দোয়ারাবাজার উপজেলায় ছুরিকাঘাতে পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র হোসেন মিয়াকে (১২) ছুরিকাঘাতে হত্যা করে ফ্রি ফায়ার ও পাবজিসহ আক্রমণাত্মক গেমে আসক্ত কিশোর আকসান মিয়া (১৩)। পুলিশের প্রাথমিক ধারণা, ৫০০ টাকার দ্বন্দ্বে পূর্বপরিকল্পিতভাবে হোসেনকে হত্যা করা হয়।
পুলিশ জানায়, এপ্রিলের শেষ দিকে আকসান ও হোসেন মিয়া মিলে ৫০০ টাকায় একজোড়া কবুতর কিনে আনে। কিছুদিন পর আকসান ভুল করে কবুতরটি খাঁচা থেকে ছেড়ে দেয়, যা আর ফিরে আসে না। এ নিয়ে দুই কিশোরের মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয় এবং হোসেনের কাছ থেকে টাকা ফেরত দাবি করে আকসান।
গত সোমবার হোসেন মিয়া তার নানির কাছ থেকে ৫০০ টাকা নিয়ে আকসান, আজির উদ্দিন ও শরীফ নামে তিন কিশোরের সঙ্গে বাজারে যায়। ফেরার পথে আকসান তাকে জোর করে নির্মাণাধীন ভবনের নিচে নিয়ে ছুরি দিয়ে গলা, পেট ও বুকে আঘাত করে। গুরুতর আহত অবস্থায় হোসেন পথচারীদের জানায়, আকসান তাকে মেরেছে। হাসপাতালে নেয়ার পর তার মৃত্যু হয়।
দোয়ারাবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাহিদুল হক বলেন, অভিযুক্ত কিশোর স্মার্টফোনে অনলাইন গেইমে আসক্ত। এ ঘটনায় নিহতের মামা বিলাত আলী বাদী হয়ে আকসানকে প্রধান আসামি করে ও অজ্ঞাতনামা ৩ জনের নামে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় আকসান ও আজির উদ্দিন নামের দুজনকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. রফিকুল ইসলাম জানান, হোসেনের গলা ও পেটে ধারালো ছুরির পাঁচটি আঘাত ছিল। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয়।
নিহত হোসেনের পরিবার জানায়, আকসান ও তার ভাইরা এলাকার চিহ্নিত বখাটে। আকসান আগেও ছুরিকাঘাতের ঘটনা ঘটিয়েছে, যা অর্থের বিনিময়ে ধামাচাপা দেয়া হয়েছিল। তারা দাবি করেন, আকসান একা নয়, তার ভাই আজির উদ্দিন ও শরীফও হত্যাকাণ্ডে জড়িত।
নিহত হোসেন মিয়ার মা ফাতেমা বেগম ন্যায়বিচার নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, আকসানের স্বজনরা প্রভাবশালী ও অর্থবিত্তের মালিক। এর আগেও আকসানের ছুরিকাঘাতের ঘটনা টাকা পয়সা দিয়ে সামাজিকভাবে শেষ করে দিয়েছে। এ অবস্থায় আমি ন্যায় বিচার পাওয়া নিয়ে শঙ্কিত।