড়ে।
এরপর ছাত্রদলের ১৫-২০ জন নেতাকর্মী প্রশাসন ভবনের সামনে অবস্থান নেওয়া শিক্ষার্থীদের ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেন। এসময় নবনিযুক্ত অধ্যক্ষ কক্ষে গিয়ে দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
খবর পেয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। দলে দলে প্রশাসন ভবনের সামনে এসে তারা একত্রিত হন। এসময় ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা চলে যান। পরে শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পদত্যাগ করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিরাপত্তায় ক্যাম্পাস ছাড়েন অধ্যাপক ড. আনারুল হক।
সদ্য বিদায়ী অধ্যক্ষ অধ্যাপক আব্দুল খালেকের পদত্যাগের পর গত ৯ সেপ্টেম্বর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে নতুন অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ পান অধ্যাপক ড. আনারুল হক। এরপর থেকে কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীরা এর বিরোধিতা করে অধ্যক্ষের যোগদান ঠেকাতে আন্দোলন করতে থাকেন।
নবনিযুক্ত অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, রাজশাহী শিক্ষাবোর্ডে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে বোর্ডের ১৮ লাখ টাকা আত্মসাতের ঘটনায় ২০২০ সালে তিনটি মামলা করে দুদক। দুদকের তদন্ত প্রতিবেদনেও এসব তথ্য উঠে আসে। আত্মসাতের সমপরিমাণ টাকা বোর্ডের ফান্ডে জমা দেওয়ার মাধ্যমে আসামিরা মামলা থেকে অব্যাহতি পান।
এত কিছুর পরও শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান হওয়ার তদবির চালাতে থাকেন অধ্যাপক আনারুল হক। পরে তৎকালীন মেয়র লিটনের সুপারিশে কলেজের অধ্যক্ষের পদ পেয়ে যান তিনি। তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ড. আনারুল হক।
ছাত্রদলের কলেজ শাখার আহ্বায়ক আবির বলেন, এ আন্দোলনে আমরা প্রশাসন ভবনে তালা দেওয়ার আগে পর্যন্ত ছিলাম। এখন আমরা নবনিযুক্ত অধ্যক্ষকের যোগদানের পক্ষে, তিনি যে দলেরই হোক না কেন। কারণ অধ্যক্ষ না থাকায় শিক্ষার্থী-শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা দুর্ভোগের সম্মুখীন হচ্ছেন।
সমন্বয়ক মহুয়া জান্নাত মৌ বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা যোগ্য অধ্যক্ষ চান। খুনি হাসিনার কোনো দোসরকে আমাদের পবিত্র ক্যাম্পাসে জায়গা দেওয়া হবে না। এ কারণেই শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করেছেন। শিক্ষার্থীরা যখন আন্দোলন করছেন হাসিনার দোসরদের বিরুদ্ধে, সেসময় ছাত্রদলের কতিপয় নেতা সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। এটা কখনোই কাম্য নয়।’