মঙ্গলবার ১৭ জুন ২০২৫ ৩ আষাঢ় ১৪৩২
মঙ্গলবার ১৭ জুন ২০২৫
কোরআন তেলাওয়াতে বাধা দেয়া শিক্ষকের অফিসেই তেলাওয়াতের আয়োজন
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: সোমবার, ১৯ আগস্ট, ২০২৪, ২:২২ PM আপডেট: ১৯.০৮.২০২৪ ৩:২২ PM
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বটতলায় কোরআন তেলাওয়াত অনুষ্ঠান আয়োজনের কারণে শোকজ পাঠানো শিক্ষক কলা অনুষদ ডিন ড. আবদুল বাছিরের কার্যালয়ে গিয়ে কোরআন তেলাওয়াত করেছেন শিক্ষার্থীরা। সোমবার (১৯ আগস্ট) দুপুর পৌনে ১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদ ভবনে ডিন অফিসে এ ঘটনাটি ঘটে।

তার হেদায়েতের জন্য শিক্ষার্থীরা মোনাজাতও করেছেন, যাতে ওই শিক্ষককেও অংশ নিতে দেখা গেছে। এর আগে তিনি ডিন পদ থেকে পদত্যাগ করেন।

এ প্রসঙ্গে অধ্যাপক ড. আবদুল বাছির বলেন, আমরা নীতিগতভাবেই সিদ্ধান্ত নিয়ে রেখেছিলাম যে, নতুন উপাচার্য আসলে তার সাথে দেখা করে তার কাছেই পদত্যাগপত্র জমা দিব। কিন্তু শিক্ষার্থীরা যেহেতু আজ এসে এটা চেয়েছে সেহেতু আমি মনে করলাম যে, এখানে আমার থাকার সুযোগ নেই বা উচিৎ নয়। এজন্য আজ পদত্যাগ করেছি।

গত ১০ মার্চ রমজানকে স্বাগত জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবন সংলগ্ন বটতলায় কোরআন তেলাওয়াত অনুষ্ঠান আয়োজন করেন শিক্ষার্থীরা। এই আয়োজনে আরবি বিভাগের শিক্ষার্থীরা নেতৃত্ব দেওয়ায় তারাসহ সম্পৃক্ত শিক্ষার্থীদের কেন শাস্তি প্রদান করা হবে না তার জবাব চেয়ে আরবি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. জুবায়ের মোহাম্মদ এহসানুল হককে কলা অনুষদ ডিন অধ্যাপক ড. আবদুল বাছির গত ১৩ মার্চ শোকজ করেন।

এ ঘটনায় গত ২৪ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বরাবর বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী ব্যারিস্টার মুহাম্মদ নওশাদ জমির একটি লিগ্যাল নোটিশ পাঠান। এতে আরবি বিভাগের চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে পাঠানো চিঠিটি প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয় এবং এর ব্যত্যয় ঘটলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানানো হয়।


নোটিশে উল্লেখ করা হয়, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে কোরআন তেলাওয়াত আয়োজনের সঙ্গে সম্পৃক্ত শিক্ষার্থীদের কেন শাস্তি প্রদান করা হবে না এর জবাব চেয়ে কলা অনুষদের ডিন ড. আব্দুল বাছির ১৩ মার্চ আরবি বিভাগের চেয়ারম্যান ড. জুবায়ের মোহাম্মদ এহসানুল হকের কাছে চিঠি প্রদান করেছেন। এতে আরবি সাহিত্য পরিষদ কর্তৃক ওই অনুষ্ঠান আয়োজনকে প্রক্টর অফিসের নিয়ম লঙ্ঘন হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে। যা বিশ্ববিদ্যালয়ে মুক্তবুদ্ধি চর্চার লঙ্ঘন।

এতে বলা হয়, প্রক্টর অফিসের নিয়ম ক্যাম্পাসে প্রযোজ্য হতে পারে, তবে অন্যান্য ছাত্র সংগঠনগুলো কখনই তা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে মেনে চলেনি। ছাত্র রাজনৈতিক সংগঠনগুলোর ক্ষেত্রে এটা আরও সত্য। বাংলাদেশের ইতিহাস হয়তো অন্যভাবে লেখা হতো, যদি ছাত্র সংগঠনগুলো তাদের সংগঠিত সব সমাবেশের জন্য সম্মানিত প্রক্টরের অনুমতি নিতে হতো। ক্যাম্পাসে কোরআন তেলাওয়াতের ধারণা হলো একদল ছাত্রের মূল্যবোধের বহিঃপ্রকাশ। 

তাদের উদ্দেশ্য হয়তো ছিল অন্যদের রমজানের সময় পবিত্র মহাগ্রন্থ পাঠে অনুপ্রাণিত করা বা উৎসাহিত করা। যে কোনো সময়ে, যে কোনো জায়গায় পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত করতে কারও কাছ থেকে অনুমতির প্রয়োজন হয় না। কারণ, এটি ধর্মীয়, সামাজিক এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি অথবা আইনশৃঙ্খলা ব্যাহত করে না, এমনকি কারও নিরাপত্তা হুমকির কারণও হয় না।

নোটিশে আরও বলা হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শুধু বাংলাদেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠই নয়, বরং এটি দেশের সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক বিবর্তন ও বিপ্লবের কেন্দ্রবিন্দুও বটে। সুতরাং এখানে জনগণের ক্ষতি সাধন হবে না এমন যে কোনো সংগঠন তৈরি করার, একত্র হওয়ার এবং বাক ও চিন্তার স্বাধীনতার অধিকার শিক্ষার্থীদের রয়েছে।
« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক:
মো. আশরাফ আলী
কর্তৃক এইচবি টাওয়ার (লেভেল ৫), রোড-২৩, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২।
মোবাইল : ০১৪০৪-৪০৮০৫২, ০১৪০৪-৪০৮০৫৫, ই-মেইল : thebdbulletin@gmail.com.
কপিরাইট © বাংলাদেশ বুলেটিন সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত