রবিবার ২০ জুলাই ২০২৫ ৫ শ্রাবণ ১৪৩২
রবিবার ২০ জুলাই ২০২৫
আমেরিকার স্বার্থে মানবাধিকার মিশন খুলতে দেওয়া হবে না: হেফাজত
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: শনিবার, ১৯ জুলাই, ২০২৫, ৬:২৩ PM
ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের অফিস স্থাপন চুক্তিতে অন্তর্বর্তী সরকার সই করায় তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী ও মহাসচিব সাজেদুর রহমান। 

তারা বলেন, মার্কিন স্বার্থে এ দেশে মানবাধিকার মিশন খুলতে দেওয়া হবে না। আজ শনিবার (১৯ জুলাই) সংবাদমাধ্যমে দেওয়া এক বিবৃতি তারা এ কথা বলেন। বিবৃতিতে তারা অবিলম্বে চুক্তি বাতিল না করলে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন। 

বিবৃতিতে বলা হয়, দেশের ওলামায়ে কেরাম ও ইসলামী দলগুলোর টানা প্রতিবাদ-বিক্ষোভ ও উদ্বেগ সত্ত্বেও অন্তর্বর্তী সরকার ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় স্থাপন চুক্তিতে সই করায় আমরা তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। নাগরিকদের মতামত ও উদ্বেগ উপেক্ষা করে কোনও স্পর্শকাতর ইস্যুতে এককভাবে সিদ্ধান্ত নিতে পারে না সরকার। অবিলম্বে এই চুক্তি বাতিল না করলে কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবো। মার্কিন স্বার্থে তাবেদার জাতিসংঘের মানবাধিকার অফিস এ দেশে হতে দেওয়া যায় না। এটা এ দেশের ওলামায়ে কেরামের নীতিগত সিদ্ধান্ত।

হেফাজতের দুই নেতা বলেন, জাতিসংঘের মানবাধিকার অফিস সাধারণত যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশগুলোতেই দেখা যায়। সেই অফিস এখন আমাদের দেশে হওয়াটা সম্মানজনক নয়। বাংলাদেশ কোনও যুদ্ধপীড়িত দেশ না হওয়া সত্ত্বেও এখানে তাদের অফিস করতে চাওয়াটা রহস্যজনক। তাছাড়া জুলাই বিপ্লবের দাবিগুলো বাস্তবায়িত হলে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের অফিস এ দেশে কোনও দরকার নেই। অন্তর্বর্তী সরকারের উচিত, সময় নষ্ট না করে জুলাই বিপ্লবের দাবিগুলো দ্রুত বাস্তবায়ন করা।

তারা বলেন, অতীতে বিভিন্ন দেশি-বিদেশি সংস্থা বাংলাদেশের মুসলিম পারিবারিক আইন, ইসলামী শরিয়া ও ধর্মীয় মূল্যবোধের ওপর হস্তক্ষেপের চেষ্টা করেছে। নারী সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনেও একই চিত্র দেখা গেছে। এছাড়া সমকামী তথা এলজিবিটি ইস্যুটি জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের মানবাধিকার দর্শন ও নীতিমালার অন্তর্ভুক্ত। সম্প্রতি বাংলাদেশের ধর্মীয়-সামাজিক মূল্যবোধ অবজ্ঞা করে একজন সমকামী ব্যক্তিকে বাংলাদেশে জাতিসংঘের নতুন দূত নিয়োগ দেওয়ার সংবাদ গণমাধ্যমে এসেছে। আমাদের দেশে নারী ইস্যুর আড়ালে অভিশপ্ত এলজিবিটি সম্প্রদায় প্রকাশ্যে নানা অপতৎপরতা শুরু করেছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম ঘিরে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র আরও বিস্তৃত হচ্ছে। এ অবস্থায় এ দেশে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের অফিস খোলার পরিণতি আমাদের কাছে পরিষ্কার। 

মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী ও সাজেদুর রহমান বলেন, ২০১৩ সালের ৫ মে মতিঝিল শাপলা চত্বরে নিরীহ আলেম-ওলামা ও ধর্মপ্রাণ মানুষের গণজমায়েতের ওপর সংঘটিত বর্বর গণহত্যা নিয়ে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন আজ পর্যন্ত কোনও বিবৃতি দেয়নি। তাছাড়া ফ্যাসিস্ট হাসিনার কথিত জঙ্গি-নাটকসংশ্লিষ্ট মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে কখনও তারা অফিশিয়ালি উদ্বেগ প্রকাশ করেনি। আমেরিকা ও ভারত সুযোগ করে না দিলে এ দেশে রাষ্ট্র কর্তৃক কখনও কথিত ‘জঙ্গিবাদ’ দমনের নামে আলেম-ওলামা ও ইসলামপন্থিদের ওপর মানবাধিকার লঙ্ঘন ঘটাতে পারতো না। এ ক্ষেত্রে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের অফিস থাকা না-থাকায় কিছু যায় আসে না। ফিলিস্তিনে গত ৩০ বছর ধরে জাতিসংঘের মানবাধিকার অফিস থেকেও কোনও লাভ হয়নি।
« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক:
মো. আশরাফ আলী
কর্তৃক এইচবি টাওয়ার (লেভেল ৫), রোড-২৩, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২।
মোবাইল : ০১৪০৪-৪০৮০৫২, ০১৪০৪-৪০৮০৫৫, ই-মেইল : thebdbulletin@gmail.com.
কপিরাইট © বাংলাদেশ বুলেটিন সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত