শ্রীপুরে সড়কে গাছ ফেলে ডাকাতির সময় ডাকাতের দায়ের কোপে সিএনজি অটোরিকশাচালক এবং গ্রামবাসীর গণপিটুনিতে এক ডাকাত নিহত হয়েছেন। এসময় এলাকাবাসী চার ডাকাতকে আটক করে পুলিশে দিয়েছে।
গতকাল দিবাগত রাত ১টার দিকে এমসি বাজার-বরমী সড়কের সাতখামাইর এলাকার গজারি বনের ভেতরে এই ডাকাতির ঘটনা ঘটে। শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ আব্দুল বারিক এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এ ঘটনায় নিহতরা হলেন, সিএনজি অটোরিকশাচালক আবুল কালাম (৪০) উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের টেপিরবাড়ি গ্রামের মৃত গিয়াস উদ্দিনের ছেলে। নিহত ডাকাত আরিফ হোসেনের (৩০) বিস্তারিত পরিচয় জানা যায়নি। তাদের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
সিএনজি যাত্রী শফিকুল ইসলাম ডাকাতির ঘটনায় বাদি হয়ে রাতেই থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। খবর পেয়ে সকালে গাজীপুর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) একটি টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন এবং শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিহত সিএনজি অটোরিকশাচালকের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলেন।
আটককৃত ডাকাত সদস্যরা হলেন, শ্রীপুর উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের টেংরা (কাইচ্চামোড়) গ্রামের শাকিল (২৫), রিপন মিয়া (১৯), তাহসিন মিয়া (১৮), গোসিঙ্গা ইউনিয়নের পটকা গ্রামের আবুল কালাম (২৭)। এসময় তাদের আরও সাতজন সহযোগী ডাকাত পালিয়ে যান।
থানায় দেওয়া লিখিত এজাহারে সিএনজি যাত্রী উল্লেখ করেন, তিনিসহ তার তিন সহযোগী এমসি বাজার থেকে সিএনজি ভাড়া করে বরমী যাচ্ছিলেন স-মিলের কাঠের ভুসি আনার জন্য। রাত ১টার দিকে এমসি বাজার-বরমী সড়কের সাতখামাইর এলাকার গজারি বনের ভেতর দিয়ে যাওয়ার সময় সড়কে গাছ পড়ে থাকতে দেখে তারা থামেন। এসময় পাশে থাকা ডাকাতরা তাদেরকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করেন। পরে ভয় দেখিয়ে তাদের প্রত্যেকের সঙ্গে থাকা নগদ টাকা এবং মোবাইল ফোন লুটে নেয়। ডাকাতরা সড়কে চলাচলকারী অন্যান্য গাড়ি থামিয়ে যাত্রীদেরকেও একই কায়দায় জিম্মি করে তাদের মালামাল লুটে নিচ্ছিল।
তাদেরকে বাধা দেওয়ায় ডাকাতের দায়ের এলাপাতাড়ি কোপে সিএনজি অটোরিকশাচালক আবুল কালাম গুরুতর আহত হন। তাদের চিৎকার গ্রামবাসীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে ডাকাত আরিফ হোসেনকে গণপিটুনি দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছালে গ্রামবাসীরা আহত ডাকাত আরিফ হোসেনসহ তার চার সহযোগীকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করে।
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ আব্দুল বারিক জানান, গুরুতর আহত সিএনজিচালক আবুল কালাম এবং জখমপ্রাপ্ত ডাকাত আরিফ হোসেনকে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক আহত ডাকাতকে মৃত ঘোষণা করেন।
শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক শারমিন সুলতানা বলেন, “পুলিশ একজনকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসে। আর সিএনজিচালক আবুল কালামকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় নিয়ে আসা হয়। গুরুতর আহত আবুল কালামকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছিল। পরে তার স্বজনরা ঢাকা নেওয়ার পথে শ্রীপুর পৌরসভার মাস্টারবাড়ি এলাকায় তার মৃত্যু হয়।”