দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের চরমপন্থি সংগঠন গণমুক্তিফৌজের অন্যতম সদস্য কুষ্টিয়ার জাহাঙ্গীর কবির ওরফে লিপটন ও তার সহযোগী রাজুকে গ্রেপ্তার দেখিয়েছেন ঝিনাইদহের আদালত। ঝিনাইদহের শৈলকূপায় চাঞ্চল্যকর ট্রিপল মার্ডার মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
সোমবার (৭ জুলাই) দুপুরে ঝিনাইদহের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তোলা হলে আদালতের বিচারক মো. মোখলেসুর রহমান তাদের দুইজনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে জেলহাজতে পাঠান। আদালত এ বিষয়ে মঙ্গলবার (৮ জুলাই) রিমান্ড শুনানির দিন ধার্য্য করেন।
গত ৬ জুন কুষ্টিয়া সদর উপজেলার দূর্বাচারা গ্রামে অভিযান চালিয়ে তিন সহযোগীসহ জাহাঙ্গীর কবির ওরফে লিপটনকে আগ্নেয়াস্ত্র, বিপুল পরিমাণ গুলি, ও দেশীয় অস্ত্রসহ তার নিজ বাড়ী থেকে গ্রেফতার করা হলেও মামলায় তাকে চার নম্বর আসামি করেছে পুলিশ। সহযোগীদের করা হয় প্রধান আসামি। অস্ত্র-গোলাবারুদের মামলায় কুষ্টিয়াতে মাত্র একদিনের রিমান্ড নিয়ে তাদের জামাই আদরে রেখে ফের কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।
এ ঘটনায় বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী লিপটনের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন, মিছিল-সমাবেশ ও জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেন সচেতন নাগরিক সমাজ। লিপটনের বিরুদ্ধে একাধিক হত্যা, গুম, অপহরণ ও চাঁদাবাজির মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। তিনি কুষ্টিয়ার সাবেক সংসদ ও আওয়ামী লীগের হাইপ্রোফাইল নেতা মাহবুব-উল আলম হানিফের আস্থাভাজন হিসেবে পরিচিত।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, গত ২১ ফেব্রুয়ারি শৈলকূপা উপজেলার রামচন্দ্রপুর শ্মশানঘাট এলাকায় কতিপয় অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা পূর্ববাংলার সামরিক কমান্ডার হানেফ আলী, লিটন ও রাইসুল ইসলামকে গুলি করে হত্যা করে। ওই ঘটনায় নিহত চরমপন্থি নেতা হানেফের ছোট ভাই সাজেদুল ইসলাম ইশা বাদী হয়ে শৈলকূপা থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। চাঞ্চল্যকর ওই হত্যাকাণ্ডে কুষ্টিয়ার চরমপন্থি নেতা লিপটন ও রাজু জড়িত থাকতে পারে বলে সন্দেহ করছে পুলিশ।
জানা গেছে, দীর্ঘদিন আড়ালে থাকলেও আওয়ামী লীগ সরকারের সময় কুষ্টিয়ার সাবেক সংসদ সদস্য মাহবুব-উল আলম হানিফের হাতে ফুলের তোড়া দিয়ে প্রকাশ্যে আসেন চরমপন্থি নেতা লিপটন। বড় জনসভা করে হানিফকে সংবর্ধনা দেন। এরপর ঢাকায় হানিফের অফিসে বেশির ভাগ সময় কাটাতেন লিপটন। হানিফের চাচাতো ভাই আতাউর রহমান আতার সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তুলে এলাকার রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করতেন লিপটন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শৈলকূপা থানার ওসি (তদন্ত) শাকিল আহম্মেদ জানান, চাঞ্চল্যকর ট্রিপল মার্ডার মামলায় প্রথমে লিপটন ও রাজুকে শোন-অ্যারেস্ট দেখানো হয়। সোমবার দুপুরে ঝিনাইদহের একটি আদালতে তোলা হলে দু’জনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত। এ হত্যা মামলায় এখন পর্যন্ত ৯ জন গ্রেপ্তার হলেও কেউ আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয়নি।
One attachment
• Scanned by Gmail