যশোর শিক্ষা বোর্ডে মুখ ও কনুই দিয়ে লেখে জিপিএ-৫ পাওয়ার রেকর্ড করলেন যশোরের মনিরামপুর উপজেলার সাতনল খানপুর গ্রামের প্রভাষক হাবিবুর রহমান ও জাহানারা বেগম দম্পতির একমাত্র মেয়ে লিতুন জিরা।
হাত-পা ছাড়া লিতুন জিরার জন্ম হয়েছিল। মুখ ও কনুই দিয়ে লিখে এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে জিপিএ ৫ প্লাস পেয়ে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে সে। সব বিষয়ে এ প্লাস পেয়েছে এই শিক্ষার্থী।
মেয়ের ভালো ফলে অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে লিতুন জিরার মা জাহানারা বেগম বলেন,তার ভূমিষ্ঠের পর দেখতে পান হাত-পা ছাড়াই জন্ম নিয়েছে এক অদ্ভুদ শিশু। আত্বীয়-স্বজনসহ প্রতিবেশিরা মেয়েকে নিয়ে নানা কথা বলতো। সব নিরবে হজম করেছেন আর শাড়ির আঁচলে চোখের পানি মুছেছেন।
তিনি বলেন, আদর করে স্বামী-স্ত্রী মিলে মেয়ের নাম রাখেন লিতুন জিরা। একটা সময় মেয়ের ভবিষ্যত নিয়ে চোখের পানিতে অনেক রাত পার করেছেন, তারপরও দমেননি তিনি। একটু বড় হলে মেয়ের মেধা এবং লেখাপড়ার প্রতি আগ্রহ তাকে আশান্বিত করে। আর এখনতো মেয়েকে নিয়ে তিনি গর্ব করেন।
লিতুন জিরার শিক্ষক রেজাউল ইসলাম জানান, হাত-পা ছাড়া জন্ম নিয়েও লেখাপড়ার প্রতি প্রবল আগ্রহ, একাগ্রতা ও পরিশ্রম লিতুন জিরার এ সাফল্যের মূল চাবিকাঠি।
প্রসঙ্গত, লিতুন জিরা সমাজের ৮/১০ জন স্বাভাবিক শিশুর মতো বেড়ে উঠেনি। একাগ্রতা, প্রবল ইচ্ছা শক্তি আর শত প্রতিকূলতাকে জয় করে সামনে এগিয়ে যাওয়ার দৃঢ় প্রত্যয়ে সাফল্যের অগ্রযাত্রায় শারীরিক প্রতিবন্ধকতা বাধা হতে পারেনি। অদম্য মেধাবী লিতুন জিরা পঞ্চম শ্রেনির সমাপনী পরীক্ষায় জিপিএ ৫, বৃত্তি লাভসহ গান, কবিতা আবৃত্তি, রচনা প্রতিযোগিতায় উপজেলা, জেলা ও জাতীয় পর্যায় পুরষ্কার পেয়েছে।