সোমবার ১০ নভেম্বর ২০২৫ ২৬ কার্তিক ১৪৩২
সোমবার ১০ নভেম্বর ২০২৫
ট্রেন থেকে ফেলে হত্যার সাড়ে ৫ মাস পর কবর থেকে লাশ উত্তোলন
স্টাফ রিপোর্টার, চুয়াডাঙ্গা
প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ৬ নভেম্বর, ২০২৫, ৫:২১ PM আপডেট: ০৬.১১.২০২৫ ৫:৪২ PM
চলন্ত ট্রেন থেকে ফেলে দিয়ে হত্যার ঘটনায় দীর্ঘ সাড়ে ৫ মাস অতিবাহিত হওয়ার পর আদালতের নির্দেশে কবর থেকে উত্তোলন করা হলো চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার সেনেরহুদা গ্রামের গাফফার আলী আকাশের লাশ। 

আকাশ চুয়াডাঙ্গা পানি উন্নয়ন বোর্ডের একজন কর্মচারী ছিলেন। চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসনের এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট সামিউল আজম ও পিবিআইয়ের ইন্সপেক্টর মনিরুজ্জামানের উপস্থিততে বৃহস্পতিবার (৬ই নভেম্বর) দুপুরে লাশ উত্তোলন শেষে ময়নাতদন্তের জন্য চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।

উল্লেখ্য, গত ২১শে মে বিকালে অফিস শেষে চুয়াডাঙ্গা রেলস্টেশন থেকে খুলনাগামী ডাউন ৭১৬ কপোতাক্ষ এক্সপ্রেস ট্রেনের ঙ কোচে চড়ে বাড়ি ফিরছিলেন চুয়াডাঙ্গা পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মচারী সেনেরহুদা গ্রামের গাফফার আলী ওরফে আকাশ। দর্শনা হল্ট স্টেশনে ট্রেন থেকে নেমে সড়ক পথে বাড়ি ফেরার কথা ছিল তার। কিন্তু জয়রামপুর রেলস্টেশনেের অদূরে চলন্ত ট্রেন থেকে ফেলে দিয়ে তাকে হত্যা করা হয়। 

রেললাইনের পাশে রক্তাক্ত মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা তার পকেটে থাকা ছবি ও এনআইডি কার্ডের মাধ্যমে পরিচয় নিশ্চিত হয়ে ফেসবুকে পোস্ট করেন। প্রথমে সবাই ধারণা করেছিল আকাশ হয়তো ট্রেন থেকে অসাবধানতাবশত নিচে পড়ে গিয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন। তাকে কেউ ট্রেন থেকে ফেলে দিয়ে হত্যা করবে এমন চিন্তা নিহতের পরিবার ও এলাকাবাসী ধারণায় করেনি৷ 

কারণ, আকাশ ওই ধরনের ছেলে না৷ অত্যন্ত, নম্র, ভদ্র ও শান্ত স্বভাবের ছেলে ছিলেন তিনি। পরিবারের পক্ষ থেকে কারো কোনো অভিযোগ না থাকায় ওই রাতেই তার মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে রেলওয়ে পুলিশ। পরের দিন সকালে জানাজা শেষে তাকে সেনেরহুদা জান্নাতুল খাদরা কবরস্থানে দাফন করা হয়।

কিন্তু পরবর্তীতে বেরিয়ে আসে লোমহর্ষক ঘটনা। ট্রেনে থাকা বেশ কয়েকজন যাত্রীর মারফতে জানা যায়, অসাবধানতাবশত নয়, তাকে ট্রেন থেকে ফেলে দিয়ে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। একথা শোনার পর নিহতের পিতা জিন্নাত আলী বাদী হয়ে গত ২৬শে মে চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা আমলী আদালতে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

মামলায়, ওইদিন ডাউন কপোতাক্ষ এক্সপ্রেস ট্রেনে দায়িত্বরত জুনিয়র টিটিই লালন চক্রবর্তী (৪২), জিআরপি’র এসআই পারভেজ (৩৬), কনস্টেবল কাদের (৪০) এবং অ্যাটেন্টডেন্ট মিলন (৩৭) ও সোহাগ মিয়াসহ আরও ৪-৫ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়। 

ট্রেনে বিনা টিকিটের যাত্রীদের কাছ থেকে অবৈধভাবে টাকা উত্তোলন এবং টাকা না দিতে চাইলে তাদের সাথে খারাপ আচরণের প্রতিবাদ করার কারণে সৃষ্ট বাগবিতণ্ডার জেরে নাম উল্লিখিত আসামিসহ আরও ৪-৫ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি মিলে আকাশকে চলন্ত ট্রেন থেকে ফেলে দিয়ে হত্যা করেছে বলে মামলায় উল্লেখ করেন বাদী জিন্নাত আলী। মামলাটি বর্তমানে চুয়াডাঙ্গা আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। আদালতের নির্দেশে আকাশ হত্যা মামলাটি তদন্ত করছে  ঝিনাইদহ পিবিআই। 
« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক:
মো. আশরাফ আলী
কর্তৃক এইচবি টাওয়ার (লেভেল ৫), রোড-২৩, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২।
মোবাইল : ০১৪০৪-৪০৮০৫২, ০১৪০৪-৪০৮০৫৫, ই-মেইল : thebdbulletin@gmail.com.
কপিরাইট © বাংলাদেশ বুলেটিন সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত