মঙ্গলবার ১১ নভেম্বর ২০২৫ ২৭ কার্তিক ১৪৩২
মঙ্গলবার ১১ নভেম্বর ২০২৫
কৃষি কর্মকর্তাকে বেধড়ক পেটালেন ছাত্রদল নেতা
শেরপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ৬ নভেম্বর, ২০২৫, ১২:৩৪ PM আপডেট: ০৬.১১.২০২৫ ৩:৪১ PM
সরকারি কৃষি প্রণোদনার ভাগ না পাওয়ায় শেরপুরের নকলা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শাহরিয়ার মোরসালিন মেহেদীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে উপজেলা ছাত্রদলের সদস্যসচিব রাহাত হাসান কাইয়ুমের বিরুদ্ধে।

গতকাল বুধবার দুপুরে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার সরকারি অফিস কক্ষে এই ঘটনা ঘটে। এ সময় কাইয়ুমের সঙ্গে ছাত্রদল কর্মী ফজলুও ওই কর্মকর্তাকে মারধর করেন। এই ঘটনায় কাইয়ুম ও ফজলুর বিরুদ্ধে নকলা থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

কৃষি কর্মকর্তাকে মারধরের সিসিটিভি ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। অভিযুক্ত রাহাত হাসান কাইয়ুম (৩৫) নকলা পৌরসভার ধুকুরিয়া গ্রামের সুরুজ মোল্লার ছেলে এবং ফজলু (৩২) একই গ্রামের সিরাজুল হকের ছেলে।

কৃষি অফিস ও মামলা সূত্রে জানা গেছে, বুধবার বেলা আড়াইটার দিকে নকলা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাহরিয়ার মোরসালিন মেহেদীর অফিস কক্ষে যান উপজেলা ছাত্রদলের সদস্যসচিব রাহাত হাসান কাইয়ুম। এ সময় বাইরে অপেক্ষা করছিলেন ছাত্রদল কর্মী ফজলু। কাইয়ুম কৃষি কর্মকর্তা শাহরিয়ার মোরসালিন মেহেদীর কাছে কৃষি প্রণোদনা কাকে কাকে দেওয়া হয়েছে জানতে চান এবং ছাত্রদলের ভাগ তাকে দিতে বলেন। 

বিষয়টি মোবাইলে উপজেলা বিএনপির সদ্য বিলুপ্ত কমিটির সভাপতি খোরশেদুর রহমানকে জানালে কাইয়ুম আরও ক্ষিপ্ত হন এবং কথা বলার এক পর্যায়ে উত্তেজিত হয়ে কৃষি কর্মকর্তাকে সজোরে চড় মারেন। পরে তাঁকে টেনেহিঁচড়ে কক্ষের বাইরে নিয়ে ফজলু ও কাইয়ুম মারতে থাকলে আশপাশের লোকজন গিয়ে কৃষি কর্মকর্তাকে উদ্ধার করেন।

কৃষি কর্মকর্তা শাহরিয়ার মোরসালিন মেহেদী বলেন, ছাত্রদল নেতা রাহাত হাসান কাইয়ুম ও ফজলু আমার সরকারি অফিসে এসে আমি এখনো কেন বদলি হচ্ছি না জিজ্ঞাসা করে এবং প্রণোদনার ভাগ চায়। বিষয়টি উপজেলা বিএনপির সদ্য বিলুপ্ত কমিটির সভাপতি খোরশেদুর রহমানকে জানালে কাইয়ুম আরও ক্ষিপ্ত হয় এবং শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে।

উপজেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক খোরশেদুর রহমান বলেন, ওই কৃষি কর্মকর্তা প্রণোদনা নিয়ে তাকে চাপ দেওয়ার বিষয়টি আমাকে অবহিত করলে আমি ছাত্রদল নেতার জেঠাতো ভাই যুবদল নেতা লোটাসকে জানালে লোটাস রাহাতকে মোবাইলে শাসায়। রাহাত এর জেরে এই ঘটনা ঘটায়।

এ বিষয়ে জেলা ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হাসেম সিদ্দিকী বাবু বলেন, ঘটনাটি শুনেছি, ঘটনার সত্যতা যাচাই করে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাইম হাসান উজ্জ্বল বলেন, ঘটনা সম্পর্কে সিসিটিভি ফুটেজ দেখে বিস্তারিত খোঁজ নিয়েছি। কর্মরত সরকারি অফিসারের গায়ে হাত তোলা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এই ঘটনায় আমরা দলীয়ভাবে অবশ্যই ব্যবস্থা নেব। যেহেতু বিষয়টি নিয়ে মামলা হয়েছে, আইন অনুযায়ী তারা নিজেদের ব্যবস্থা নেবে। তবে দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে রাহাত হাসান কাইয়ুমের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ ব্যাপারে নকলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাবিবুর রহমান জানান, এই ঘটনায় দুজনকে আসামি করে থানায় মামলা হয়েছে। আসামিদের ধরতে অভিযান চলছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ঘটনাটি ন্যাক্কার জনক। একজন সরকারি কর্মকর্তা নিরপদে তার অফিসে কাজ করাটাই দায় হয়ে দাড়িয়েছে। আমরা কাউকে ছাড় দিব না।
« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক:
মো. আশরাফ আলী
কর্তৃক এইচবি টাওয়ার (লেভেল ৫), রোড-২৩, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২।
মোবাইল : ০১৪০৪-৪০৮০৫২, ০১৪০৪-৪০৮০৫৫, ই-মেইল : thebdbulletin@gmail.com.
কপিরাইট © বাংলাদেশ বুলেটিন সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত