তাত্ত্বিক দৃষ্টিকোণ থেকে প্রজন্ম শব্দটির গভীরতা ও ব্যাপ্তি অনেক বেশি। আমাদের সকলের মনোজগতে ভিন্ন ভিন্ন বোধশক্তি ও ভাবাবেগের মধ্য দিয়ে প্রজন্ম-পরম্পরার চিন্তাদর্শন তৈরি হয়। বিশুদ্ধ প্রজন্ম নির্মাণে রাষ্ট্র মৌলিক ভূমিকা রাখে। সুখী, সমৃদ্ধ ও উন্নত রাষ্ট্রব্যবস্থার মূল ভিত্তি হলো বিশুদ্ধ প্রজন্ম নির্মাণের ধারণা। কিংবা বিশুদ্ধ প্রজন্ম ও উন্নত রাষ্ট্রব্যবস্থা সমার্থক অর্থ বহন করে। রাষ্ট্রনায়ক, দার্শনিক, কবি, সাহিত্যিক ও সচেতন সুধীমহল প্রজন্মভাবনায় প্রবল প্রভাব সৃষ্টি করে এবং তাঁরা শুদ্ধ প্রজন্ম নির্মাণে নির্দেশনামূলক নীতিমালা প্রণয়ন করেন এবং তা বাস্তবায়নে আজীবন সংগ্রাম করেন, পরিশ্রম করেন এবং আত্মোৎসর্গ করেন।
প্রজন্মভাবনার গভীরতা উপলব্ধি করতে হলে একটু সাহিত্যের সৌখিন বলয়ে প্রবেশ করা জরুরি। রোমান মহাকবি ভার্জিলের মহাকাব্য ‘অ্যানিড’-এ প্রজন্মভাবনার দিকটি খুবই নান্দনিকভাবে চিত্রায়িত হয়েছে। মহাকাব্যটির মহানায়কের মধ্যে প্রজন্মভাবনা ছিল খুবই প্রবল। সেখানে দায়িত্ববোধের কাছে ব্যক্তিগত প্রেম-ভালোবাসা বিলীন হয়ে যায়। অ্যানিডের (মহাকাব্যের নায়ক) আভিযাত্রিক জীবন ডিডোর (মহাকাব্যের নারী চরিত্র) সাম্রাজ্যে সাময়িক বিরতি নেয়। অ্যানিড ও ডিডোর মধ্যে গভীর প্রেম হয়। অ্যানিডকে ডিডোর সাম্রাজ্যে সারাজীবনের জন্য অবস্থানের আহ্বান জানালে তা ফিরিয়ে দেয় অ্যানিড। অ্যানিডের দায়িত্ব হচ্ছে তার প্রজন্মের জন্য সাম্রাজ্য-প্রতিষ্ঠা করা। অ্যানিড তার জাহাজে নতুন অভিযানে বেরিয়ে পড়ে। অপরদিকে ডিডো অ্যানিড কর্তৃক প্রত্যাখ্যাত হয়ে নিজ প্রাসাদে আত্মাহুতি দেন নিজ শরীরে আগুন লাগিয়ে। অ্যানিড জাহাজে বসে ডিডোর প্রাসাদের আগুন ধোঁয়া দেখে বুঝে নেয় ডিডোর করুণ পরিণতি। প্রেম ও দায়িত্ববোধের দ্বন্দ্ব এ মহাকাব্যে খুবই করুণভাবে ফুটে উঠেছে। কারণ মহাকাব্যের নায়কের মূল কর্তব্য ছিল তার প্রজন্মের জন্য সাম্রাজ্য-প্রতিষ্ঠা করা। বঙ্গবন্ধু বাঙালি জাতির জন্য একটি সুন্দর পলরভূমি, প্রজন্মের জন্যে একটি নিরাপদ আবাস তৈরির জন্য মহাকাব্যের মহানায়কের মতো ব্যক্তিগত জীবনের সুখ-শান্তি বিসর্জন দিয়েছেন; বঙ্গবন্ধুর স্রোতধারায় তাঁরই জ্যেষ্ঠ কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা সেই প্রজন্মের ভিত তৈরির জন্য আজও নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন।
মধ্যযুগের সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ কবি ভারতচন্দ্র রায়গুণাকরের প্রজন্মভাবনা খুবই চমৎকারভাবে ফুটে উঠেছে তাঁর খণ্ড খণ্ড বুদ্ধিদীপ্ত বাণীগুলোতে। আজো আমাদের সমাজে স্বতসিদ্ধের মতো এ বাণীগুলো উচ্চারিত হয়। ‘আমার সন্তান যেনো থাকে দুধেভাতে’ তাঁর এ অভিব্যক্তি নিজ ঔরসজাত সন্তানের জন্য নয়। এ আকুতি পরবর্তী প্রজন্মের জন্য। তিনি প্রজন্মের সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধির কথা এ অভিব্যক্তিতে প্রবলভাবে প্রকাশ করে গেছেন। বঙ্গবন্ধু বাঙালি জাতির এ নদীবিধৌত ব-দ্বীপে মাছে-ভাতের একটি অফুরন্ত সম্ভাবনাময় প্রজন্ম বিনির্মাণে নিজের জীবন বিলিয়ে দিয়েছেন। আজও বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা জীবনের শঙ্কা নিয়ে বঙ্গবন্ধুর লালিত সেই স্বপ্নের প্রজন্ম তৈরিতে কাজ করছেন।
প্রজন্মভাবনার ক্ষুদ্র আবহ আমরা পরিবার নামক সংগঠনে পাই। আমরা সবাই প্রজন্মভাবনার এ ক্ষুদ্র বলয়ে কোনো না কোনোভাবে আটকা আছি। তারপরেও সমাজ ও রাষ্ট্রের বলয় থেকে প্রজন্মভাবনার পরিধি বৈশ্বিক পরিমণ্ডলে বিস্তৃত হয়। কোনো এক সাহিত্যিক বলেছিলেন, ‘তুমি যে বিশ্বকে পেয়েছ, তার চেয়ে সুখী-সমৃদ্ধ একটা বিশ্ব রেখে যাও।’
আমার অভিমতÑ আমরা বিশ্ব মোড়ল নই যে, সারাবিশ্বে যুদ্ধবিগ্রহ বন্ধ করে পরবর্তী প্রজন্মের জন্য সুন্দর, সুখী ও শান্তিপূর্ণ বিশ্বব্যাবস্থা রেখে যাব। আমরা যদি আমাদের পরিবার ও পারিপার্শ্বিক সমাজব্যবস্থাকে সুন্দর, সুখী ও সমৃদ্ধ করতে পারি, তবে পৃথিবীর ক্ষুদ্রতর একটা অংশকে সুন্দর ও সমৃদ্ধ করে রেখে যেতে পারি। সবাই যদি তাদের দায়িত্ববোধ ও প্রজন্মভাবনা থেকে এ ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখে, তাহলে এ পৃথিবী আগামী প্রজন্মের বাসযোগ্য পৃথিবীতে পরিণত হবে। জাতির পিতার কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে তাঁর রাজনীতির জীবনাদর্শের একমাত্র মডেল ধরে সামনে অগ্রসর হচ্ছেন এবং বিশ^পরিমণ্ডলে এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।
জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রজন্মভাবনার নিজস্ব বলয় তৈরিতে যে মানুষটি মুখ্য ভূমিকা পালন করেছেন তিনি হলেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। জননেত্রী শেখ হাসিনার চিন্তায় ও মননে একান্ত নিজস্ব জীবনবোধের দর্শন তৈরির মনোজাগতিক কাঠামোটি বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলতুন্নেসা মুজিবের দর্শন ও তাঁদের আত্মত্যাগে সুগঠিত। দেশের মানুষের মঙ্গলের কথা চিন্তা করে বঙ্গবন্ধু জীবন ও যৌবনের অধিকাংশ সময় কারাবন্দি ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব দিয়েছেন কারাগারে বন্দি অবস্থায়। প্রজন্মের জন্য স্বাধীন-সার্বভৌম ভূখণ্ড রক্তের বিনিময়ে অর্জন করেছেন। সদ্যস্বাধীন দেশে নিজের নিরাপত্তার কথা কখনো মাথায় আসেনি বঙ্গবন্ধুর। দেশ পুনর্গঠনে আত্মনিয়োগ করেন বঙ্গবন্ধু নিজের জীবনের মূল্য বেমালুম ভুলে। বিশুদ্ধ প্রজন্ম নির্মাণের বিরুদ্ধে যে অপশক্তি দীর্ঘদিন ধরে পরিকল্পিতভাবে ষড়যন্ত্র করে আসছিল, তারা বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে নৃশংসভাবে হত্যার মাধ্যমে খাঁটি প্রজন্ম নির্মাণের কাঠামোকে ধ্বংস করতে চেষ্টা করেছিল এবং এখনো করে চলছে। এমন এক জটিল কাঠামোর মধ্যে জননেত্রী শেখ হাসিনা তাঁর উত্তরাধিকারসূত্রে পাওয়া প্রজন্মভাবনার দর্শনটি আজো লালন করে চলছেন এবং তা বাস্তবায়নের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন।
বঙ্গবন্ধুর ‘সোনার বাংলা’-এ অভিধাটি প্রজন্মভাবনার উৎকর্ষ বহন করে। মধ্যযুগের সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ কবি ভারতচন্দ্র রায়গুণাকরের ‘দুধে-ভাতের সন্তান’-এর মধ্যে আমার প্রজন্মভাবনার তাত্ত্বিক দিকটি দেখতে পাই। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর ‘সোনার বাংলা’-এর মধ্যে প্রজন্মভাবনার তাত্ত্বিক ও প্রায়োগিক উভয় দিক দেখতে পাই। বঙ্গবন্ধুর রক্তের উত্তরসূরি জননেত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর প্রজন্মভাবনার তাত্ত্বিক দর্শনটি বুকে ধারণ করে প্রজন্মভাবনার প্রায়োগিক দিকটি নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন নিরসলভাবে। রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে বঙ্গবন্ধুর হৃদয়ে প্রজন্মভাবনা যেমন সুপ্রোথিত ছিল, তেমনি জননেত্রী শেখ হাসিনার মননে প্রজন্মভাবনা আরো বেশি প্রোথিত। বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করার অঙ্গীকার নিয়ে জননেত্রী শেখ হাসিনা আগামীর বাংলাদেশ, নতুন প্রজন্মের বাংলাদেশ এবং সমৃদ্ধির বাংলাদেশ নির্মাণ করার লক্ষ্যে নিরসলভাবে পরিশ্রম করে যাচ্ছেন।
জননেত্রী শেখ হাসিনা প্রজন্মভাবনার প্রায়োগিক দিকটি পর্যালোচনা করা আবশ্যক। সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে নৃসংশভাবে হত্যা করা হয়। ভাগ্যক্রমে বেঁচে যাওয়া বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা তখন বিদেশে ছিলেন। ইচ্ছা করলে তাঁরা বিদেশে সভ্য সমাজে খুব সুন্দরভাবে জীবনযাপন করতে পারতেন। কিন্তু তা না করে তাঁরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাংলাদেশের মাটিতে পা রাখলেন। যে মাটি ও মানুষের ভালোবাসায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবিনাশী আদর্শ ও প্রজন্মভাবনা নির্মিত হয়েছে, সেই মাটি ও মানুষের ঘ্রাণ তাঁরা তাঁদের মননে ধারণ করে বিদেশ জীবনের ইতি টানেন।
একজন সফল রাষ্ট্রনায়ক রাষ্ট্রপরিচালনার জন্য ‘ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত’ হন না, তিনি রাষ্ট্রপরিচালনার পবিত্র দায়িত্ব গ্রহণ করেন। সফল রাষ্ট্রনায়ক সবসময়ই ভবিষ্যৎ প্রজন্মের ধারণা মাথায় রেখে রাষ্ট্রপরিচালনা করে থাকেন। সেেেত্র বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য আগামীর বাংলাদেশ নির্মাণের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছেন। সফল রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে তিনি অনেক বেশি দূরদৃষ্টিসম্পন্ন। তিনি ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য মানবিক রাষ্ট্র নির্মাণের একমাত্র অগ্রনায়ক।
সুন্দর, সুখী ও সমৃদ্ধ রাষ্ট্রব্যবস্থা নির্মাণ ধারণাটি প্রজন্মভাবনার একটি প্রায়োগিক দিক। নেতৃত্বে সততা সফল রাষ্ট্রনায়কের একটি বড় চারিত্রিক দৃঢ়তা যা সভ্য, উন্নত ও সমৃদ্ধ প্রজন্মের কাঠামো তৈরিতে মুখ্য ভূমিকা পালন করে। জননেত্রী শেখ হাসিনার সততা আজ দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বৈশ্বিক পরিমণ্ডলে প্রশংসিত। জননেত্রী শেখ হাসিনার মননে ও মেধায় প্রজন্মের ধারণাটি শুধু বাঙালি জাতির মধ্যে নিহিত নয়, তিনি বিশ্বপ্রজন্ম নিয়ে ভাবেন এবং সেক্ষেত্রে বৈশ্বিক পরিমণ্ডলে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের বাসযোগ্য পৃথিবীর জন্য তিনি যুদ্ধ-সন্ত্রাস- ক্ষুধামুক্ত পৃথিবী নির্মাণে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে অনন্য ভূমিকা রেখে চলেছেন।
ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ নির্মাণ জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রজন্মভাবনার আরেকটি প্রায়োগিক দিক। দারিদ্র্য শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনা এবং দারিদ্র্যের অভিশাপ থেকে সাধারণ মানুষকে মুক্তি দেওয়াই তাঁর একমাত্র ল্য। খাদ্যনিরাপত্তা বলয় তৈরি করে সমাজের প্রান্তিক মানুষকে সুরা প্রদান করেন তিনি। বয়স্কভাতা, বিধবাভাতা, মাতৃত্বকালীন ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতাসহ অনেক প্রকল্প তিনি নিজে গ্রহণ করে সেগুলো বাস্তবায়নের ব্যবস্থা করেছেন। অসহায় ও গৃহহীন মানুষের জন্য আশ্রয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছেন। গৃহহীন মানুষকে পাকা বাড়ি তৈরি করে দিচ্ছেন এবং বাংলাদেশে কেউই গৃহহীন থাকবে না বলে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। এ প্রকল্পগুলো জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রজন্মভাবনার প্রায়োগিক দিকের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য দেশের অবকাঠামো উন্নয়নে যুগান্তকারী পদপে নিয়েছেন জননেত্রী শেখ হাসিনা। বাংলাদেশের মেগা প্রকল্পের সুবিধা তিনি কিংবা তাঁর সমসাময়িক কেউ-ই ভোগ করতে পারবেন কি-না, আদৌ স্পষ্ট করে বলা যাচ্ছে না। কিন্তু এ কথা স্পষ্টভাবে বলা যায় যে, আগামী প্রজন্মের শিশুরা এসব মেগা প্রকল্প ও অবকাঠামো উন্নয়নের সুবিধা ভোগ করতে পারবে। কাজেই জননেত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়ন প্রকল্প ও পরিকল্পনার মধ্যে প্রজন্মভাবনার ধারণাটি ওতপ্রতোভাবে জড়িত। সে ল্েয তিনি কাজ করে যাচ্ছেন। উন্নয়ন ও প্রজন্মভাবনা মূলত তাঁর রাজনৈতিক দর্শনের মূলমন্ত্র এবং দু’টোই একে অপরের পরিপূরক।
জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রজন্মভাবনার সবচেয়ে উজ্জ্বল দিকটি ফুটে উঠেছে তাঁর আগামীর বাংলাদেশ নির্মাণের অঙ্গীকারে। জননেত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ় অঙ্গীকার বাংলাদেশ ২০২১ সালে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হবে এবং ২০৪১ সালে উন্নত বিশ্বের কাতারে পদার্পণ করবে। সে ল্েয ল্যমাত্রা নির্ধারণ করে জননেত্রী শেখ হাসিনা তাঁর রূপকল্প বাস্তবায়ন করে যাচ্ছেন। প্রজন্মভাবনা ছাড়া এ ধরনের রূপকল্প প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের ল্েয কাজ করা খুবই দুরুহ। কাজেই জননেত্রী শেখ হাসিনা আগামী প্রজন্মের, আগামী বাংলাদেশের বাতিঘর।
