ছাত্রলীগের রাঙামাটি জেলা কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি জামিনে থাকা আনোয়ার হোসেন কায়সারকে পিটিয়ে পুলিশে দিয়েছে ছাত্রদল ও শিবিরের কর্মীরা।
আজ শুক্রবার (২০ জুন) দুপুরে শহরের বনরূপায় এই ঘটনা ঘটে। জুমার নামাজের পর একটি ট্যাক্সিতে করে চট্টগ্রাম যাওয়ায় সময় কায়সারকে আটকে করে একদল যুবক। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যুক্ত থাকা ছাত্রশিবির ও ছাত্রদলের কয়েকজন নেতাকর্মী ছাত্রলীগের এই নেতাকে ব্যাপক মারধর করে পাঞ্জাবি ছিঁড়ে ফেলে। পরে পুলিশ এসে তাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
এর আগে আন্দোলন চলাকালে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় ৫ আগস্টের পর করা এক মামলায় গ্রেফতার হন কায়সার। কিছু দিন কারাগারে থাকার পর হাইকোর্ট থেকে জামিন নিয়ে পলাতক ছিলেন। শুক্রবারই রাঙামাটি আসেন বলে জানাচ্ছেন তার ঘনিষ্ঠরা।
আজ শুক্রবার একটি বিয়ের দাওয়াতে এসে বনরূপা মসজিদে নামাজ পড়তে গেলে তাকে সেখানে দেখে জড়ো হন ছাত্রশিবির, ছাত্রদল ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কয়েকজন। পরে কায়সার ওই স্থান থেকে দ্রুত পালাতে একটি ট্যাক্সি করে রাঙামাটি ছাড়ার সময় তাকে আটক করে ব্যাপক মারধর করা হয়। তার পোশাক ছিঁড়ে ফেলা হয়।
কোতোয়ালি থানার ওসি (তদন্ত) সাহেদ বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে এসেছি। এই বিষয়ে ঊর্ধ্বতনদের সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
কায়সারকে মারধরের ঘটনার সময় ছাত্রদলের নেতাদের ওপর শিবিরের হামলার প্রতিবাদে হঠাৎ উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে শহরে। মারধরের সময় একদল শিবির কর্মী ছাত্রদলের দুই নেতার ওপর হামলা করলে মুহূর্তেই উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ছাত্রদল নেতাকর্মীরা সংঘবদ্ধ হয়ে শিবির নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালায়। এ সময় শিবিরের কমপক্ষে পাঁচ জন আহত হন। কিন্তু দ্রুতই বিএনপি ও জামায়াতের সিনিয়র নেতাদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
রাঙামাটি সরকারি কলেজ ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বাহাদুর শাহ জানান, ছেলেপেলেরা যখন গাড়ির ভেতর কায়সারকে মারধর করছিল এবং গাড়িতে আঘাত করছিল, তখন আমি তাদের বলি, গাড়ির ভেতর থেকে বের করতে ও গাড়িতে আঘাত না করতে। তখন শিবিরের একটা ছেলে কোনও কারণ ছাড়াই আমাকে ও আকাশকে (ছাত্রদলের আরেক নেতা) ঘুষি মেরে এবং একটি বস্তু দিয়ে আঘাত করে। খবর পেয়ে শহরের বিভিন্ন স্থান থেকে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা ছুটে আসেন এবং শিবির কর্মীদের ধাওয়া দিলে তারা ইসলামী সেন্টারে ডুকে যায়। এ সময় পুলিশ ও সেনাবাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। শিবিরের ছেলেরা বিনা উসকানিতে আমাদের ওপর হামলা করেছে।
এ বিষয়ে কিছু বলতে অপারগতা প্রকাশ করে রাঙামাটি জেলা ছাত্রশিবিরের সভাপতি শহিদুল ইসলাম শাফি বলেন, তেমন কিছুই হয়নি। তাদের কেউ আহত হয়েছে কি না সেটিও জানাতে চাননি তিনি।
জেলা জামায়াতের সিনিয়র নেতা ও শুরা সদস্য হারুনুর রশীদ বলছেন, নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের চিহ্নিত সন্ত্রাসী আনোয়ার হোসেন কায়সারকে আটক করার পর মারধর করার সময় না চেনার কারণে কারণে শিবির ও ছাত্রদলের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। আমরা খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে দুই পক্ষকে সরিয়ে দিয়েছি। এ সময় শিবিরের এক কর্মীকে বেশি মারধর করা হয়েছে। জেলা বিএনপি ও জামায়াতের নেতৃবৃন্দ বসে বিষয়টি সমাধান করে দেবো। ছাত্রশিবিরের সঙ্গে তো ছাত্রদলের কোনও বিরোধ নাই, এটা নিছক ভুল বোঝাবুঝি।