অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় ও শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন এবং বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান আজ মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় অবস্থিত থ্রি-অ্যাঙ্গেল মেরিন লিমিটেড শিপইয়ার্ড পরিদর্শন করেছেন।
শিপইয়ার্ডে দুটিতে বাংলাদেশ ইনল্যান্ড ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট কর্পোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি)-এর জন্য নির্মাণাধীন জলযানের কাজের অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ করেন তিনি।
বিআইডব্লিউটিসি'র জন্য ৩৫টি বাণিজ্যিক জলযান ও ৮টি সহায়ক জলযান সংগ্রহ এবং ২টি নতুন স্লিপওয়ে নির্মাণ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় এ শিপইয়ার্ডে ১৮টি নৌযান নির্মাণাধীন রয়েছে। পরিদর্শনকালে নৌপরিবহন এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা নির্মাণ কাজের গতি ও মান নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্টদের কঠোর নির্দেশনা দেন। পরে তিনি নারায়ণগঞ্জের আনন্দ শিপইয়ার্ড পরিদর্শন করে সেখানে নির্মাণাধীন সী ট্রাক (Sea Truck)-এর নির্মান কাজের গুনগতমান এবং কার্যকর ব্যাবহারের প্রতি গুরুত্বারোপ করেন।
নৌপরিবহন উপদেষ্টা শিপইয়ার্ডে কর্মরত শ্রমিকদের নিরাপত্তা ও উন্নত কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করতে কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের জাহাজ নির্মাণ শিল্পের শ্রমিকদের দক্ষতা বৃদ্ধি পেয়েছে। এখন তাদের স্বাস্থ্যঝুকি কমানো নিরাপত্তা ও সুযোগ-সুবিধা বাড়াতে সরকার কাজ করছে।
উপদেষ্টা আশা প্রকাশ করেন যে, থ্রি-অ্যাঙ্গেল মেরিনের ১৮টি নৌযান সেপ্টেম্বর ২০২৪ এর মধ্যে বিআইডব্লিউটিসির কাছে হস্তান্তর করা শুরু হবে। এছাড়া, আনন্দ শিপইয়ার্ডে নির্মাণাধীন ৪টি সী ট্রাক এর কাজ দ্রুত এগিয়ে চলেছে। তিনি দ্বীপাঞ্চল (সন্দীপ, হাতিয়া, মহেশখালী) ও অন্যান্য প্রত্যন্ত এলাকায় নৌযোগাযোগ সুবিধা সম্প্রসারণের কথা উল্লেখ করে বলেন, সরকার জনবান্ধব নীতির মাধ্যমে এসব অঞ্চলের মানুষের দুর্ভোগ লাঘব করতে কাজ করছে।
তিনি জানান, থ্রি-অ্যাঙ্গেল মেরিন লিমিটেড শিপইয়ার্ড এবং আনন্দ শিপইয়ার্ড শুধু দেশেই নয়, বিদেশেও বিশেষত নাইজেরিয়া এর সাথে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের মাধ্যমে) জাহাজ নির্মাণ শিল্পের সম্প্রসারণ ঘটাতে পারে।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, থ্রি-অ্যাঙ্গেল মেরিন লিমিটেড কর্তৃক অয়েল ট্যাংকার নির্মাণ সম্পন্ন হলে দেশে জ্বালানি পরিবহন খরচ উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস পাবে।বাংলাদেশের জাহাজ নির্মাণ শিল্প এখন বিশ্বমানের। আনন্দ শিপইয়ার্ডের মতো প্রতিষ্ঠানগুলো শুধু দেশীয় চাহিদা মেটাচ্ছে না, বরং আন্তর্জাতিক পর্যায়েও বাংলাদেশের সক্ষমতার স্বাক্ষর রাখছে।আনন্দ শিপইয়ার্ডে নির্মিত সী ট্রাক ও অন্যান্য জলযান আধুনিক প্রযুক্তি ও স্থানীয় দক্ষতায় তৈরি হচ্ছে। তিনি বলেন, এখানকার শ্রমিক ও প্রকৌশলীরা প্রমাণ করেছেন যে বাংলাদেশে বিশ্বমানের জাহাজ নির্মাণ সম্ভব। বিদেশে রপ্তানির মাধ্যমে এই শিল্প আরও সম্প্রসারিত হবে।
পরিদর্শনকালে বিআইডব্লিউটিসির চেয়ারম্যান মোঃ সলিম উল্লাহ, বিআইডব্লিউটিসির প্রকল্প পরিচালক ও প্রধান প্রকৌশলী জিয়াউল ইসলাম, নারায়নগঞ্জ ও মুন্সিগঞ্জের কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।