বাংলাদেশের ২০০ টিরও বেশি সিনেমা হলে একযোগে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন ও রাজনৈতিক অভিযাত্রা চিত্রিত করে তৈরি বায়োপিক শ্যাম বেনেগালের ‘মুজিব : একটি জাতির রূপকার’-এর মুক্তির মধ্য দিয়ে এ চলচ্চিত্রের জন্য দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটছে।
ভারত-বাংলাদেশের যৌথ উদ্যোগে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের জীবনীভিত্তিক; একেবারে ছোটবেলা থেকে বেড়ে ওঠা এবং একটি দেশের স্বাধীনতা অর্জনÑ এর ওপর ভিত্তি করে একটি চলচ্চিত্র নির্মাণ করা হয়েছে। মুজিব : একটি জাতির রূপকারÑ চলচ্চিত্র ইতিহাসের অনেক অজানা তথ্য উন্মোচন করবে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, আমাদের দুই দেশ; ভারত ও বাংলাদেশ। আপনারা জানেন ভারত আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধে সহযোগিতা করেছিল। তারাও রক্ত দিয়েছে এই স্বাধীনতার জন্য। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে দেশের মানুষ অস্ত্র তুলে নিয়ে যুদ্ধ করে বিজয় এনেছে। এই বিজয়ের পথে যারা আমাদের সহযোগী হিসেবে ছিলেন তাদের সকলের প্রতি শ্রদ্ধা জানাই। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনী নিয়ে তৈরি ‘মুজিব : একটি জাতির রূপকার’ চলচ্চিত্র দেখে কেঁদেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট নির্মমভাবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে হত্যা করা হয়, এরপর থেকে ইতিহাস বিকৃত করা হয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, জাতির পিতার নাম মুছে ফেলার চেষ্টা হয়েছিল কিন্তু ইতিহাস কথা বলে। ইতিহাসকে কেউ মুছে ফেলতে পারে না। সেটা প্রমাণিত। এ সময় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, পরিচালক শ্যাম বেনেগাল এবং চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানান শেখ হাসিনা।
যারা অভিনয় করেছেন বিভিন্ন চরিত্রে :
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান চরিত্রে আরিফিন এবং তরুণ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান চরিত্রে দিব্য জ্যোতি, রেনু (শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব) চরিত্রে নুসরাত ইমরোজ তিশা এবং তরুণী রেনু চরিত্রে প্রার্থনা ফারদিন দীঘি; শেখ হাসিনা চরিত্রে নুসরাত ফারিয়া এবং কিশোরী শেখ হাসিনা চরিত্রে ওয়ানিয়া জারিন আনভিতা (৮ থেকে ১২ বছর); শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক চরিত্রে শহীদুল আলম সাচ্চ,ু মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী চরিত্রে দীপক অন্তানি, খন্দকার মোশতাক আহমেদ চরিত্রে ফজলুর রহমান বাবু, আবদুল হামিদ খান ভাসানী চরিত্রে রাইসুল ইসলাম আসাদ, তাজউদ্দীন আহমদ চরিত্রে রিয়াজ, আবদুল হামিদ চরিত্রে গাজী রাকায়েত, মানিক মিয়া চরিত্রে তুষার খান, জুলফিকার আলী ভুট্টো চরিত্রে রজিত কাপুর, পাকিস্তানি সেনা অফিসারের ভূমিকায় শতাব্দী ওয়াদুদ, বঙ্গবন্ধুর পিতা শেখ লুৎফুর রহমান চরিত্রে খায়রুল আলম সবুজ (৬৫ থেকে ৯৪ বছর) এবং বঙ্গবন্ধুর পিতা শেখ লুৎফুর রহমান চরিত্রে চঞ্চল চৌধুরী (৪৫ থেকে ৬৫ বছর), বঙ্গবন্ধুর মাতা সায়েরা খাতুন চরিত্রে দিলারা জামান, বঙ্গবন্ধুর মাতা সায়েরা খাতুন (তরুণী) চরিত্রে সঙ্গীতা চৌধুরী, হোসেন শহীদ সোহ্রাওয়ার্দী চরিত্রে তৌকির আহমেদ, সৈয়দ নজরুল ইসলাম চরিত্রে দেওয়ান মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম সায়েম সামাদ, কামারুজ্জামান চরিত্রে সমু চৌধুরী
মনসুর আলী চরিত্রে খলিলুর রহমান কাদেরি, মেজর জেনারেল ওসমানী চরিত্রে খন্দকার হাফিজ, জেনারেল আইয়ুব খান চরিত্রে মিশা সওদাগর, শেখ রেহানা চরিত্রে সাবিলা নূর, কিশোরী শেখ রেহানা চরিত্রে সামান্তা রহমান, শেখ কামাল চরিত্রে কামরুল হাসান, কিশোর শেখ কামাল চরিত্রে ইশরাক তূর্য (৮ থেকে ১২ বছর), শিশু শেখ কামাল চরিত্রে তৌহিদ (৫ বছর), শেখ জামাল চরিত্রে শরীফ সিরাজ, প্রবীণ নারীর ভূমিকায় রোকেয়া প্রাচী, হক চরিত্রে সিয়াম আহমেদ, জেলার চরিত্রে আবুল কালাম আজাদ, সুলতানা কামাল খুকী চরিত্রে নাজিবা বাশার, জেনারেল টিক্কা খান চরিত্রে জায়েদ খান, মহিউদ্দিন আহমেদ চরিত্রে আশিউল ইসলাম, জিয়াউর রহমান চরিত্রে একে আজাদ সেতু, খালেদা জিয়া চরিত্রে এলিনা শাম্মী, তোফায়েল আহমেদ চরিত্রে সাব্বির হোসেন, পুলিশ চরিত্রে হাসান দ্বীপ এবং পুলিশ চরিত্রে সুদীপ সারাঙ্গী।
অবশ্যই মুজিবের বায়োপিক একটি ঐতিহাসিক দলিল হিসেবে থাকবে এবং এটি বঙ্গবন্ধুর চেতনা ও আদর্শকে জনগণের কাছে বিশেষ করে নতুন প্রজন্মের কাছে ছড়িয়ে দিতে অনেকাংশে অবদান রাখবে। প্রজন্মের প্রতি দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে এ চলচ্চিত্রটি যুগ যুগ ধরে বাঙালির মানসে চেতনাবোধ জাগ্রত করবে, অবিনাশী আদর্শ অটুট থাকবে আমাদের মানসকাঠামোতে।