খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মামুনুল হক বলেছেন, ভারতের সংবিধানকে নকল করে শেখ মুজিবুর রহমান সাহেব ১৯৭২ সালে সংবিধান প্রণয়ন করে জাতির সামনে ৭০ সালের জাতীয় নির্বাচনের ওয়াদার সঙ্গে গাদ্দারি করে ধর্মনিরপেক্ষতার ভিত্তিতে সংবিধান রচনা করে একাত্তরের চেতনাকে হত্যা করেছেন। ৭২’র সংবিধানে একাত্তরের চেতনা ছিল না।
নওগাঁ শহরের আমতলী এলাকায় বায়তুল মামুর জামে মসজিদ কমিটির উদ্যোগে আয়োজিত শানে রিসালাত সম্মেলনে যোগ দিয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, ৫০ বছর ধরে আমাদের জাতিকে ৭২’র চেতনা জানানো হয়েছে, নাম দিয়েছে ৭১। একাত্তরের চেতনা ছিল জালিমের বিরুদ্ধে মজলুমের লড়াই, একাত্তরের চেতনা ছিল মানুষের অধিকারের লড়াই, একাত্তরের চেতনা ছিল বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াই। একাত্তরের চেতনা ছিল জুলুম আর বৈষম্যহীন ইনসাফপূর্ণ এক বাংলাদেশ। আর ৭২’র চেতনা ছিল কুফরি বাংলাদেশের সংবিধান, ৭২’র চেতনা ছিল ভারতের তাঁবেদারি সংবিধান, ৭২’র চেতনা ছিল বাংলাদেশকে ভারতের সেবাদাস গোলাম বানানোর সংবিধান।
মামুনুল হক আরও বলেন, ভারতীয় সাম্রাজ্যবাদের সূচনা হয়েছিল ৭২ সালের সংবিধানের ভারতীয় মূলনীতির মাধ্যমে। কাজেই সরকারকে বলবো শেকড়ে পানি ঢেলে এই বিষবৃক্ষকে মুছে ফেলতে পারবেন না। শেকড়কে উপড়ে ফেলতে হবে। বাংলাদেশের সংবিধান থেকে ভারতীয় বস্তাপচা মূলনীতিকে বঙ্গোপসাগরে ভাসিয়ে দিন। ফ্যাসিবাদের শেকড় উপড়ে যাবে। আর কোনোদিন ওই নরঘাতকরা বাংলাদেশের দিকে চোখ তুলে তাকাবার সাহস পাবে না। কোরআনবিরোধী যেকোনো ধারাকে অকার্যকর করার জন্য যদি যুদ্ধের প্রয়োজন হয় প্রয়োজনে শহিদী ঈদগাহ যেতে প্রস্তুত আছে এ দেশের তৌহিদী জনতা।
তিনি বলেন, যদি আমার কথা ভুল হয় লক্ষ মানুষের সামনে বলছি আর কোনোদিন মঞ্চে কথা বলব না। অঙ্গীকার করার পর এ জাতি নৌকা মার্কায় সিল মেরে নিরঙ্কুশ বিজয় ছিনিয়ে আনল। কিন্তু পশ্চিম পাকিস্তানি স্বৈরাচারীরা ক্ষমতা হস্তান্তর না করে ২৫ মার্চ রাতে আমাদের ওপর হামলা করল, ২৬ মার্চ রাতে কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে স্বাধীনতার ঘোষণা এলো। ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ স্বাধীন হলো। ৯ মাস পাকিস্তানি মেহমানখানায় শেখ মুজিবুর রহমান সাহেব বন্দি থাকলেন। ৭২ সালে মুক্তি পেয়ে তিনি বাংলাদেশে নয় সোজা গেলেন লন্ডনে। দেখা করলেন ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে।
মামুনুল হক বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশে আসার আগে তার পকেটে চিরকুট ধরিয়ে দিলেন। তুমি বাংলাদেশে যাচ্ছো তোমার দেশের সংবিধান কী হবে, কীভাবে চলবে, আমরা যেভাবে বলে দিই, তুমি সেভাবে সংবিধান তৈরি করবা। তোমার সংবিধান বাংলাদেশের মতো হবে না। তোমার সংবিধান হবে ভারতের মূলনীতিতে। ভারতীয় সংবিধানের চারটি মূলনীতি জাতীয়তাবাদ, ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ, গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র। ভারতের সেই সংবিধানকে নকল করে শেখ মুজিবুর রহমান সাহেব ৭২ সালে সংবিধান প্রণয়ন করে জাতির সামনে ১৯৭০ সালের জাতীয় নির্বাচনের ওয়াদার সঙ্গে গাদ্দারি করেন।