চাচাতো ভাই কামরুল আমিন হত্যা মামলায় যশোরের ঝিকরগাছায় দুই ভাইকে ফাঁসির দণ্ড দিয়েছেন আদালত। সোমবার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক জুয়েল অধিকারী এ রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, ঝিকরগাছা উপজেলার শংকরপুর ইউনিয়নের ছোট পোদাউলিয়া গ্রামের ওসমান ও আলী হোসেন। তারা মৃত ছবেদ আলী সরদারের ছেলে। একই মামলায় অভিযুক্ত ওসমানের স্ত্রী খাদিজা খাতুনকে খালাস দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন অতিরিক্ত পিপি আজিজুল ইসলাম।
আদালত ও মামলা সূত্রে জানা যায়, ছোট পোদাউলিয়া গ্রামের নুরুল হকের ছেলে কামরুল আমিনের সঙ্গে তার চাচাতো ভাই ওসমান ও আলী হোসেনের জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। ২০২৩ সালের ৭ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় জমিতে সীমানা প্রাচীর নির্মাণকে কেন্দ্র করে তাঁদের মধ্যে বাগবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে ওসমান ও আলী হোসেন বাড়ি থেকে ধারালো দা এনে কামরুলকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করেন।
কামরুলকে বাঁচাতে গেলে তাঁর বড় ভাইয়ের স্ত্রী আনোয়ারা, ছোট ভাইয়ের স্ত্রী পারভীন ও ভাইপো আতাউর রহমানও হামলার শিকার হন। ঘটনাস্থল থেকে অভিযুক্তরা পালিয়ে যায়।
স্থানীয়রা চারজনকে উদ্ধার করে ঝিকরগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেন। সেখান থেকে অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁদের যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। হাসপাতালে নেওয়ার পর কামরুলের মৃত্যু হয়। আহত তিনজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
পরে নিহতের বাবা রুহুল আমিন সরদার তিনজনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন। তদন্ত শেষে গত বছরের ৩ জুলাই ঝিকরগাছা থানার উপপরিদর্শক বনি ইসরাইল আদালতে চার্জশিট জমা দেন।
আজ সোমবার রায় ঘোষণার সময় আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। আদালত ওসমান ও আলী হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাঁদের ফাঁসির আদেশ ও প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। অপর আসামি খাদিজা খাতুনকে খালাস দেওয়া হয়।
রায়ের বিষয়ে অতিরিক্ত পিপি আজিজুল ইসলাম বলেন, হত্যা মামলায় দুই বছরের মাথায় রায় প্রদান নজিরবিহীন। রাষ্ট্রপক্ষ রায়ে সন্তুষ্ট।
অন্যদিকে আসামিপক্ষ দাবি করেছে, তাঁরা ন্যায়বিচার পাননি এবং উচ্চ আদালতে আপিল করবেন।