বুধবার ১৮ জুন ২০২৫ ৪ আষাঢ় ১৪৩২
বুধবার ১৮ জুন ২০২৫
কলেজের অধ্যক্ষকে মারধর করে পুলিশে দিলেন এনসিপি নেতাকর্মীরা
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: মঙ্গলবার, ৬ মে, ২০২৫, ৩:২৬ PM
বগুড়া হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ এস এম মিল্লাত হোসেনকে চেম্বার থেকে ধরে নিয়ে এসে মারধরের পর পুলিশে সোপর্দ করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতা-কর্মীরা। 

গতকাল সোমবার রাত আটটার দিকে বগুড়া শহরের ইয়াকুবিয়া বালিকা উচ্চবিদ্যালয় মার্কেটের নিজ চেম্বার থেকে এস এম মিল্লাতকে আটকের পর মারধরের ঘটনা ঘটে। এস এম মিল্লাত স্বাধীনতা হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক পরিষদ বগুড়া জেলা শাখার সভাপতি এবং বঙ্গবন্ধু পরিষদ বগুড়া জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক। তিনি বগুড়া শহরের নাটাইপাড়া এলাকায় বসবাস করেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বিকেল থেকে ইয়াকুবিয়া বালিকা উচ্চবিদ্যালয় মার্কেটের নিজ চেম্বারে রোগী দেখছিলেন এস এম মিল্লাত হোসেন। রাত আটটার দিকে এনসিপির শ্রমিক উইংয়ের কেন্দ্রীয় সংগঠক আবদুল্লাহ আল সানীর নেতৃত্বে ১৫-২০ জন নেতা-কর্মী চেম্বারে গিয়ে তাঁকে ধরে বাইরে নিয়ে আসেন। এরপর তাঁকে টেনেহিঁচড়ে পুলিশ সুপারের কার্যালয়সংলগ্ন জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) কার্যালয়ে সোপর্দ করা হয়। শহীদ আবদুল জব্বার সড়ক, কালিবাড়ী মোড় ও পৌরসভা লেন হয়ে ডিবি কার্যালয় পর্যন্ত নেওয়ার সময় এস এম মিল্লাতকে থেমে থেমে মারধর করা হয় এবং আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে নানা স্লোগান দেওয়া হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ওই ঘটনার ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে।

ভিডিওতে এনসিপির শ্রমিক উইংয়ের কেন্দ্রীয় সংগঠক আবদুল্লাহ আল সানীকে বলতে শোনা যায়, ‘অ্যাক (এস এম মিল্লাত) ছয় মাস আগে আলটেমেটাম দিয়েছিলাম, আমাকে দুর্বল মনে করেছে। আমি স্পষ্ট কথা বলে দিতে চাই। বেশি কথার মানুষ আমি না, এক কথার মানুষ। একবার বলেছি মানে ওইটা ওয়ার্নিং হয়ে গেছে। সময়মতো ধরে ফেলে দিয়েছি। তুই আমার ভাইগরক ২০-২৫ বছর ধরে মারচু। দীলিপ রায়ের (স্বাধীনতা হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা পরিষদের সভাপতি) কোনো সিন্ডিকেট রাখব না, আমরা আসতেছি। হাসনাতের ওপর হামলা হয়েছে।’
এনসিপি নেতা আবদুল্লাহ আল সানী বলেন, গত ১৫ বছর এস এম মিল্লাত ছাত্রদল ও ছাত্রশিবিরের নেতা–কর্মীদের ওপর নির্যাতন চালিয়েছেন। নিয়োগ–বাণিজ্য করেছেন। এস এম মিল্লাত টাকা নিয়েও চাকরি না দেওয়া অনেক ভুক্তভোগী এসে ২০২২ সালেই তার কাছে অভিযোগ জানিয়েছিলেন। কিন্তু তখন ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকায় ব্যবস্থা নেওয়া যায়নি। ৫ আগস্টের পর এস এম মিল্লাত ফেসবুকে অপপ্রচার চালাচ্ছেন, আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনে নানাভাবে সহায়তা করছে। নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগকে অর্থ সহায়তা করছেন। তাঁকে ভুক্তভোগীদের টাকা ফেরত এবং এসব কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকার কথাও বলা হয়েছিল। কিন্তু তিনি শোনেননি। এ কারণে তাঁকে পুলিশে দেওয়া হয়েছে। এস এম মিল্লাত হোমিওপ্যাথিক কলেজের অধ্যক্ষ পদটিও গুন্ডামি করে দখল করে আছেন বলে অভিযোগ করেন আবদুল্লাহ আল সানী।

বগুড়া ডিবির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইকবাল বাহার বলেন, রাত সোয়া আটটার দিকে এনসিপির নেতা-কর্মীরা এম এস মিল্লাতকে আটক করে ডিবি কার্যালয়ে সোপর্দ করেছেন। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে তার বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

বগুড়া সদর থানার ওসি এম এম মঈনুদ্দিন বলেন, নথিপত্র ঘেঁটে দেখা গেছে এস এম মিল্লাতের বিরুদ্ধে থানায় কোনো ধরনের মামলা নেই।
« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক:
মো. আশরাফ আলী
কর্তৃক এইচবি টাওয়ার (লেভেল ৫), রোড-২৩, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২।
মোবাইল : ০১৪০৪-৪০৮০৫২, ০১৪০৪-৪০৮০৫৫, ই-মেইল : thebdbulletin@gmail.com.
কপিরাইট © বাংলাদেশ বুলেটিন সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত