রাশিয়ার রহস্যময় এই প্রজেক্ট নিয়ে প্রতিবেদন তৈরি করেছে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ। কিন্তু রাশিয়ার কথিত ‘এরিয়া ৫১’ আজও গোয়েন্দাদের কাছে রহস্যে ঘেরা।

রাশিয়ার বাশকোর্তোস্তান অঞ্চলের বেলোরেতস্কি জেলায় অবস্থিত রহস্যে মোড়া মাউন্ট ইয়ামান্তাউ। এটি দক্ষিণ উরাল বিভাগের সর্বোচ্চ পর্বত এবং দক্ষিণ উরাল নেচার রিজার্ভের মধ্যে অবস্থিত একটি পর্বত। পর্বতটির চারদিক ঘন জঙ্গলে মোড়া। 

মনে করা হয়, ইয়ামান্তাউের নিচে পুরোদস্তুর একটি সামরিক ঘাঁটি তৈরি করে রেখেছে রাশিয়া। কারও কারও মতে এটি পৃথিবীর বৃহত্তম সামরিক বাঙ্কারও।

যদিও রাশিয়ার সরকার কখনও সেখানে সামরিক ঘাঁটি বা বাঙ্কারের অস্তিত্বের কথা স্বীকার করেনি। তবে ওই বাঙ্কারের অস্তিত্ব সংক্রান্ত বিভিন্ন প্রমাণ বিভিন্ন সময়ে প্রকাশ্যে এসেছে। ১৯৮০ সালের গোড়ার দিকে ইয়ামান্তাউ পর্বতের বাঙ্কার নিয়ে প্রথম জল্পনা-কল্পনা তৈরি হয়। 

স্যাটেলাইট ইমেজে দেখা যায়, ওই পর্বতের দক্ষিণ দিকে একটি বিস্তৃত বনাঞ্চল কেটে ফেলেছে রাশিয়া। তার পর থেকেই নাকি সেখানে লাগাতার কাজ চালিয়ে গেছে দেশটি। ধারণা করা হয়, আশির দশকের শেষের দিকে পর্বতের নিচে বাঙ্কার তৈরির কাজ সম্পূর্ণ করে ফেলেছিল রাশিয়া।

ইয়ামান্তাউ পর্বতের ভূগর্ভস্থ বাঙ্কার ১০০ কিলোমিটারের বেশি দীর্ঘ এবং ৬০০ মিটারেরও বেশি গভীর। ওই বাঙ্কারে নাকি, বিভিন্ন ধরনের অত্যাধুনিক প্রযুক্তি এবং সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। 

প্রতিবেদন অনুযায়ী, রাশিয়ার ওই গোপন সামরিক ঘাঁটি পরমাণু হামলা রোধ করতেও সক্ষম। নিমেষে শত্রুপক্ষের বিমান ধ্বংস করতে পারে এমন ‘ভূমি থেকে আকাশ’ ক্ষেপণাস্ত্র, ট্যাঙ্করোধী ক্ষেপণাস্ত্র, এমনকি যুদ্ধবিমানও নাকি মজুত রয়েছে বাঙ্কারটিতে।

ওই বাঙ্কারের মধ্যে রাশিয়া পারমাণবিক অস্ত্রও মজুত রেখেছে বলে শোনা যায়। রয়েছে গবেষণাগারও। সেখানে বিপজ্জনক সব সামরিক অস্ত্র নিয়ে পরীক্ষা চালানো হয়।

গোপন ওই বাঙ্কারের কয়েক হাজার মানুষ একসঙ্গে থাকতে পারেন। থাকতে যাতে কোনও অসুবিধা না হয়, এ জন্য বাঙ্কারের মধ্যেই নাকি হাসপাতাল, খাবার উৎপাদনের ব্যবস্থা, জল পরিশোধন ব্যবস্থা, এমনকি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রও রয়েছে। রয়েছে হেলিপ্যাড এবং রেলপথও।

তবে রাশিয়া পর্বতের নিচে ওই বাঙ্কার থাকার বিষয়টি বরাবর গুজব বলে উড়িয়ে দিয়েছে। তাই ইয়ামান্তাউ পর্বতকে ঘিরে তৈরি হওয়া রহস্যের কোনও সমাধান হয়নি। সত্যিই যদি ইয়ামান্তাউ পর্বতের নিচে কোনও বাঙ্কার থেকে থাকে, তাহলে সেটি কোন উদ্দেশ্যে তৈরি করা হয়েছে, তাও স্পষ্ট নয়।