রবিবার ২৬ জানুয়ারি ২০২৫ ১৩ মাঘ ১৪৩১
রবিবার ২৬ জানুয়ারি ২০২৫
আদালতে যাওয়ার পথে আসামিকে পিটিয়ে হত্যা
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: বুধবার, ১১ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৮:২৯ PM
কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার সদর ইউনিয়নের সিকদারপাড়া এলাকায় দানু মিয়া (৩৯) নামের এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা করার অভিযোগ উঠেছে। 

নিহত দানু মিয়া মহেশখালী উপজেলার বড় মহেশখালী ইউনিয়নের মাহারা পাড়ার মৃত কলমদারের ছেলে। আহত মুবিনুল ইসলাম (৩০) চকরিয়া উপজেলার কোনাখালী ইউনিয়নের ছড়াপাড়ার ছাবের আহমদের ছেলে। দুজনের পরিবারের অভিযোগ, মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত দুজনকে বেঁধে রেখে পেটায় সন্ত্রাসীরা।

দানু মিয়া ও মুবিনুল ইসলাম ২জনই একটি হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি। ২০২৩ সালের ১ ডিসেম্বর কক্সবাজার সিটি কলেজের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ও পেকুয়া সদর ইউনিয়নের সিকদারপাড়া এলাকার আসহাবুল করিম ওরফে জিহাদকে চকরিয়ার কোনাখালী এলাকায় ডেকে নিয়ে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় জিহাদের বাবা মকছুদুল করিম ১২ জনের নাম উল্লেখ করে চকরিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। 

স্থানীয় লোকজন জানান, জিহাদ হত্যা মামলায় দীর্ঘদিন ধরে পলাতক ছিলেন দানু মিয়া ও মুবিনুল ইসলাম। মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে কোনাখালীর ছড়াপাড়া থেকে সিএনজিচালিত দুটি অটোরিকশায় তারা আত্মসমর্পণ করতে চকরিয়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে যাচ্ছিলেন। তাদের সঙ্গে একই মামলায় জামিনে থাকা মোবারক আলী নামের এক আসামিও ছিলেন। তারা ইদমনি লাল ব্রিজের পাশের মসজিদের সামনে পৌঁছালে প্রায় ১৫ /২০ সন্ত্রাসী তাদের গতি রোধ করে। দানু মিয়া ও মুবিনুল ইসলামকে একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশায় তুলে নিয়ে যায়। 

পরে পেকুয়ার সিকদারপাড়া মসজিদের পাশে নুরুল আজিমের পরিত্যক্ত দোকানে বেঁধে রেখে দুজনকে দিনভর পেটানো হয়। সন্ধ্যা ৬টার দিকে তাদের শারীরিক অবস্থা গুরুতর হয়ে গেলে একটি অ্যাম্বুলেন্সে তুলে দেয়া হয়। অ্যাম্বুলেন্সটি সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে আহত দানু মিয়া ও মুবিনুল ইসলামকে নিয়ে কোনাখালীর ছড়াপাড়া এলাকায় পৌঁছে। সেখান থেকে ওই অ্যাম্বুলেন্সে দানু মিয়াকে নিয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উদ্দেশে রওনা দেন তার পরিবারের সদস্যরা। পথে রাত ১০টার দিকে পটিয়ার ইন্দ্রপুল এলাকায় দানু মিয়ার মৃত্যু হয়। মুবিনুল ইসলামকে পৃথকভাবে তার আত্মীয়স্বজনেরা কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে যান।

নিহত দানু মিয়ার জামাতা রমিজ বলেন, তার শ্বশুরের পুরো শরীরে জখমের চিহ্ন রয়েছে। খুব নির্মমভাবে তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। সিকদারপাড়া মসজিদের পাশে একটি দোকানে সারা দিন মারধর করলেও কেউ বাঁচাতে এগিয়ে যাননি। তিনি বলেন, দানু মিয়ার বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ থাকলে সেটির ফয়সালা আদালতে হবে। এভাবে কাউকে আদালতে আত্মসমর্পণ করতে যাওয়ার সময় তুলে নিয়ে দিনভর পিটিয়ে হত্যা করা যায় না। আমরা এই হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই।

দানু মিয়ার স্ত্রী রোজিনা আকতার বলেন, দানু মিয়ার হত্যার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা প্রভাবশালী। তাকে আমাদের সামনে থেকে তুলে নিয়ে যাওয়ার পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাহায্য চেয়েও পাইনি। জানি না মামলাটিও সঠিক আসামিদের বিরুদ্ধে করতে পারব কি না।

চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনজুর কাদের ভূঁইয়া বলেন, দিবাগত রাত একটার দিকে অ্যাম্বুলেন্সে দানু মিয়ার লাশ থানায় আনেন তার পরিবারের লোকজন। যেহেতু হত্যার একটি বিষয়, তাই অ্যাম্বুলেন্সের চালককে থানা হেফাজতে নেয়া হয়েছে। কারা দানু মিয়াকে গুরুতর আহত অবস্থায় অ্যাম্বুলেন্সে তুলে দিয়েছে, তা বের করার চেষ্টা চলছে। 
« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







সোস্যাল নেটওয়ার্ক

  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক:
মো. আশরাফ আলী
কর্তৃক এইচবি টাওয়ার (লেভেল ৫), রোড-২৩, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২।
মোবাইল : ০১৪০৪-৪০৮০৫২, ০১৪০৪-৪০৮০৫৫, ই-মেইল : thebdbulletin@gmail.com.
কপিরাইট © বাংলাদেশ বুলেটিন সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত