বহুল প্রতীক্ষিত নতুন কালুরঘাট সেতুর (রেল কাম সড়ক) ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। তবে সেতুর ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন করলেও ফলকে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের নাম সেখানে নেই। রেলয়ের পূর্বাঞ্চলের কর্মকর্তারা জানিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশনায় ফলকে তার নাম রাখা হয়নি।
বুধবার চট্টগ্রামের সার্কিট হাউস থেকে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস এ সেতুর ভিত্তিপ্রস্থরের স্মারক ফলক উম্মোচন করেন বলে তার দপ্তরের ফেইসবুক পেইজে বলা হয়েছে। আর এর মধ্য দিয়ে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী সেতুর উপর রেল-কাম সড়ক সেতু নির্মাণ শুরুর পথ খুলল, যা দক্ষিণ চট্টগ্রামের মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি।
উদ্বোধন ঘোষণা করে প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস বলেছেন, আজ এখানে বোয়ালখালীর বাসিন্দাও উপস্থিত আছেন। কালুরঘাট সেতু তাদের বহুল আকাঙ্ক্ষিত। এটি তৈরি হয়ে গেলে চট্টগ্রামবাসীর বহু কষ্টের অবসান হবে।
🔴 কাজ কবে শুরু, কবে হবে শেষ ?
কালুরঘাট সেতুর প্রকল্প পরিচালক আবদুল কালাম চৌধুরী জানিয়েছেন “আমাদের সম্ভ্যবতা যাচাই সম্পন্ন হয়েছে। পরামর্শক নিয়োগের টেন্ডারও আহ্বান করা হয়েছে। আগামী বর্ষা মৌসুমে (অগাস্ট-সেপ্টেম্বর) ভরা জোয়ারের সময় নদী শাসন সংক্রান্ত সমীক্ষার কাজ হবে। সভ মিলিয়ে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্মাণ কাজ দৃশ্যমান হবে বলে আশা প্রকল্প পরিচালকের।
নতুন এই সেতুর কাজ ২০২৯ সালের মধ্যে শেষ করে ২০৩০ সালে চালু হওয়ার কথা রয়েছে বলেও জানিয়েছেন সেতু উপদেষ্টা।
🔴 কেমন হবে নতুন সেতুটি
বাংলাদেশ রেলওয়ের তথ্য অনুযায়ী, ১১ দশমিক ৪৪ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বাস্তবায়ন হতে যাওয়া এ প্রকল্পে মূল সেতুর আয়তন হবে ৭০০ মিটার। সেতুর প্রস্ত হবে ৩১ দশমিক ৯৫ মিটার।
সেতুর জন্য ছয় দশমিক ২ কিলোমিটার ভায়াডাক্ট এবং সাড়ে চার কিলোমিটার বাঁধসহ রেল লাইন নির্মাণ করা হবে।
সেতুর উচ্চতা হবে ১২ দশমিক ২০ মিটার, যার কারণে সেতুর নিচ দিয়ে সহজে বড় নৌযান চলাচল করতে পারবে। সেতুতে থাকবে ডুয়েল গেজ রেল লাইন।
বছরের ২৭ জুন দক্ষিণ কোরিয়ার সাথে বাংলাদেশ সরকারের ঋণচুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে। ১৭ নভেম্বর প্রকল্পের ডিপিপি অনুমোদন হয়েছে। প্রকল্পের সময় নির্ধারণ করা হয়েছে ২০২৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর।
এ সেতু নির্মাণে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে, ১১ হাজার ৫৬০ কেটি ৭৬ লাখ টাকা। যার মধ্যে সরকারি অর্থায়ন থাকবে চার হাজার ৪৩৫ কোটি ৬৩ লাখ টাকা ও বিদেশী ঋণ থাকবে সাত হাজার ১২৫ কোটি ১৪ লাখ টাকা।
বাংলাদেশ রেলওয়ে এ সেতু নির্মাণ বাস্তবায়ন করবে। এ প্রকল্পের সময় নির্ধারণ করা হয়েছে ২০২৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর।
🔴 শতবর্ষী কালুরঘাট সেতু
চট্টগ্রাম নগরীর সঙ্গে বোয়ালখালী ও পটিয়া উপজেলার একাংশের যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম বর্তমান কালুরঘাট সেতুটি প্রায় শতবর্ষী। সড়ক পথের সব ধরনের যানবাহনের পাশাপাশি এ সেতু দিয়ে ট্রেনও চলাচল করে।
১৯৩০ সালে ব্রিটিশ শাসনামলে রেল যোগাযোগের জন্য এ সেতু নির্মাণ করা হয়। পরে ১৯৫৮ সালে এ সেতুটি সব ধরনের যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেয় তৎকালীন পাকিস্তান সরকার। অনেক আগেই এই সেতুর মেয়াদ ফুরিয়ে যায়৷ সর্বশেষ বুয়েটের তত্ত্বাবধানে মেরামত করে ট্রেন চলাচল শুরু হয় কক্সবাজার রুটে৷