রবিবার ২২ জুন ২০২৫ ৮ আষাঢ় ১৪৩২
রবিবার ২২ জুন ২০২৫
কেন এমন নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার শিশু মুনতাহা?
সিলেট প্রতিনিধি
প্রকাশ: সোমবার, ১১ নভেম্বর, ২০২৪, ৩:৪০ PM আপডেট: ১১.১১.২০২৪ ৮:০৫ PM
মুনতাহার হাসিমাখা মুখের ছবি যার দৃষ্টিতে পড়েছে তাকেই থমকে দীর্ঘ নিশ্বাস নিতে হয়েছে। শিশুটিকে জীবিত খুঁজে পেতে তার জন্য মানুষ প্রার্থনা করেছে। কেউ কেউ ঘোষণা করেছে পুরস্কারও।

কিন্তু নিখোঁজের ছয় দিন পর সবার আকুতি মিথ্যা করে দিয়ে শেষ পর্যন্ত মুনতাহার মরদেহ খুঁজে পাওয়া গেছে। গত শনিবার দিবাগত রাত ৪টার দিকে শিশু মুনতাহার মরদেহ খুঁজে পাওয়া যায় তাদের বাড়ির পাশের ডোবায়।

মুনতাহার করুণ এই পরিণতি মেনে নিতে পারছেন না কেউ। মেয়ের মরদেহ দেখার পর থেকে বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন মা রামিমা বেগম। নির্বাক হয়ে আছেন তিনি। মুনতাহার বাবা শামীম আহমদও পাগলপ্রায়। কথা বলার চেষ্টা করেই কান্নায় ভেঙে পড়ছেন। চোখের জল ফেলছেন আত্মীয়-স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশীরাও।

মেয়ের কথা বলতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন মুনতাহার বাবা। তিনি বলেন, নিখোঁজের পর থেকে আমার মেয়েটা সারা দেশের মানুষের সন্তান হয়ে গেছে। নিখোঁজের পর দেশবাসী যেভাবে তার সন্ধানে এগিয়ে এসেছে, সহযোগিতা করেছে, ভালোবেসেছে, তাতে আমার মনে হয়েছে মুনতাহা সবার সন্তান। আমার ফুলের মতো বাচ্চাটাকে কেন এভাবে হত্যা করা হলো? আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।

পূর্বশত্রুতা ছিল কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, এরকম কিছু ছিল না। পড়ানো শেষে প্রায়ই মর্জিনা কাউকে না জানিয়ে মুনতাহাকে নিয়ে বেড়াতে চলে যেত। বারবার নিষেধ করেও কাজ হয়নি। পরে তাকে গৃহশিক্ষকের কাজ থেকে বাদ দেই। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে সে এ কাজ করল কি না বুঝতে পারছি না।

পুলিশ ও মুনতাহার প্রতিবেশীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ৩ নভেম্বর মুনতাহাকে অপহরণের পর ওই দিন মাগরিবের পর মুনতাহাকে গলা টিপে হত্যা করা হয়। এরপর রাতে তাকে বাড়ির পাশের একটি ডোবায় পুঁতে রাখা হয়। মর্জিনার কথাবার্তায় সন্দেহ দেখা দিলে গত শনিবার রাতে পুলিশ তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে যায়। ঘটনা জানাজানি হয়ে যেতে পারে এই ভয়ে মর্জিনার মা অলিফজান রাত ৪টার দিকে ডোবা থেকে মুনতাহার মরদেহ তুলে পাশের পুকুরে ফেলে দিতে যাচ্ছিলেন। এ সময় স্থানীয়রা সেটি দেখে তাকে আটক করে পুলিশে খবর দেয়। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ জনতা আলিফজানের ঘরে আগুন দেয়। পরে পুলিশ এসে তাদের নিবৃত্ত করে।

পুলিশ জানায়, মরদেহ উদ্ধারের সময় মুনতাহার শরীর কাদায় লেপ্টে ছিল। গলায় রশি জাতীয় কিছু পেঁচানো ছিল। কানাইঘাট থানার ওসি আব্দুল আউয়াল বলেন, রাত সাড়ে ৩টার দিকে এক নারী মুনতাহার বাড়ির পাশের একটি ডোবা থেকে মরদেহ উঠিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। সম্ভবত পুকুরে ফেলে দেওয়ার জন্য মরদেহটি তোলা হয়েছিল। তখন স্থানীয় লোকজন বিষয়টি দেখে ফেলে। আর আমরা আগে থেকে এলাকার কিছু মানুষকে বলে রেখেছিলাম পাহারা দেওয়ার জন্য। সে অনুযায়ী লোকজন পাহারায় ছিল। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে চারজনকে আটক করেছি। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক:
মো. আশরাফ আলী
কর্তৃক এইচবি টাওয়ার (লেভেল ৫), রোড-২৩, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২।
মোবাইল : ০১৪০৪-৪০৮০৫২, ০১৪০৪-৪০৮০৫৫, ই-মেইল : thebdbulletin@gmail.com.
কপিরাইট © বাংলাদেশ বুলেটিন সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত