দ্রুতগতির মাইক্রোবাসকে ধাওয়া করছিল আরেকটি মাইক্রোবাস। বিষয়টি অস্বাভাবিক মনে হওয়ায় সড়কে গাছ ফেলে প্রথম মাইক্রোবাসকে থামান স্থানীয়রা। গাড়িতে থাকা ব্যক্তিরা নিজেদের র্যাব পরিচয় দিলে কারও গায়ে র্যাবের পোশাক না থাকায় সন্দেহ থেকে তাদের আটকে মারধর শুরু করেন স্থানীয়রা।
এমন সময়ে সেখানে পৌঁছায় দ্বিতীয় মাইক্রোবাসটি। তারা নিজেদের র্যাব পরিচয় দিয়ে স্থানীয়দের হাতে আটক ব্যক্তিদের উদ্ধারের চেষ্টা করেন। কয়েকজনের গায়ে ইউনিফর্ম না থাকায় তারাও পিটুনির শিকার হন। একপর্যায়ে থানা থেকে পুলিশ ও র্যাবের সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে দুই পক্ষকেই উদ্ধার করেন।
স্থানীয় থানা থেকে পুলিশ ও র্যাবের সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে লোকজনকে শান্ত করে এই দুই পক্ষকেই উদ্ধার করেন। গতকাল সন্ধ্যা ৭ টার দিকে এমন চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার চর যশোরদী ইউনিয়নের জয় বাংলার মোড় এলাকায় ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে।
নগরকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার দায়িত্বপ্রাপ্ত উপপরিদর্শক (এসআই) আমীরুল ইসলাম বলেন, জনতার হাত থেকে র্যাব ও ভুয়া র্যাব সদস্যদের উদ্ধার করে নগরকান্দা থানায় নিয়ে আসা হয়। রাত সাড়ে আটটার দিকে তাঁদের নিয়ে ফরিদপুর র্যাব ক্যাম্পের সদস্যরা মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর থানার উদ্দেশে যান।
ভুয়া র্যাব পরিচয়দানকারী ব্যক্তিরা হলেন- শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার ছাব্বিশপাড়া গ্রামের স্বপন খান (৪৫), চাঁদপুর সদরের মদনা গ্রামের মিন্টু গাজী (৪৫), গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার কুনসিবাড়ি গ্রামের মো. সাইফুল ইসলাম (৩০), মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার আন্ডারচর এলাকার মো. জামিল (৩২) এবং ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার হিদাডাঙ্গা গ্রামের দিদার (২৯)। তাদের থানায় হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে বলে র্যাব-১০–এর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে। ওই বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, আসামিরা দুজন সোনা ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ডাকাতি করেছিলেন।
র্যাব-১০ ফরিদপুর ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার তারিকুল ইসলাম বলেন, র্যাব-১০–এর হেডকোয়ার্টার থেকে একটি টিম ডাকাত দলকে ধাওয়া করে আসছিল। স্থানীয় লোকজন ভুল বুঝে উভয় পক্ষের ওপর চড়াও হন। কিছু র্যাবের সদস্যরা সাদাপোশাকে থাকায় উত্তেজিত লোকজন তাদের তাৎক্ষণিকভাবে প্রকৃত র্যাব বলে চিনতে ভুল করেন।
র্যাব-১০ মুন্সিগঞ্জ ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার আনোয়ার হোসেন আজ মঙ্গলবার বেলা পৌনে একটার দিকে বলেন, ‘আমরা ভুয়া র্যাবের দলকে মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর থেকে ধাওয়া করে নিয়ে যাচ্ছিলাম। তারা পদ্মা সেতু ও এক্সপ্রেসওয়ের টোল দিয়ে বের হয়ে যেতে পারলেও শেষ পর্যন্ত তাদের ধরা গেছে।’
মারধরের শিকার হওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘জনগণ যখন ভুয়া র্যাব পরিচয়কারীদের মারপিট করছিলেন, তখন তাঁদের যাতে মেরে না ফেলেন, এই আশঙ্কায় আমরা জনগণের পিটুনি থেকে তাদের বাঁচানোর চেষ্টা করি। তবে প্রথম পর্যায়ে জনগণ আমাদেরও ভুয়া র্যাব মনে করেছিলেন। এ কারণে আমাদের সঙ্গে কিছু ঘটনা ঘটেছিল।’