মাছের প্রজেক্ট নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় ছাত্র আন্দোলনে নিহতের ঘটনায় হত্যা মামলায় আসামি হলেন দাউদকান্দির বিএনপি নেতা হারুনুর রশিদ ও ছাত্রদল কর্মী ফয়সালসহ ৪ থেকে ৫ জন।
আওয়ামী লীগ সরকার পতনের দিন গত ৫ আগস্ট নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থানা এলাকায় গুলিতে নিহত হন হাফেজ সোলায়মান (১৯) নামে এক ছাত্র।
এ ঘটনায় ২২ আগস্ট সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় শামীম কবির নামে একজন বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা করেন। মামলায় তিনি নিজেকে নিহত সোলায়মানের বোনজামাই দাবি করেন। ঘটনা ঢাকার হলেও মামলায় কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার ৫ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
শনিবার (৯ নভেম্বর) সকাল ১০টায় দাউদকান্দির গৌরীপুর বাজারে সংবাদ সম্মেলন করে এমন তথ্য দেন ওই মামলায় দাউদকান্দির আসামি ও তাদের স্বজনরা।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বিএনপি নেতা হারুনুর রশিদ। পাশে বসা ছিলেন কুমিল্লা উত্তর জেলা জাসাসের যুগ্ম আহবায়ক মো. জিন্নাত আলী জিন্নাহ, মামলার আসামি ছাত্রদলকর্মী ফয়সাল আহম্মেদের পিতা জব্বার আলী।
মামলায় ৫১ জনের নাম উল্লেখের পাশাপাশি অজ্ঞাতনামা আরো ৩০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, আসাদুজ্জামান খান কামাল, দিপু মনি, আনিসুল হক, জুনায়েদ আহমেদ পলক, শামীম ওসমানকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার ৩৬ নং আসামি হারুনুর রশিদ বলেন, আমি পেশায় একজন দলিল লেখক এবং দাউদকান্দি উপজেলা বিএনপির সাবেক সদস্য। উদ্দেশ্যমূলকভাবে হয়রানির জন্য আমাকেসহ আমার এলাকার কয়েকজনকে নারায়ণগঞ্জের মামলায় আসামি করা হয়েছে। মামলার বাদীকে আমরা চিনি না, বাদীও আমাদেরকে চেনে না।
হারুনুর রশিদ জানান, আমাদের গ্রামের একটি মাছের প্রজেক্ট নিয়ে বিগত আওয়ামী সরকারের লুটেরা বাহিনীর সঙ্গে দ্বন্দ্ব ছিল। মাওলানা ইসমাইল নামে এক ব্যক্তি প্রজেক্টটি জোর করে দখলে নিয়ে চার বছর জমির মালিদের পোষাণির টাকা দেয়নি। ওইসময় আমিসহ গ্রামবাসী এর প্রতিবাদ করেছিলাম। আর ইসমাইলের বাড়ি আমাদের এলাকায় হলেও সে পরিবার নিয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা এলাকায় থাকে। সে-ই হয়রানি করার জন্য তার পরিচিত লোক দিয়ে আমাদেরকে মামলায় জড়িয়েছে বলে জানতে পেরেছি। আবার শুনছি বাদী বিভিন্ন আসামিদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে আদালতে আপোষ করছে। আমরা সঠিক তদন্তের মাধ্যমে হয়রানীমূলক মিথ্যা মামলা থেকে আমাদের অব্যাহতি এবং ষড়যন্ত্রকারীকে আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।
মামলার বাদী শামীম কবিরের মুঠোফোনে একাধিক বার চেষ্টা করেও সংযোগ পাওয়া যায়নি।
দাউদকান্দি উপজেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য সচিব ভিপি জাহাঙ্গীর আলম বলেন, হারুনুর রশিদের বড় ভাই উপজেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটিতে আছেন। তাদের পুরো পরিবারই বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি আল মামুন বলেন, মামলা নেয়ার ক্ষেত্রে আমাদের কিছুই করার নাই, বাদী স্বাক্ষরিত এজাহার মতে আমরা মামলা গ্রহণ করি। তদন্তের ক্ষেত্রে আমরা অবশ্যই দেখব কোনো নিরপরাধ এবং বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের স্বপক্ষে থাকা কোনো ব্যক্তি যেন হয়রানির না হয়।