বুধবার ১৮ জুন ২০২৫ ৪ আষাঢ় ১৪৩২
বুধবার ১৮ জুন ২০২৫
জজকোর্টে পুলিশের কাছ থেকে পালিয়েছে হত্যা মামলার আসামি
যশোর প্রতিনিধি
প্রকাশ: রবিবার, ১৮ মে, ২০২৫, ৭:৫৯ PM
যশোর জজ আদালতের হাজতখানা পুলিশের কাছ থেকে হ্যান্ডকাফ ভেঙে হত্যা মামলার এক আসামি পালিয়ে গেছে। রোববার দুপুর দুইটার দিকে ঘটনাটি ঘটেছে।

পলাতক আসামি জুয়েল খান মাগুরা জেলার শালিখা উপজেলার রামপুর গ্রামের জাহাঙ্গীর খানের ছেলে। জুয়েল মাগুরার শালিখা উপজেলার হরিশপুর গ্রামের ইজিবাইক চালক আল-আমিন হত্যা মামলার চার্জশিটভুক্ত প্রধান আসামি। 

আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০২১ সালের ৯ ডিসেম্বর মাগুরা থেকে আল-আমিনের ইজিবাইক ভাড়া করে যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার বুধোপুর গ্রামে এনে তাকে হত্যা করে এবং ইজিবাইক নিয়ে চম্পট দেয় জুয়েলসহ তার সহযোগীরা। এঘটনায় বাঘারপাড়া থানায় মামলা হয়। ২০২১ সালের ১৫ ডিসেম্বর র‌্যাব-৬ খুলনার স্পেশাল টিম জুয়েলসহ মামলার চার আসামিকে আটক করে এবং তারা হত্যার ঘটনা স্বীকার করে। পরে তাদেরকে বাঘারপাড়া থানায় হস্তান্তর করা হয়। এরপর থেকেই জুয়েল কারাগারে আটক ছিল। 

পুলিশ সূত্র জানায়,এ মামলার রোববার হাজিরার তারিখ ধার্য ছিল। সকালে জুয়েল ও হারুন অর রশিদকে যশোর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে আদালতে আনা হয়। পরে দুপুরে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের এজলাসে তাদের হাজির করা হয়। আদালত তাদের ফেরত কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। তখন মহিলা পুলিশ কনস্টেবল সোনালী তাদের দুজনকে নিয়ে হাজতখানায় নিয়ে যাচ্ছিলেন। এ সময় নিজ তলার সিঁড়ির কাছে পৌঁছালে কৌশলে জুয়েল খান হাতকড়া ভেঙে পালিয়ে যায়। পরে কনস্টেবল সোনালী চিৎকার দিলে আশপাশের লোকজন তাকে তাড়া করে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পলাতকের খবর শুনে তারা পিছু ধাওয়া করেন। এ সময় জুয়েল জজ আদালতের সামনের গেট দিয়ে বের হয়ে মসজিদের সামনে দিয়ে দৌড়ে আইনজীবী সহকারী সমিতির কার্যালয়ের পাশ দিয়ে খড়কির দিকে চলে যায়।

এদিকে, খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) নূর-ই-আলম সিদ্দিকী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) আবুল বাসার, কোতোয়ালি থানার অফিসার ইনচার্জ আবুল হাসনাতসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা আদালতে ছুটে যান। একইসঙ্গে পুলিশের একাধিক টিম জুয়েলকে খুঁজতে অভিযানে নামে। এ রিপোর্ট লেখার আগ পর্যন্ত সময় (বিকেল ছয়টা) পর্যন্ত পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট শহরের বিভিন্ন স্থানে অভিযানে রয়েছে বলে পুলিশের বিভিন্ন সূত্র ও পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। 

এ বিষয়ে কোর্ট ইন্সপেক্টর রোকসানা খাতুন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, জুয়েলকে খোঁজা হচ্ছে। এ ছাড়া ঘটনার সার্বিক বিষয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে।

উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ৯ ডিসেম্বর ইজিবাইক ভাড়া করে খুনিরা চালক আল-আমিনকে যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার বুধোপুর গ্রামে নিয়ে যায়। এরপর আল-আমিনের হাত-পা বেঁধে গলায় ফাঁস দিয়ে তাকে হত্যা করে। পরে টাকা ও ইজিবাইক নিয়ে পালিয়ে যায়। পরদিন পুলিশ বুধোপুর থেকে আল-আমিনের লাশ উদ্ধার করে। একই সঙ্গে ইজিবাইকও উদ্ধার করা হয়।

নিহতের বাবা মাগুরা জেলার শালিখা উপজেলার হরিশপুর গ্রামের বাসিন্দা মোস্তাফিজুর রহমান অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে বাঘারপাড়া থানায় মামলা করেন। মামলার তদন্তে র‌্যাব সদস্যরা জুয়েল খান, আল-আমিন, হারুন অর রশিদ ও মো. রাসেলকে আটক করে। এ সময় তাদের কাছ থেকে আল-আমিনের ইজিবাইকের ব্যাটারি, চাকা ও ছুরি উদ্ধার করা হয়। মামলাটি তদন্ত শেষে ২০২২ সালের ১৪ ডিসেম্বর বাঘারপাড়া থানার এসআই হরষিত রায় আসামি জুয়েল ও একই গ্রামের সেলিম হোসেনের ছেলে হারুন অর রশিদের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। মামলাটির বিচারকার্য চলছে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ২য় আদালতে। এবং রোববার ধার্য তারিখেই এই পালানোর ঘটনা ঘটে।
« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক:
মো. আশরাফ আলী
কর্তৃক এইচবি টাওয়ার (লেভেল ৫), রোড-২৩, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২।
মোবাইল : ০১৪০৪-৪০৮০৫২, ০১৪০৪-৪০৮০৫৫, ই-মেইল : thebdbulletin@gmail.com.
কপিরাইট © বাংলাদেশ বুলেটিন সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত