চিকিৎসার দাবি নিয়ে ফের আন্দোলনে নামা গণঅভ্যুত্থানে আহতরা শ্যামলীর শিশুমেলা মোড় অবরোধ করেছেন। আজ রোববার বেলা সাড়ে ১১টায় জাতীয় অর্থোপেডিক ইনস্টিটিউট ও পুনর্বাসন কেন্দ্রের (পঙ্গু হাসপাতালের) সামনে থেকে সরে গিয়ে তারা ওই মোড়ে অবস্থান নিয়ে নানা স্লোগান দিচ্ছেন।
মিরপুর রোডের উভয় দিকের পাশাপাশি শ্যামলী থেকে আগারগাঁও সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। মিরপুর রোডের দুই পাশেই বিপুল সংখ্যক যানবাহন আটকে থাকতে দেখা গেছে। পুলিশ সদস্যরা আসাদগেট থেকে গাবতলী-মিরপুরগামী যানবাহনগুলোকে মোহাম্মদপুরের ভেতর দিয়ে ঘুরিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছেন।
দুপুর ২টা পর্যন্ত সরকারের তরফে কেউ আন্দোলনকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি। ওই সময় শ্যামলী এলাকায় রাস্তা অবরোধ করে ছিলেন বৈষমবিরোধী আন্দোলনে আহতরা।
ফরহাদ হোসেন নামে এক আহত বলেন, আমরা কাল বিকাল থেকে রাস্তায় আছি, কিন্তু কেউ আসছে না। আমরা চাই, আমাদের দাবিগুলো পূরণ করা হোক। কেউ না আসলে আমরা রাস্তা ছাড়ব না। আমাদের কর্মসূচি চলবে।
নাঈম শেখ নামের একজন বলেন, আমরা এখন পর্যন্ত আশ্বাস পাইছি, কিন্তু কোনো আশ্বাসের বাস্তবায়ন হয়নি। গতকাল রাতে রাস্তায় নামছি, কিন্তু এখনও আমাদের সঙ্গে কেউ যোগাযোগ করেনি। দাবি পূরণের ব্যবস্থা নেয়নি। আমাদের আন্দোলনকে আরও জোরদারের জন্য আমরা পঙ্গু হাসপাতালের সামনে থেকে এসে শিশুমেলায় অবস্থান নিয়েছি। এখানে আমরা অবস্থান করে দেখব, এতেও কাজ না হলে সচিবালয় অভিমুখে রওনা দিয়ে গিয়ে সচিবালয় ঘেরাও করব।
ডিএমপির শেরেবাংলা নগর ট্রাফিক জোনের সহকারী কমিশনার উদয় কুমার সাহা বলেন, আগারগাঁও থেকে শ্যামলী ও শিশুমেলাগামী ছোট গাড়িগুলো ৬০ ফিট দিয়ে ঘুরিয়ে দিচ্ছি, আর বড় গাড়িগুলো পাসপোর্ট অফিসের সামনে দিয়ে ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আর যেহেতু এখন শিশুমেলায় মিরপুরের মেইন রোড বন্ধ করে দিয়েছে, এখন ইনকামিং গাড়িগুলো আসা সম্ভব হচ্ছে না।
আন্দোলনকারী মোহাম্মদ শরীফ বলেন, রাস্তা অবরোধ করে দেওয়ায় মানুষের কষ্ট হচ্ছে। কিন্তু এ ছাড়া আর কোনো উপায় ছিল না। অন্তর্বর্তী সরকার রাস্তা বন্ধ করতে আমাদের বাধ্য করেছে। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহতরা কী করছে, কী খাচ্ছে, কোথায় থাকছে- সেই খবর কেউ নিচ্ছে না। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহতরা বুঝে গেছে সব শালারা বাটপার।
শরীফ আরও বলেন, হাসিনার বন্দুকের গুলির সামনে বুক পেতে দিয়েছিলাম। অন্ধ হয়ে গেছি, খোঁড়া হয়ে গেছি, ভয় করি নাই। যদি বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহতদের সঙ্গে বেঈমানি করা হয়, হাসিনা গেছে যে পথে তারাও যাবে সেই পথে।