বৈশ্বিক আবহে জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত বিষয়ে জননেত্রী শেখ হাসিনা সবসময়ই সরব থেকেছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সবচেয়ে তিগ্রস্ত দেশগুলোর নেতৃত্ব দিচ্ছেন এবং দায়ী দেশগুলোকে জবাবদিহি করতে মুখ্য ভূমিকা পালন করছেন। তিনি নিজ দেশের সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ সম্পূর্ণ নির্মূল করে স্থিতিশীলতা ও শান্তিপূর্ণ অবস্থা সমুন্নত রাখতে সম হয়েছেন। বৈশ্বিক পরিমণ্ডলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখার জন্য তিনি বৈশ্বিক সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে কঠোর নীতি গ্রহণ করেছেন। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে জননেত্রী শেখ হাসিনার সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদ বিরোধী এ নীতি প্রশংসিত হয়েছে। যারা বিশ্বমঞ্চে বৈশ্বিক সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে কাঠামোগত ভূমিকা রাখেন তাঁদের মধ্যে জননেত্রী শেখ হাসিনা অন্যতম। আগামী প্রজন্মের বাসযোগ্য পৃথিবীর নির্মাণের ল্েয তিনি জলবায়ু পরিবর্তন, সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদ ইস্যুতে বিশ্বনেতৃবৃন্দের সঙ্গে সমান্তরাল ভূমিকা পালন করে যাচ্ছেন। জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রজন্মভাবনা স্বাদেশিকতা পেরিয়ে আন্তর্জাতিক বলয়ে স্বমহিমায় আসীন হয়েছে।
স্মার্ট বাংলাদেশের স্মাট নেতৃত্ব দিতে হলে স্মার্ট লিডারশিপ দরকার। প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ বিনির্মাণে চারটি স্তম্ভ ঠিক করে দিয়েছেন- স্মার্ট সিটিজেন, স্মার্ট সোসাইটি, স্মার্ট ইকোনমি এবং স্মার্ট গভর্নমেন্ট। স্মার্ট বাংলাদেশে স্মার্ট প্রজন্ম বিনির্মাণে তিনি সুদূরপ্রসারী নেতৃত্ব, রাষ্ট্রচিন্তা, জনকল্যাণমুখী রাজনৈতিক দর্শন নিয়ে সামনে অগ্রসর হচ্ছেন এবং এমন চিন্তদর্শনের বাস্তবায়ন করে বিশ^মঞ্চে নিজের জায়গা করে নিয়েছেন।
প্রজন্মভাবনার দর্শন আমাদের মুক্তিযুদ্ধের মধ্যে নিহিত, বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক দর্শনের মধ্যে প্রোথিত এবং সর্বোপরি সার্বভৌম বাংলাদেশের শিরা-উপশিরায় আবহমান কাল থেকে বহমান। যে ভূখণ্ডে বর্তমান প্রজন্ম দাঁড়িয়ে আছে, সে ভূখণ্ড পূর্বপুরুষদের দেহাবশেষ। সুতরাং জননেত্রী শেখ হাসিনা এদেশের মাটি, মানুষ ও পরবর্তী প্রজন্মের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকে নিরসলভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। প্রজন্মভাবনা ও উন্নয়ন তাঁর কাছে একই সূত্রে গাঁথা। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু বাঙালি জাতির অবিনাশী চেতনা, অহর্নিশ স্পন্দন এবং তাঁরই কন্যা শেখ হাসিনা আগামীর প্রজন্মের একমাত্র জীবন্ত বাতিঘর। তাঁরই হাত ধরে প্রজন্ম পাবে নিরাপদ পললভূমি, বাংলাদেশ পাবে সজিবতার এক অফুরন্ত প্রাণশক্তি।
লেখক : কবি ও সাংবাদিক
বাবু/এ.এস