ঈশ্বরদীতে আন্তঃউপজেলা ক্রীড়া প্রতিযোগিতা কাবাডি ফাইনাল খেলায় দুই স্কুলের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুবীর কুমার দাসসহ আটজন আহত হয়েছেন।
দুপুরে ১টা থেকে থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত উপজেলা চত্বরে দফায় দফায় সংঘর্ষ, হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। আহতরা হলেন সাড়া ঝাউদিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র তৌফিক ইসলাম শুভ, লাইব্রেরিয়ান আবুল কালাম, রিয়াজুদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র সালমান সরদার, দর্শনার্থীদের মধ্যে ঈশ্বরদী সরকারি কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র নাঈম ইসলামসহ আরো চারজন। তাদের নাম-পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
জানা গেছে, সংঘর্ষের সময় শিশির নামের এক বহিরাগতকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে পুলিশ। এ সময় তার থেকে একটি ছুড়ি জব্দ করে পুলিশ। শিশিরের বাড়ি ঈশ্বরদীর দাশুড়িয়া পিয়ারাপুর গ্রামে। তিনি সাড়া ঝাউদিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থদুপুরে উপজেলা মাঠ প্রাঙ্গণে আন্তঃউপজেলা ক্রীড়া প্রতিযোগিতা কাবাডি ফাইনাল খেলা চলছিল। ফাইনালে দাশুড়িয়ার রিয়াজুদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয় ও সাড়া ঝাউদিয়া উচ্চ বিদ্যালয় অংশ নেয়। খেলার একপর্যায়ে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে বাগবিতণ্ডা ও হাতাহাতি শুরু হয়। সাড়া ঝাউদিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের লাইব্রেরিয়ান আবুল কালাম হামলার শিকার হন। এরপর লাইব্রেরিয়ান আবুল কালাম ছাত্রীদের ডেকে নিয়ে এসে উপজেলা পরিষদের সামনে বিক্ষোভ শুরু করেন।
পরে ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করলে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে বহিরাগতরা মিলে পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে রিয়াজুদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়। এ সময় ইউএনওর কার্যালয়, পিআইও অফিসসহ উপজেলার বিভিন্ন দফতরের চেয়ার টেবিল ভাঙচুর করে। পরে সেনাবাহিনী ও পুলিশের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় ইউএনওসহ আটজন আহত হন। পরে তাদের প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের একাডেমিক সুপারভাইজার আরিফুল ইসলাম জানান, কাবাডির ফাইনাল খেলার শেষ সময়ে সাঁড়া ঝাউদিয়ার খেলোয়াড় তৌফিক কাবাডি খেলায় ‘দম’ নেয়ায় রিয়াজ উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের খেলোয়াড়রা তৌফিককে ঝাপটে ধরলে দর্শক সারি থেকে চিল্লাচিল্লি ও মারামারি বেধে যায়। এরপর হামলা ও মারামারির ঘটনা ঘটে।
ঈশ্বরদী থানার ওসি শহিদুল ইসলাম শহীদ বলেন, খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। কিন্তু শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বহিরাগতরা যুক্ত হওয়ায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বেগ পেতে হয়। পরে সেনাবাহিনী এলে পরিস্থিতি শান্ত হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য একজনকে থানা হেফাজতে রাখা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ইউএনও সুবীর কুমার দাস বলেন, অতীতে স্কুল মাঠে ক্রীড়া প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হলে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটতো। যে কারণে এ বছর পুলিশের উপস্থিতিতে উপজেলা মাঠ প্রাঙ্গণে ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। কিন্তু তারপরও অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটল। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক।