রবিবার (০৭ জুলাই) বিকেলে বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রনালয়ের মাননীয় মন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন এ রথযাত্রা উদ্বোধন করবেন। আর এই উদ্বোধনের মাধ্যমে এ মেলা শুরু হবে, আগামী সোমবার (১৫ জুলাই) হবে উল্টো রথটান।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে থাকবেন ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও স্থানীয় সাংসদ বীর মুক্তিযোদ্ধা বেনজীর আহমদ, বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাই কমিশনার শ্রী প্রনয় কুমার ভার্মা।

ইতিহাস থেকে জানা যায়, ধামরাই রথযাত্রার ঘটনাসূত্র হচ্ছে, যশোপাল রাজা একদা হাতির পিঠে চড়ে বেড়াতে যান ধামরাই এলাকার পাশের গ্রামে। রাস্তায় চলতে চলতে হাতি একটি মাটির ঢিবির সামনে গেলে হাতিটি থেমে যায় আর চলতে চায় না।

রাজা শত চেষ্টা করেও হাতিটিকে সামনে নিতে পারলেন না এবং অবাক হলেন। তখন তিনি হাতি থেকে নেমে স্থানীয় লোকজনকে ওই মাটির ঢিবি খনন করার জন্য নির্দেশ দেন। সেখানে একটি মন্দির পাওয়া যায়। এছাড়া কতগুলো মূর্তি পাওয়া যায়। এর মধ্যে শ্রীবিষ্ণুর মূর্তির মতো শ্রীমাধব মূর্তিও ছিল। 

রাজা ভক্তি করে সেগুলো সঙ্গে নিয়ে আসেন। পরে ধামরাই সদরে ঠাকুরবাড়ি পঞ্চাশ গ্রামের বিশিষ্ট পণ্ডিত শ্রীরামজীবন রায়কে তিনি ওই মাধব মূর্তি নির্মাণের দায়িত্ব দেন। তখন থেকে শ্রীমাধবের নামের সঙ্গে রাজা যশোপালের নামটি যুক্ত করায় বিগ্রহের নতুন নাম হয় শ্রীশ্রী যশোমাধব। সেদিন থেকে সেবা পূজার বন্দোবস্ত হয়। আজও ধামরাইয়ে শ্রীমাধব-অঙ্গনে পূজা-অর্চনা চলে আসছে। পরবর্তীকালে শ্রীমাধবকে কেন্দ্র করেই গড়ে উঠছে ধামরাইয়ের শ্রীশ্রী যশোমাধবের রথযাত্রা ও মেলা।

প্রতিবছর রথযাত্রা ও উল্টো রথ যাত্রার দিনে লাখো মানুষ শোভাযাত্রায় অংশ নেন। রথযাত্রা উপলক্ষে মাসব্যাপি আয়োজিত হয় লোকজ মেলা। সেখানে সার্কাস পার্টি ও পুতুল নাচ যেমন থাকে, তেমনি গ্রামীণ তৈজসপত্র, চটপটি, ফুচকাসহ হরেক রকমের মুখরোচক খাবার দোকান, মুড়ি-চিড়া-সন্দেশ- মিষ্টি, দৈনন্দিন জিনিসপত্র, কাঠের আসবার, লোহার হাতিয়ার, বাচ্চাদের খেলনা ইত্যাদি পাওয়া যায়। প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে রাত এগারোটা পর্যন্ত মেলার দোকানপাট খোলা থাকে। তবে, ছুটির দিনে ও প্রতিদিন বিকেলে জমে উঠে এই ঐতিহ্যবাহী মেলা।

ধামরাই যশোমাধব মন্দির পরিচালনা পর্ষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বাবু নন্দ গোপাল সেন বলেন, ‘রথযাত্রা ও রথমেলা উপলক্ষে রথের সাজসজ্জা ও পরিচর্যার কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে।

ধামরাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার খান মো. আব্দুল্লা আল মামুন বলেন, রথযাত্রা আয়োজনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সর্বদা প্রস্তুত রয়েছে এই মেলাকে সুষ্ঠু ও নিরাপদভাবে সম্পন্ন করতে। আশা করছি প্রতি বছরের ন্যায় এবারও অত্যন্ত সুন্দরভাবে আমরা এই মেলা উদযাপন করতে পারবো। 

শ্রী শ্রী যশোমাধব মন্দির পরিচালনা কমিটির সভাপতি মেজর জেনারেল জীবন কানাই দাসের (অবঃ) সভাপতিত্বে রথযাত্রা উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন, ঢাকা জেলা প্রশাসক আনিসুর রহমান, ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার মো.আসাদুজ্জামান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ধামরাই খান মো.আব্দুল্লা আল মামুন, ধামরাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র গোলাম কবির, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ।